সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব কমে ১৯
ভোট এলো, এলো ভোট-
-
|

ছবি: সংগৃহীত
সদ্য শেষ হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী একাদশ সংসদের ২২ জনের তুলনায় নারী সংসদ সদস্যদের সংখ্যা কমেছে। এবার ৯৮ প্রার্থীর মধ্য বিজয়ী হয়েছে ১৯ জন প্রার্থী। এর মধ্যে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত। বাকি ৩ জন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থী।
গত ১১টি জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৯৮ জন, যা এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত সব নির্বাচনের মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ নারী প্রার্থী। এবারের নির্বাচনে দুইজন হিজড়াও প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে।
এবারও আগের মত একই নারী বা পরিচিত মুখগুলোই নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। তবে অনেক মানিকগঞ্জ- আসনের মমতাজ বেগম ও গাজীপুর-৫ আসনের মেহের আফরোজ চুমকি জিতে আসতে পারেনি।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত নারী সংসদ সদস্যরা হলেন: গোপালগঞ্জ-৩ শেখ হাসিনা। চাঁদপুর-৩ ডা. দীপুমণি। রংপুর -৬ আওয়ামীলীগ শিরিন শারমীন চৌধুরী। গায়বান্ধা-৩ আওয়ামীলীগ উম্মে কুলসুম স্মৃতি। সিরাজগঞ্জ-২ মোছা: জান্নাত আরা হেনরী। বাগেরহাট-৩ হাবিবুর নাহার। বগুড়া-১ সাহাদারা মান্নান। বরগুনা-২ সুলতানা নাদিরা। শেরপুর-২ মতিয়া চৌধুরী। ময়মনসিংহ-৩ নাজনীন আলম। কিশোরগঞ্জ-১ সৈয়দা জাকিয়া নূর। মুন্সিগঞ্জ-২ সাগুফতা ইয়াসমিন। গাজীপুর-৩ রুমানা আলী। গাজীপুর-৪ সিমিন হোসেন রিমি। চট্রগ্রাম-২ খাদিজাতুল আনোয়ার। কক্সবাজার-৪ শাহীন আক্তার।
আর আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পদে থাকা তিন নারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন: সুনামগঞ্জ-২ জয়া সেনগুপ্তা, মাদারীপুর-৩ মোসা: তাহমিনা বেগম। হবিগঞ্জ-১ আসনে আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছেন।
একটি আসনের নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের ফলাফল প্রকাশ করেনি ইসি। এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নিলুফার আনজুম পপি নৌকা প্রতীকে ৫৩ হাজার ১৫৬ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সোমনাথ সাহা ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৫২ হাজার ২১১ ভোট। এ আসনের স্থগিত কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ৩২ জন। দুজনের ভোটের ব্যবধান ৯৮৫। স্থগিত কেন্দ্রে আগামী ১৩ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ শেষে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
প্রথম নারী সাংসদ নির্বাচিত হন তৃতীয় সংসদে ১৯৭৯ সালে। এরপর ১৯৮৬ সালে ৫ জন, ১৯৮৮ সালে ৪ জন নারী সরাসরি নির্বাচিত হন। এই নির্বাচনগুলোতে মোট কতজন করে নারী প্রার্থী ছিলেন সে পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। ১৯৯১ সালের হিসাব অনুযায়ী ৩৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ৫ জন, ১৯৯৬ সালের জুন মাসের নির্বাচনে ৩৬ প্রার্থীর মধ্যে ৮ জন, ২০০১ সালের নির্বাচনে ৩৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ৬ জন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৫৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৯ জন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ২৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জন নারী নির্বাচিত হয়ে সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২২ জন নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে সদ্য অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংদদ নির্বাচনে ২৮ রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে ১ হাজার ৯৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তারমধ্য বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ২২২ টি আসন পেয়ে নিরুঙ্কুষ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৩৭ মধ্য ৬২ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়। আর জাতীয় পার্টি থেকে ১১ জন। বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টি ১ জন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ থেকে একজন। কল্যান পার্টি থেকে একজন নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের নির্বাচনে ৪১ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার সিইসি কাজী হাবিবুল আওয়াল।