চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের এই অভিযানের মাধ্যমে আটক করব: ডিএমপি কমিশনার
-
-
|

ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, মোটরসাইকেল এবং অন্যান্য গাড়ি ব্যবহার করে যারা ছিনতাই করে তাদেরকে অনুসন্ধান এবং চেক করছি। ছিনতাইকারীরা যাতে ধরা পড়ে সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। চিহ্নিত যেসব সন্ত্রাসী আছে তাদেরকে আমরা এই অভিযানের মাধ্যমে আটক করব। তবে সকল ক্ষেত্রে ঢাকাবাসীর সাহায্য সহযোগিতা আমাদের একান্ত কাম্য।
মঙ্গলবার (২৫ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর বিজয় সরণি সংলগ্ন নভোথিয়েটারের সামনে ‘ঢাকা মহানগর এলাকায় জননিরাপত্তা জোরদারে চলমান বিশেষ কার্যক্রম পরিদর্শনকালে এসব বলেন তিনি।
পাড়া মহল্লায় চাপাতিও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ছিনতাইয়ের যে কার্যক্রম চলছে এই পাড়া মহল্লা আপনারা কতটুকু নজরদারিতে রাখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, আপনারা দেখবেন, ইংরেজিতে যেটা বলে 'ক্রাইম এগেনাস্ট প্রপার্টি' ডাকাতি হয়, রাহাজানি হয় চুরি হয়, অনেক কিছুই হয়। ঢাকা শহরে ক্রাইম এগেনেস্ট প্রপার্টির মধ্যে সবচেয়ে সহজ যেটা সেটা হচ্ছে ছিনতাই করা। কারণ হলো একটা চাপাতি আর দুই তিনজন মিলে এত অলি-গলির ভেতরে চাপাতিটা ধরে ছিনতাই করে ফেলে। কিন্তু ডাকাতির শঙ্কা নেই। অন্যান্য শঙ্কা নেই। কারণ ক্রাইম এগেনেস্ট প্রপার্টি বা এই যে মাদকাসক্ত ছেলেপেলে ভসাই একজনের কাছ থেকে এই কাজটা (ছিনতাই) করতে পারে। যার ফলে এখন সমস্ত ক্রিমিনালদের কাজ হচ্ছে ছিন্তায়ে নিয়োজিত হওয়া। তবে পরিস্থিতি গত দুই একদিন দিন খারাপ। এর আগে মাসখানেক ছিনতাই এর ঘটনা খুবই কম ছিল।
তিনি বলেন, আরেকটা বিষয় আমাদের এখন মনে রাখতে হবে। আমরা মিডিয়ার যুগে বাস করি। এখন একটা ঘটনা এখানে হলে পাঁচ মিনিটের মধ্যে এটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। এই শহরে আমার দীর্ঘদিনের চাকরি। আমি এই অঞ্চলের দুই বছর ডিসি ছিলাম। তখনো অপরাধ হতো। অপরাধ যে কখনো ছিল না তা তো না। বিএনপি বস্তি ছিল আপনারা সবাই জানেন। সেখানে মাদকের আড্ডা খানা ছিল, ছিনতাই ছিল তখনো অপরাধ হতো। কিন্তু তখন মিডিয়া এখনকার মত এত এডভান্স ছিল না। সেজন্য এত প্রচার-প্রচারণা টা হতো না। কিন্তু এখন একটা ঘটনা হওয়ার সাথে সাথে একজনে ভিডিও করে ইভেন আগে যে অপরাধ হলে দশটা লোক সামনে এগিয়ে এসে প্রতিরোধের চেষ্টা করত এখন সেটা না পড়ে উল্টো পকেট থেকে মোবাইল বের করে ভিডিওতে ব্যস্ত থাকে। ওই লোকটা যে বিপদে পড়েছে তার সাহায্যে এগিয়ে না গিয়ে ভিডিও করে। তাই আমি সকলকে অনুরোধ করি আসেন সবাই প্রতিরোধ গড়ে তুলি। একটা লোক বিপদগ্রস্থ হলে আমরা সবাই এগিয়ে যাই।
স্বল্পসংখ্যক পুলিশ,স্বল্প সংখ্যক বাংলাদেশ আর্মির সদস্যা, এই স্বল্পসংখ্যক র্যাব এটিইউ দিয়ে এত জনবহুল একটা শহর নিয়ন্ত্রণ। এই শহরে দুই আড়াই কোটি লোক বাস করে। এখানে সবাইকেই অবদান রাখতে হবে এবং সবাইকেই আমাদের কাজ করতে হবে। সমাজকে অপরাধমুক্ত রাখার জন্য। আমি আশা করি গত তিন চার দিনের যে ভাইরাল দু একটি ঘটনা, পার্টিকুলারলি বনশ্রীর ঘটনাটা একটু বেশি ভাইরাল হয়েছে এবং ঘটনাটাও খারাপ শুটিং হয়েছে, শুটিং করে ছিনতাইয়ের ঘটনা এটাই ইদানিং কালের ভিতরে প্রথম।
রামপুরা স্বর্ণ ব্যবসায়ীর গুলি করে ছিনতাই এর ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা আশা করি আগামীকালের মধ্যেই আপনাদের একটা ভালো খবর দিব। ভালো কাজ হচ্ছে হোপফুলি কালকে ভোটার ডিটেকশন হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ। ঢাকাবাসী সবার কাছে অনুরোধ, আসেন সম্মিলিতভাবে আমরা চেষ্টা করি, তাহলে এই ধরনের অপরাধ থেকে আমরা বের হয়ে আসতে পারবো।
সম্মিলিতভাবে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হচ্ছে। কিন্তু আজ সন্ধ্যায় ছিনতাইকারী সন্দেহে দুইজনকে ঝুলিয়ে পেটানো হয়েছে। সাধারণ মানুষ আইন হাতে তুলে নিচ্ছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনভাবেই ঢাকাবাসীকে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বলছি না। আমি যেটা বলছি, সম্মিলিতভাবে আমরা একটা প্রতিরোধ সৃষ্টি করি এবং আমাদের যে বিভিন্ন ল ইনফোর্সিং এজেন্সির লোকা আমরা আছি, রাস্তায় কাজ করছি, আপনারা তাদের হাতে তুলে দেন। আমরা আইনগতভাবে তাদের কুপটে সোপর্দ করি। ঢাকাবাসের জন্য আইন নিজে হাতে তুলে না নেই।
ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে এখনো পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি এই বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এইজন্য ঢাকা বাসির সহযোগিতা দরকার। যে পরিমাণ অলিগলি আছে সে পরিমাণ ল ইনফোর্সিং লোক কি সরকারের আছে? সেটা তো নেই। প্রত্যেক গলিতে লোক দিতে পারব না। আমরা মনিটরিং সিস্টেম বের করেছি। আরো টেকনোলজি বের করছি। ইনশাল্লাহ সব জায়গা কভার করব। আমরা চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের যদি আটকাতে পারি তাহলে দেখবেন এসব ঘটনা কমে গেছে।