ঝিনাইদহে বিষপান করিয়ে শিশুকে হত্যা, সৎ মা গ্রেফতার

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঝিনাইদহ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে শিশু মাহামুদা খাতুনকে (৫) বিষপান করিয়ে হত্যার অভিযোগে সৎ মা হুমায়রা খাতুন বন্যাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬।

শনিবার (৮ মার্চ) দিবাগত রাত ১টার দিকে অভিযান চালিয়ে জেলার মহেশপুর উপজেলার চাদপুর গ্রামের শিশুতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ঝিনাইদহ র‌্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর নাঈম জানান, গত ১ মার্চ সন্ধ্যায় বোতলে তরল পানীয় এর সঙ্গে বিষ মিশিয়ে শিশু মাহামুদা খাতুনকে খাইয়ে দেয় সৎ মা হুমাইরা খাতুন বন্যা। এরপর কয়েকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শিশুটি মারা যায়। পরে গত ৭ মার্চ শিশুটির বাবা শাহিন আলম বাদী হয়ে কোটচাঁদপুর থানায় স্ত্রী হুমাইরা খাতুন ওরফে বন্যার নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় মামলার আসামি ধরতে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। এরই প্রেক্ষিতে শনিবার রাতে মহেশপুর উপজেলার চাদপুর গ্রামের শিশুতলা এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেফতার  করা হয়। পরে তাকে কোটচাঁদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাকে থানা পুলিশ আদালতে পাঠায়।

কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কবির হোসেন মাতুব্বর বলেন, ঘটনার পর শিশুটির পিতা বাদী হয়ে কোটচাঁদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপেক্ষিতে র‌্যাব শনিবার রাতে মহেশপুরের শিশু তলা তাঁর ফুপুর বাসা থেকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করেছেন। আমরা তাকে আদালতে পাঠিয়েছি।

বিজ্ঞাপন

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে শাহিন আলমের প্রথম স্ত্রী আফরোজা খাতুন মারা যান। পরে শাহিন বিদেশে চলে যান। তখন থেকে শিশুটি বড় হয় তার দাদি সখিনা খাতুনের কাছে। এরপর শাহিন আলম দ্বিতীয় বিয়ে করেন হুমাইরা খাতুনের সাথে। তবে কিছুদিন পর থেকেই শাহীনের প্রথম সন্তানের সাথে সৎ মা হুমাইরার সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়। সেই কলহের জেরে গত ১ মার্চ সৎ মা হুমাইরা কৌশলে কোমল পানীয়ের সাথে বিষ মিশিয়ে শিশুটিকে খাওয়ান। পরে মাহমুদাকে প্রথমে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে যশোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ঢাকা থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। তবে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ মার্চ দুপুরে শিশুটির মৃত্যু হয়।

শিশুটির বাবা শাহিন আলম বলেন, মেয়েটি আমার কাছে ছিল, কিন্তু সে সহ্য করতে পারতো না। তবে তাকে যে এভাবে পরিকল্পিতভাবে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিবে সেটা আমি বুঝতে পারিনি।

শাহিনের দাদি সকিনা বেগম জানান, আমি মাহমুদাকে লালনপালন করে বড় করেছি। কিন্তু হুমাইরা কখনই মেয়েটিকে ভালো চোখে দেখতো না।

তিনি আরও বলেন, মাহমুদার জন্মের সময় তার মা আফরোজা খাতুন মারা যান। এরপর থেকে আমিই তাকে লালনপালন করে বড় করেছি। ওর বাবা শাহিন সৌদি আরবে অবস্থানকালে একই গ্রামের জিয়াউর রহমানের মেয়ে হুমাইরাকে মোবাইলে বিয়ে করে। প্রায় দুই মাস আগে সে দেশে ফিরে তাকে বাড়ি আনে। সে কখনই মাহমুদাকে ভালো চোখে দেখতো না। কিন্তু বিষ খাইয়ে হত্যা করবে, তা আমরা কেউ ভাবতেও পারিনি। আমি হুমাইরার শাস্তি চাই।