দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫০ জন মারা গেছেন। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯১৮ জন।
এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ২৩৪ জন। আর মোট শনাক্তের সংখ্যা ২ লাখ ৪৪ হাজার ২০ জন।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গবার (৪ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানান। দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত এ ব্রিফিং অনলাইনে হয়।
অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭ হাজার ৭১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ পর্যন্ত মোট ১২ লাখ ১ হাজার ২৫৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত (কোভিড-১৯) প্রথম রোগী শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
নারী শ্রমিকের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসের আইন করার দাবি
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
|
ছবি: বার্তা২৪.কম
জাতীয়
নারী শ্রমিকের মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুবিধা ৬ মাসের আইন করার দাবি জানিয়েছে গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন এবং ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার।
শুক্রবার (৭ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক নারী শ্রমিক সমাবেশ ও র্যালি থেকে এই দাবি জানানো হয়েছে।
সমাবেশ শেষে র্যালিটি প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট মোড়, তোপখানা রোড এবং পল্টন মোড় প্রদক্ষিণ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাপ্ত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাত মিলিয়ে দেশে ৭ কোটি ৬৫ লাখ শ্রমিকের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে সংস্কার কমিশনে 'শ্রম আইন' সংশোধনের খসড়াটি যে চূড়ান্ত করা হয়েছে তা প্রকৃতপক্ষে শ্রমিকবান্ধব না। মাতৃত্বকালীন ছুটি সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ৬ মাস, পোশাক খাতের জন্য ৪ মাস।
আবার অনানুষ্ঠানিক খাতে ছুটির বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি। আইন সংশোধনের সময় সব শ্রমিকের কথা মাথায় না রেখে শ্রমিকের সংজ্ঞা সঠিকভাবে বিবেচনা করা হয় না। আমরা চাই, বৈষম্যহীন বাংলাদেশে মাতৃত্বকালীন ছুটি সবার জন্য এক হোক।
তারা আরও বলেন, আইএলও কনভেনশন ১৮৯ ও ১৯০, শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ তহবিল, গ্র্যাচুইটি, স্বাধীনভাবে ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার, নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি, চাকরির নিশ্চয়তা, নিরাপদ কর্মস্থল, কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতকালে সংঘটিত দুর্ঘটনায় কারখানা কর্তৃপক্ষ দায় নিচ্ছে না।
সমতার ভিত্তিতে আইনের প্রসঙ্গে তারা বলেন, শ্রম আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে শ্রমিকপক্ষের মতামত ও লিখিত প্রস্তাবনাকেও আমলে নেওয়া হয়নি। আমরা চাই, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক অর্জনকে সম্মানিত করে লিঙ্গ সমতা ত্বরান্বিত করা হোক।
এ সময় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার ও গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতানা বেগম, গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও নারী কমিটির সভাপতি রোজিনা আক্তার সুমি, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দীন, দফতর সম্পাদক ও নারী কমিটির সাধারন সম্পাদক আমরিন হোসাইন এ্যানি প্রমুখ।
শুক্রবার (৭ মার্চ) সকাল থেকে লাশটি ভাসতে থাকতে দেখে বরকল থানা পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা।
বরকল থানার অফিসার ইনচার্জ কায় কিসলু বিষয়টির নিশ্চিত করে প্রতিবেদককে বলেন, আমরা বিষয়টি শুনে স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনেছি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে আমার একজন ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেছে বলে জানতে পেরেছি। তারা ফিরে আসলে বিস্তারিত জানা ধারনা পাওয়া যাবে।
ওসি বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করে আনলে এবং পরবর্তীতে সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে বলে আশা করছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মহাসড়কের পাশে ঝোপ থেকে এক নবজাতক কন্যাশিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কুট্টাপাড়া এলাকা থেকে নবজাতকটিকে উদ্ধার করা হয়।
সরাইল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল হাসান জানান, কুট্টাপাড়া মহাসড়কের পাশে খেলার মাঠের উল্টো পাশে ঝোপঝাড়ে কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখে কাথায় মোড়ানো নবজাতক কন্যাশিশু পড়ে আছে। পরে খবর পেয়ে সরাইল থানা টহল টিম নবজাতক শিশুকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
তিনি আরও জানান, শিশুটির বয়স হবে এক বা দুইদিন। উপজেলা সমাজসেবা অফিসারের মাধ্যমে জেলা সমাজসেবা অফিসার ও প্রবেশন অফিসারকে যথাযথ কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা শ্যালক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। সেই অনুযায়ী অভিযুক্ত স্বামী ও স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী কিশোরীকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকায় বড় বোনের কাছ থেকে চাঁদপুরে মামার বাসায় মামাতো বোন শিশু রাজিয়া ও মামাত ভাই প্রতিবন্ধী রিফাতকে দেখাশোনার জন্য গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেয় কিশোরী রোজিনা আক্তার। শহরের মাদ্রাসা রোডে মামা রুবেল মোল্লার ভাড়া বাসায় ঠাঁই হয় তার।
গেলো চারমাস ধরে কারণে অকারণে ভুল ধরে রোজিনার ওপর মামি রোকেয়া বেগম শুরু করেন অমানবিক ও পৈশাচিক নির্যাতন। তার সারা শরীরে জখমের চিহ্ন। থেঁতলে ফেলা হয়েছে সামনের দুই পায়ের আঙুল। হাত-পা পিঠে কাটাদাগ ও আগুনের ছেঁকা। রোজিনার শরীরের ক্ষতচিহ্ন দেখে যে কারো গা শিউরে উঠবে।
স্থানীয় যুবক রিয়াদ হোসেন, জানান, মাদ্রাসা রোডে ৪-৫ মাস ধরে ভাড়া থাকছেন রোকেয়া-রুবেল দম্পতি। তাদের দুই সন্তান। একজন প্রতিবন্ধী। মূলত তাদের দেখাশোনা ও বাড়ির কাজ করার জন্য আপন ভাগ্নিকে নিয়ে আসে। কিন্তু তারা এতটাই অমানুষ মেয়েটাকে দিনের পর দিন অমানবিক নির্যাতন করে গেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্যাতন থেকে বাঁচতে দরজা খুলে পালিয়ে যায় ওই কিশোরী। পরে স্থানীয় এক খালা তাকে দেখতে পেয়ে বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন ওই ভবনে ঢুকে তালাবদ্ধ করে দেয়। ওই সময় বাসায় শুধু রুবেল ছিল। তার স্ত্রী বাইরে ছিল। আমরা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে তার স্ত্রী থানায় আসলে তাকেও আটক করা হয়।
গৃহকর্মী রোজিনা আক্তার বলেন, মামা-মামি এক বছর ধরে বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগও করতে দেয় না। চার মাস ধরে প্রতিদিন মারে। পুতা, দা, ছুরিসহ বিভিন্ন কিছুদিয়ে শরীরে আঘাত করে। পিঠে ব্লেড ও দা দিয়ে কেটে ফেলে। আর গরম খুনতি দিয়ে ছেঁকা দেয়। পায়ের আঙুলগুলো পুতাদিয়ে থাতলে দেয়। দুইহাতে পিটানোর কারণে ফুলে গেছে। আমাকে ঠিকমতো খাবার দিত না। দিনে একবার ভাত দেয়। কিছু হলেই নির্যাতন করতো। আমি মামির শাস্তি চাই।
গৃহকর্মী হিসেবে যোগ দেয়ার পর আর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেয়নি পাষন্ড মামা-মামি। খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান মা-বাবা। এক বছর পর মেয়ে রোজিনার শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখে থানার ফ্লোরে লুটিয়ে পড়েন বাবা আহমদ ভূঁইয়া। পাশাপাশি মেয়েও কান্নায় ভেঙে পড়েন। থানায় এমন দৃশ্য সকলে আবেগ আপ্লূত হয়ে পড়েন। রোকেয়া বেগমের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান এলাকাবাসী ও পরিবার।
কিশোরীর বাবা আহমদ ভূঁইয়া বলেন, মেয়েকে আমার আপন শ্যালক এক বছর আগে নিয়ে এসেছে। এক বছর ধরে আমার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। আমার মেয়েকে বাড়িতে আনার কথা বললে রুবেল আজকাল বলে এক বছর পার করে দেয়। আমার মেয়েকে এই ভাবে দেখতে হবে জীবনে কল্পনা করিনি। তারা আমার মেয়েকে শেষ করে ফেলেছে। মেয়ের পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন। আমি এর বিচার চাই। প্রশাসন যাতে এটার সর্বোচ্চ বিচার করে।
ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে বলে জানান চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. বাহার মিয়া।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপ-পরিদর্শক নাজমুল ছুটে যান। কিশোরীর বাবার মামলার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্যাতনের শিকার রোজিনা চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের বাখরপুর গ্রামের আলী আহম্মদ ভুঁইয়ার মেয়ে। তার দুই মেয়ে ও তিন ছেলে। মামা রুবেল মোল্লা একই গ্রামের মোল্লা বাড়ীর আবুল মোল্লার ছেলে। রোজিনা তার আপন ভাগ্নি। রুবেল মোল্লা একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।