চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে সড়কে গাছ ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা মো. একরামুল হকের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৫ মার্চ) ভোররাতে গহিরা-হেঁয়াকো সড়কের নারায়ণহাট নন্দীর স্কুল সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। একরামুল হক ভুজপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের নারায়ণহাট রেঞ্জের আওতাধীন দাঁতমারা বনবিটের বড়ইতলী প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন এলাকা থেকে রাতের আঁধারে পারমিট করা বাগানের গাছ কাটার সময় বিক্ষুব্ধ জনতা ৬ জনকে আটক করে পুলিশে দেয়। এ সময় আটককৃতদের কাছে থাকা ৯টি মোটরসাইকেল এবং বিভিন্ন প্রজাতির ১৫টি কাটা গাছ জব্দ করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, যুবদল নেতা একরামের নেতৃত্বে কিছু যুবক সেখানে গাছ কাটতে জড়ো হন। রাত গভীর হলে তাদের দল ভারী হতে থাকে। প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা ঘুমিয়ে পড়লে সেহরির সময় এসব গাছ কাটা হয়। খবর পেয়ে লোকজন তাদের আটক করে পুলিশে দেয়। কিন্তু থানায় নেওয়ার পথে একরামের নেতৃত্বে দলবল নিয়ে পুলিশের গাড়ি আটকে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
দাঁতমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, আটককৃতদের নিয়ে থানার দিকে যাওয়ার পথে বিএনপি নেতা একরামুল হক ও ছাত্রদল নেতা ইয়াকুব চৌধুরীর নেতৃত্বে শতাধিক লোক সুইচগেইট এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশের গাড়ি থামিয়ে দেয় এবং আটক ব্যক্তিদের ছিনিয়ে নেয়।
ভুজপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহবুবুল হক বলেছেন, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। পুলিশ ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছে এবং তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
তবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে যুবদল নেতা একরাম বলেছেন, গভীর রাতে তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন এবং চোরাই গাছ কাটার বিষয়ে কিছুই জানেন না। সকালে লোকমুখে শুনেছেন, গাছ কাটা বন্ধ করতে গিয়ে কিছু নেতাকর্মী ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয়েছেন। তার দাবি, দলের কেউ অপরাধে জড়িত নয়, তাই পুলিশ তাদের ছেড়ে দিয়েছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতারা এ ঘটনায় দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। দাঁতমারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শফিউল আজম চৌধুরী জানিয়েছেন, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কাজ চরম অন্যায়। যদি বিষয়টির সঙ্গে দলের কেউ জড়িত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।
পুলিশ জানায়, গাছ কাটার ঘটনায় আটক হয়েছিলেন মো. জাহেদ (২৫), মো. বোরহান (২৬), আকিব উদ্দিন (২৭), কুদ্দুস মিয়া (৩৫), আশিক (২৫) ও মনা মিয়া (২৯)। তারা সবাই যুবদল নেতা একরামুল হকের অনুসারী ও স্থানীয় বাসিন্দা।