বদলে যাচ্ছে উপকূলের অর্থনীতি

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম পটুয়াখালী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইপিজেডের বরাদ্দকৃত জায়গা

ইপিজেডের বরাদ্দকৃত জায়গা

পটুয়াখালীর অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে যাচ্ছে। সদর উপজেলার আউলিয়াপুরে নির্মাণাধীন রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) বাস্তবায়িত হলে এই অঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ৪১৮ একর জমির ওপর গড়ে উঠা এই বিশাল শিল্প এলাকা ২০২৬ সাল নাগাদ বিনিয়োগকারীদের জন্য প্লট বরাদ্দ দিতে শুরু করবে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় দুই লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১,৪৪৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১,১০৫ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে এবং ৩৩৮ কোটি টাকা বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) অর্থায়ন করছে। ইতোমধ্যে ১৩০ একর জমিতে বালু ভরাট সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী ছয় মাসের মধ্যে পুরো মাটি ভরাটের কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ইপিজেড এলাকায় কর্মরতদের জন্য ১৫৪টি পরিবারের আবাসন, ড্রেন, ফুটপাত, কালভার্ট, স্কুলসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া ৩ লাখ মিটার সড়ক, ৩০ হাজার মিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ১০টি অফিস ও আবাসিক ভবন, হেলিপ্যাড এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে। আগামী এক বছরের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের মাঝে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে।

এই প্রকল্পকে ঘিরে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। উদ্যোক্তারা মনে করছেন, ইপিজেড চালু হলে পটুয়াখালীসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আসবে।

বিজ্ঞাপন

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না জানান, ২০২৬ সালের শুরুর দিকে বিনিয়োগকারীদের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হবে। দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে চলছে এবং আগামী এক বছরের মধ্যেই ইপিজেডের কাজ দৃশ্যমান হবে।

এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা ইপিজেডের সুফল পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। আবুল বাসার নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক তরুণ বেকার। ইপিজেড চালু হলে তারা কর্মসংস্থান পাবে, যা আমাদের অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন আনবে।

জমিদাতা ১২৬ পরিবারের জন্য নির্মিত হবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আশ্রয়ণ এলাকা। সেখানে আধুনিক পানির ব্যবস্থা, স্যানিটেশন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রয়োজনীয় সব সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া, বিনিয়োগকারীদের জন্য কুয়াকাটায় ২.২৫ একর জমিতে একটি বিনিয়োগকারী ক্লাব স্থাপন করা হচ্ছে, যা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাড়তি সুবিধা দেবে।

উপকূলীয় অর্থনীতির এই বিশাল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পটুয়াখালী অর্থনৈতিকভাবে আরও সমৃদ্ধ হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং উদ্যোক্তারা সবাই তাকিয়ে রয়েছেন ২০২৬ সালের দিকে, যখন প্রকল্পটি পুরোপুরি কার্যকর হবে এবং উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনীতিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।