জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার পথ ধরে এবারও নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি দেশের সংস্কার করবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে টাঙ্গাইলের পৌর উদ্যানে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টুর গণ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় নজরুল ইসলাম খান বলেন,সংস্কার খায় না মাথায় দেয়, শুধু বলেন সংস্কার? দেশ সংস্কার করেছে জিয়াউর রহমান, জিয়াউর রহমান বাড়ি বাড়ি গেছে, খালেদা জিয়া মাইলের পর মাইল কাজ করেছে। তাই দেশ সংস্কার একমাত্র বেশি করেছে বিএনপি। যুবকদের জন্য যুব মন্ত্রণালয় করেছে বিএনপি,মহিলাদের জন্য মহিলা মন্ত্রণালয় করেছে বিএনপি, প্রবাসী কল্যান মন্ত্রণালয় করেছে বিএনপি। সবগুলো কল্যাণকর কাজ করেছে বিএনপি। দেশে প্রথম সংস্কারের জন্য ঘোষণা দেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। ৩১ দফার মধ্যে সংস্কার রয়েছে। বিএনপি জোর করে ক্ষমতায় যায়না।
এসময় তিনি আরও বলেন, ১৭ বছর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেছে, অসংখ্য খুন করেছে,গুম করেছে। জুলাই আন্দোলনে আমাদের ৪ শতর অধিক কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা বিএনপি ১ দফা আন্দোলন শুরু করেছি। আমরা স্বৈরাচার পতন করেছি।
সংবর্ধিত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু বলেন,শেখ হাসিনা সরকার আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলো, কী রকম ভয়াবহ নির্যাতন করেছে যারা আপনারা দেখেন নাই তারা বুঝবেন না। কি ভয়াবহ নির্যাতন আমাদের উপর করেছে। আমি এমপি ছিলাম মন্ত্রী ছিলাম তারপরেও আমার উপর নির্যাতন চালায়। এমন করে আঘাত করতো যে ডিল মেশিং দিয়ে পায়ের হাঁটু ছিদ্র করে দিতো। আমাদেরকে কনডেম সেলে নিয়ে নির্যাতন করা হতো। একটি কথা বলতে চাই অত্যাচারীদেরকে কখনো আল্লাহ ক্ষমা করেননি শেখ হাসিনাকেও ক্ষমা করবে না।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান। তিনি বলেন, ৫ আগষ্টের পর বলেছিলাম বাংলাদেশে এই গণঅভ্যুত্থানের পর মুক্ত বাংলাদেশ পেয়েছিলাম। কিন্তু ভেবেছিলাম আর রাজপথে নামতে হবে না, কিন্তু বড় দুঃখের বিষয় এই সরকারও সেই পথেই হাঁটছে। বিগত দিনে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, দীর্ঘ ১৭ বছর পর ভেবেছিলাম আমরা যে অধিকারের জন্য এউ গণঅভ্যুত্থানে অংশ হয়েছিলাম, সেই আশা আকাঙ্খা শেষ হয়েছে। খুনি হাসিনা যেমন বলতেন আগে উন্নয়ন পরে নির্বাচন। ঠিক তেমনি এই সরকার বলে বেড়ায় আগে সংস্কার পরে নির্বাচন। সারাদেশে এখন ডাকাতী হচ্ছে, বাসে ডাকাতী হচ্ছে,ট্রেনে ডাকাতী হচ্ছে, আগেই বলেছি দেশে শৃঙ্খলা ফেরাতে হলে অবশ্যই নির্বাচন দরকার।
ড.ইউনুসকে উদ্দেশ্য করে বলেন,আপনাকে ফখরুদ্দিন ময়নুল ইসলানের মতো করে বিদায় দিতে চাইনা, আপনি সম্মানিত ব্যক্তি নোবেলজয়ী আপনাকে সম্মানে বিদায় দিতে চাই। যে বাংলাদেশের মানুষ ১৭ বছর ভোটের অধিকারের জন্য লড়েছে সেই জাতীয় নির্বাচন জন্য আগামী পাঁচই ডিসেম্বর ঘোষনা করেন।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, এই সংবর্ধনা প্রমাণ করেছে বিগত সরকার এই মাটির সন্তান পিন্টুকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ১৭ বছর বিনা কারণে খুনি হাসিনা কারাবরণ করে রেখেছিলো। এই খুনি হাসিনা,অসংখ্য আলেমদের খুন করেছে, গুম করেছে, আমার ভাই পিন্টুকে গুম করে কারাগারে রেখে মনে করছিলো বিএনপিকে দামিয়ে রাখবে তা হয়নি। এই টাঙ্গাইলের মাটি থেকে বলতে চাই এই বাংলাদেশের মাটিতে কখনো আর খুনি হাসিনার জায়গা হবেনা। এই টাঙ্গাইলে খুনি হাসিনা সন্ত্রাসের রাম রাজত্ব করেছিলো। অসংখ্য নেতাকে গুম করেছে খুন করেছে। আমরা বলতে চাই টাঙ্গাইলে বিএনপিতে কোন সন্ত্রাস নেই। বর্তমান সরকারকে বলতে চাই আপনারা নির্বাচন দিতে পারবেন না কারণ আপনাদের সেই সক্ষমতা নেই।
জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে টুকু বলেন,বিগত ৯৬ সালে ৩ সিট পেয়েছিলেন এবার আসেন নির্বাচনে একটি সিট ও পাবেন না। আমরা হিন্দুবাদ চাইনা, উর্দু বাদ চাইনা সবার আগে আমরা বাংলাদেশ। আপনারা গায়ে ইসলামী লেবাস লাগিয়ে সন্ত্রাসী করবেন তা বাংলাদেশের জনগণ মানবে না।
জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহিনের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক(ঢাকা বিভাগ) বেনজির আহমেদ টিটো,সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক সাঈদ সোহরাব, নির্বাহী সদস্য এস এম ওবায়দুল হক নাসির, এডভোকেট মোহাম্মদ আলী ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরহাদ ইকবাল।
দীর্ঘ ১৭ বছর একুশে গ্রেনেড হামলা মামলায় আব্দুস সালাম পিন্টুকে ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। এরপর গত ৫ আগষ্ট সরকার পতন হলে একুশে গ্রেনেড হামলা মামলায় খালাস পায় আব্দুস সালাম পিন্টু।