পবিত্র মাহে রমজানের দ্বিতীয় দশককের মাগফিরাতের দিনগুলো আমরা অতিবাহিত করছি, আলহামদুলিল্লাহ। রমজান এমন এক প্রিয় মাস যে মাসের আগমনে ঊর্ধ্বলোকেও প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয় এবং জান্নাত সুসজ্জিত করা হয়। হুজুর পাক (সা.) বলেন, ‘রমজানের শুভাগমন উপলক্ষে সমস্ত বছর জুড়ে জান্নাতকে সুসজ্জিত করা হয়। আর যখন রমজানের আগমন হয় তখন জান্নাত বলে, হে খোদা! এ মাসে তুমি তোমার বিশেষ বান্দাদেরকে আমার জন্য মনোনীত করো’ (বায়হাকি, সা’বুল ইমান)।
মহানবী (সা.) অন্যত্রে বলেন, রমজানের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি রাখো, কেননা এটি আল্লাহতায়ালার মাস, যা অতি বরকতমণ্ডিত এবং অতি উচ্চ পর্যায়ের। তিনি তোমাদের জন্য ঐ এগার মাস ছেড়ে দিয়েছেন, যে মাসগুলোতে তোমরা নিশ্চিন্তে পানাহার করে থাকে এবং সকল প্রকার স্বাদ আশ্বাদন করে থাকো কিন্তু তিনি নিজের জন্য একটি মাস মনোনীত করেছেন’ (মাজমাউয যাওয়ায়েদ)।
বিজ্ঞাপন
রমজানুল মুবারককে সাইয়্যেদুশ শুহুর অর্থাৎ সকল মাসের সরদারও বলা হয়েছে। এ মাস অগনিত বরকতের মাস। চৌদ্দশত বছর পূর্ব থেকে কোটি কোটি পুণ্যাত্মা এ মাস থেকে বরকত মণ্ডতি হয়ে এসেছে আর বর্তমানেও কোটি কোটি পবিত্রাত্মা এ মাস থেকে লাভবান হচ্ছে। এ দিনগুলোতে নিষ্ঠাবান রোজাদারদের দোয়া কবুলিয়্যতের মর্যাদা লাভ করে। তাদের প্রতি আধ্যাত্মিক নূর বর্ষিত হয়। তারা কাশফ বা দিব্যদর্শন, সত্য স্বপ্ন এমনকি ইলহামের কল্যাণও লাভ করতে সক্ষম হয়।
রমজানের দিনগুলোতে মহানবী (সা.)-এর ইবাদত সম্পর্কে হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন: রমজানে তিনি (সা.) কোমর বেধে নিতেন এবং পূর্ণ চেষ্টা-প্রচেষ্টা করতেন। মহানবী (সা.)-এর ইবাদতের অবস্থার বর্ণনা এভাবেও এসেছে যে, ‘রাতে ইবাদতের সময় তার (সা.) বক্ষ আল্লাহতায়ালার সমীপে কান্নাবনত হতো, হৃদয় বিগলিত হতো এবং বুকের মাঝে এমন কান্নার শব্দ শোনা যেত যেভাবে হাড়িতে পানি টগবগ করলে শব্দ হয়’ (শামায়েলে তিরমিজি)।
বিজ্ঞাপন
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যখন কেউ রমজানের প্রথম দিন রোজা রাখে তখন তার পূর্বেকার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। এমনিভাবে রমজান মাসের সমস্ত দিন চলতে থাকে এবং প্রতি দিন তার জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা সকালের নামাজ থেকে শুরু করে তাদের পর্দার অন্তরালে যাবার আগ পর্যন্ত তার ক্ষমার জন্য দোয়া করতে থাকে’ (কানযুল উম্মাল, কিতাবুস সওম)।
একবার মহানবী (সা.) বলেন, ‘ফেরেশতা রোজাদারের জন্য দিন-রাত এস্তেগফার করতে থাকে’ (মাযমাউয যাওয়ায়েদ)।
হজরত আবু আমামা বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কছে আরয করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন কোন কাজ বলে দিন যার মাধ্যমে আমি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো। তখন হুজুর (সা.) বললেন, আবশ্যকীয় কর্ম হিসেবে রোজা রাখো, কেননা এটি সেই আমল যার কোন উপমা বা পরিবর্তন নেই’ (আত তারগিব ওয়াত তারহিব, নিসাঈ, কিতাবুস সওম)।
হজরত আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বর্ণনা করেন, হুজুর (সা.) বলেছেন, ‘যে বান্দা খোদার পথে এক দিন রোজা রাখে আল্লাহতায়ালা তার চেহারা থেকে আগুনকে দূরে সরিয়ে দেন’ (মুসলিম ও ইবনে মাজা)। অপর একটি বর্ণনায় পাওয়া যায়, মহানবী (সা.) বলেনে, ‘খোদার জন্য এক দিনের রোজা পালনকারী থেকে জাহান্নাম শত বছর দূরত্বে পাঠিয়ে দেয়া হয়’ (নিসাঈ, কিতাবুস সওম)।
হাদিসে এসেছে, হজরত আব্দুর রহমান বিন আওফ (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবী (সা.) রমজান মাসকে ইবাদতের দিক থেকে সকল মাসের তুলনা সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছেন এবং বলেছেন: ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমানি অবস্থায় এবং নিজেকে যাচাই-বাছাই করে রাতে উঠে ইবাদত করে সে তার গুনাহসমূহ থেকে এভাবে পবিত্র হয়ে যায় যেভাবে সেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল’ (সুনানে নিসাঈ, কিতাবুস সওম)।
সুবহানাল্লাহ! পবিত্র এই রমজান আমাদেরকে নিষ্পাপ হওয়ার জন্য আহ্বান করছে অথচ আমরা চলছি কোন পথে। আমরা আদৌ নিষ্পাপ হওয়ার চেষ্টা করছি? আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে ক্ষমা করে তার দয়ার চাদরে ঢেকে রাখুন, আমিন।
আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন, কেন নামাজের সময় মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়? কেন আপনার ঈমান বছরের বিভিন্ন সময়ে ওঠানামা করে, বিশেষ করে রমজান কিংবা হজ পালনের সময় তা বাড়ে, কিন্তু পরে আবার তা কমে যায়?
সম্ভবত এর কারণ হলো, আমরা হঠাৎ করেই দৈনন্দিন ব্যস্ততা থেকে সরাসরি ইবাদত-বন্দেগির পরিবেশ চলে যাই। একটি ফোন কল শেষ করেই তাকবির বলে নামাজ শুরু করি, অথবা রমজানে শুধুই পরিবেশের প্রভাবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলি, নিজের হৃদয়ের গভীর অনুভূতি থেকে নয়। অনেকেরই বিশ্বাস নির্ভর করে আসন্ন কোনো বড় ঘটনার ওপর।
যেমন আমাদের অনেকেই প্রতিজ্ঞা করেন- ‘এবার রমজান শুরু হলে প্রতিদিন কোরআন পড়া শুরু করব।’ ‘হজ থেকে ফিরে এলে প্রতি রাতে তাহাজ্জুদ পড়ব।’ ‘সন্তান জন্মের পর ধূমপান ছেড়ে দেব।’
কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এই সংকল্পগুলো অনেক সময় পূরণ হয় না। কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ চেষ্টা করি, তারপর আবার আগের জীবনযাত্রায় ফিরে যাই। কারণ এগুলো শুধুই আবেগ থেকে জন্ম নেওয়া প্রতিশ্রুতি, বাস্তব পরিকল্পনা নয়।
এ জন্য আলেমরা বলেন, ঈমানকে টেকসই করার জন্য প্রস্তুতি দরকার। অনেক সময় রমজান বা হজের জন্য পরিকল্পনা করি না, বরং পরিস্থিতির প্রবাহের সঙ্গে এগিয়ে যাই এবং আশা করি, পরিবর্তন এমনিতেই আসবে। কিন্তু তা হয় না!
আপনি কি চান, রমজানের সময় আপনার ঈমান সত্যিকার উচ্চতায় পৌঁছাক? পবিত্র এ মাসের প্রভাব জীবনে স্থায়ী হয়ে থাকুক? তাহলে প্রয়োজন সচেতন প্রস্তুতির। এখানে রমজানের জন্য টেকসই প্রস্তুতির কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো।
রমজানের জন্য দিন গণনা করা রমজানের জন্য আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করুন। ঘরে ও অফিসের ক্যালেন্ডারে দিন গণনা করুন। এতে আপনার ও আশেপাশের মানুষের মধ্যে আগ্রহ ও উৎসাহ বাড়বে।
রমজান সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করুন রমজান শুধু সওয়াব অর্জনের মাস নয়, এটি আত্মশুদ্ধিরও মাস। আপনি রমজানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে যতবেশি জানবেন, ততবেশি তা আপনার জীবনে প্রভাব ফেলবে। এই মাসের বিভিন্ন ইবাদত-বন্দেগি ও দোয়া-দরুদ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করুন এবং সেগুলোর অর্থ বোঝার চেষ্টা করুন।
রমজানে কোরআন তেলাওয়াতের অভ্যাস গড়ে তুলুন, ছবি: সংগৃহীত
বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা তৈরি করা পুরো কোরআন খতম করবেন? প্রতি রাতে তারাবি পড়বেন? নিয়মিত দান-সদকা করবেন? এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন, যা আপনি রমজানের পরেও ধরে রাখতে পারবেন। প্রতিদিনের পরিকল্পনা করুন এবং ঘুমানোর আগে পরবর্তী দিনের ইবাদতের রুটিন চূড়ান্ত করুন।
দৈনন্দিন জীবন বিশ্লেষণ করুন রমজান চলাকালে বা পরে আপনার জীবনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আছে কি? যেমন- পরীক্ষা, বিয়ে, চাকরির ইন্টারভিউ বা বাসা পরিবর্তন। এসব বিষয় মাথায় রেখে পরিকল্পনা করুন, যাতে রমজানের ইবাদত বাধাগ্রস্ত না হয়।
আধ্যাত্মিকভাবেও প্রস্তুতি নিন রমজান শুরু হওয়ার আগেই কিছু অভ্যাস গড়ে তুলুন। অতিরিক্ত নফল নামাজ পড়ুন, কোরআন তেলাওয়াতের অভ্যাস গড়ে তুলুন, দান-সদকা বাড়িয়ে দিন, শাবান মাসে রোজা রাখার চেষ্টা করুন, যাতে রমজানের রোজা রাখতে সহজ হয়।
মনকে প্রস্তুত করুন রমজানে রোজা রাখা শুধু খাবার-পানীয় থেকে বিরত থাকার নাম নয়, বরং এটি ধৈর্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণেরও পরীক্ষা। এখন থেকেই কথাবার্তায় সংযম অনুশীলন করুন- গীবত, অপবাদ ও অনর্থক আলোচনা থেকে বিরত থাকুন।
খারাপ অভ্যাস পরিত্যাগ করুন আপনার জীবনে কোন কোন খারাপ অভ্যাস রয়েছে তা চিহ্নিত করুন এবং এখন থেকেই পরিবর্তন শুরু করুন। যদি দেরিতে ঘুমানোর অভ্যাস থাকে, তাহলে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে শিখুন। যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় নষ্ট করেন, তাহলে তা সীমিত করুন। যদি কফি বা ধূমপানের প্রতি আসক্ত হন, তাহলে তা ধীরে ধীরে কমান। প্রথমে কঠিন মনে হতে পারে, কিন্তু আন্তরিক নিয়ত ও আল্লাহর সাহায্য চাইলে, ইনশাআল্লাহ তা সহজ হয়ে যাবে।
ইবাদতকেন্দ্রিক জীবনযাত্রা গড়ে তুলুন নামাজকে আপনার সময়সূচির কেন্দ্রে রাখুন, নামাজের জন্য সময় নির্ধারণ করুন। কাজের মাঝে নামাজের বিরতি নিন। মসজিদে যাওয়ার সময় ফোন বন্ধ রাখুন। নামাজের সময় দুনিয়ার ব্যস্ততা ভুলে আল্লাহর দিকে মনোযোগ দিন।
রমজান একটি অনন্য সুযোগ, যা আত্মশুদ্ধি ও ঈমান বৃদ্ধির মাধ্যম। এটি শুধু ৩০ দিনের একটি উৎসব নয়, বরং জীবনের দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনের শুরু হতে পারে।
আসুন, এ বছর আমরা রমজানের জন্য আগেভাগে প্রস্তুতি নেই- মন, হৃদয় ও আত্মাকে প্রস্তুত করি, যেন এই পবিত্র মাসের প্রভাব আমাদের জীবনে স্থায়ী হয়।
আল্লাহতায়ালা সবাইকে রমজানের বরকত অর্জন ও তার শিক্ষা বাস্তবায়নের তওফিক দান করুন।
পরিবারকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে নারীদের জাকাত দেওয়ার সুফল
শওকত আরা, অতিথি লেখক, ইসলাম
|
সিজেডএম-এর প্রকল্প থেকে সহায়তা পেয়ে হাঁস পালন দারিদ্র মুক্ত হয়েছে প্রায় অর্ধসহস্র পরিবার, ছবি: সংগৃহীত
ইসলাম
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের অর্থ হলো তাদের এমন সম্পদ, দক্ষতা ও সুযোগ প্রদান করা যাতে তারা অর্থনীতিতে পূর্ণ অংশগ্রহণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং আর্থিক স্বাধীনতা অর্জনে সক্ষম হয়। বর্তমান বিশ্বে নারীরা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করলেও শিক্ষার অভাব, আর্থিক সেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগের সীমাবদ্ধতাসহ বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এসব চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার এক অনন্য ব্যবস্থা জাকাত। জাকাত ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি।
মুসলিমরা প্রতি বছর তাদের সঞ্চয়ের ২.৫ শতাংশ অংশ দরিদ্র ও অভাবগ্রস্তদের মধ্যে নির্দিষ্ট নিয়মে বিতরণ করতে বাধ্য। জাকাত সমাজে সম্পদ পুনর্বণ্টনের বাধ্যতামূলক মাধ্যম, যা দারিদ্র্য ও বৈষম্য কমাতে সহায়ক।
অসহায়, দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের জাকাতের প্রাপক হিসেবে বিবেচনা করে জাকাতের অর্থ দেওয়া হলে তা সমাজে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। কিছু প্রধান ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে এই পরিবর্তন সুস্পষ্টভাবে লক্ষণীয়। সেগুলো হলো-
১. নারীদের আয় করার জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ ও সুযোগ দেওয়া হলে তারা নিজেদের ও পরিবারকে দারিদ্র্যের চক্র থেকে বের করে আনার সম্ভাবনা বাড়ায়। বিশেষত যেখানে নারীরা পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী। এ ছাড়া নারীরা পুরুষদের তুলনায় তাদের আয়ের একটি বড় অংশ পরিবারে বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টিতে ব্যয় করে। তাই জাকাতের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন পরিবারের সামগ্রিক কল্যাণ নিশ্চিত করে।
২. সমাজে নারী-পুরুষের এমন বহু প্রচলিত ভূমিকা ও রীতি আছে, যা নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ সীমিত করে তাকে আরো দুর্বল, অসহায় ও বিপর্যস্ত করে দেয়। নারীদের জাকাতপ্রাপ্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমে সমাজ সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে। ক্ষমতায়িত নারীরা তাদের পরিবারের ও বৃহত্তর সমাজে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে বেশি সক্ষম হয়, যা আরো সমতাপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তোলে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নারীদের নিজেদের জীবনের ওপর আরো নিয়ন্ত্রণ এনে দেয় এবং অন্যদের ওপর নির্ভরতা হ্রাস করে। ফলে নারীনির্যাতনের ঝুঁকি কমে।
৩. গবেষণায় দেখা যায়, উদ্যোক্তা হিসেবে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল অনুমান করে যে, কর্মশক্তিতে নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর করলে অনেক দেশের জিডিপি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে। নারীর ক্ষমতায়নকে সমর্থন করে, জাকাত-তহবিলভিত্তিক এমন উদ্যোগগুলো হতে পারে স্থানীয় ও জাতীয় উভয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালক।
কেস স্টাডি: জাকাতভিত্তিক নারীর ক্ষমতায়ন ইন্দোনেশিয়া: ইন্দোনেশিয়ায় নারীর ক্ষমতায়নে জাকাত তহবিলকে কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। একটি উদ্যোগ হলো নারীদের জন্য মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রামে জাকাতের ব্যবহার। এতে নিম্ন আয়ের পটভূমি থেকে আসা নারীদের সুদমুক্ত ঋণ, আর্থিক শিক্ষার প্রশিক্ষণ ও ব্যবসা উন্নয়ন সেবা প্রদান করে।
উদাহরণস্বরূপ, জাতীয় জাকাত বোর্ডের দেসা বারদায়া প্রোগ্রাম, নারী উদ্যোক্তা প্রোগ্রাম, ফ্যামিলি হোপ প্রোগ্রামসহ আরো এমন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যা ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য অনুদান এবং দক্ষতা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব দেয়। এর মাধ্যমে হাজার হাজার নারী কৃষি, কুটিরশিল্প ও খুচরা খাতের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবসা শুরু ও বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে।
পাকিস্তান: পাকিস্তানে নারীদের শিক্ষার ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের জন্য জাকাত কাজে লাগানো হচ্ছে। জাকাতের অর্থে পরিচালিত কর্মসূচিগুলো সুবিধাবঞ্চিত তরুণীদের বৃত্তি দেয়, যা তাদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ দেয়।
এ ছাড়াও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো নারীদের বিবিধ কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়; যা তাদেরকে চাকরি পেতে বা নিজস্ব ব্যবসা শুরু করতে সহায়তা করে। বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অসংখ্য নারীকে আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন এবং সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম করেছে।
মিসর: মিসরে জাকাত ক্রমবর্ধমানভাবে সামাজিক উদ্যোগ এবং সমবায় মডেলের মাধ্যমে নারীদের উন্নয়নে ব্যবহৃত হচ্ছে। সমবায়ের মাধ্যমে শহর ও গ্রামাঞ্চলের নারীরা তাদের সম্পদ একত্রিত করতে, বাজারে প্রবেশাধিকার পেতে এবং দর-কষাকষির ক্ষমতা বাড়াতে পারে। যেমন কিছু কর্মসূচি গ্রামীণ নারীদের কৃষিকাজে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ দেয়, যেমন মুরগি পালন বা হস্তশিল্প, যা তারা গৃহস্থালি দায়িত্বের পাশাপাশি পরিচালনা করতে পারে।
সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্টের অভিজ্ঞতা সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্টের (সিজেডএম) প্রাতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু ২০০৮ সালে। ২০১০ সালে জীবিকা উন্নয়ন কর্মসূচি ও জিনিয়াস স্কলারশিপ কর্মসূচিতে জাকাত ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শুরু হয়। জীবিকা উন্নয়ন কর্মসূচিতে জাকাতের হকদার ২৮ হাজার ৬৫২ জন নারীর নামে সমসংখ্যক পরিবার নিবন্ধিত হয়েছে। বর্তমানে চলমান বিভিন্ন প্রোগ্রামে নিবন্ধিত আছেন ১৪ হাজার ৫০০ জন নারী।
জিনিয়াস স্কলারশিপ কর্মসূচি পরিচালনা করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া মেধাবী মুস্তাহিক (জাকাত পাওয়ার যোগ্য) ছাত্রছাত্রীর জন্য। এই প্রোগ্রামের আওতায় ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রের সংখ্যা ১০ হাজার ৪৭৮ জন এবং ছাত্রীর সংখ্য পাঁচ হাজার ১৫০ জন। বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র ও ছাত্রীর অনুপাত ৬৭:৩৩ বা প্রায় ২:, যেখানে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র ও ছাত্রী ভর্তির অনুপাত প্রায় ৭:৩। এ ছাড়া আছে নারীদের জন্য নৈপুণ্যবিকাশ কর্মসূচির মাধ্যমে কারিগরি প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার কার্যক্রম।
শিক্ষা কর্মসূচি ‘গুলবাগিচা’র অধীনে আছে প্রাক-প্রাথমিক ও কোরআন শিক্ষা এবং জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম অনুযায়ী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্রগুলোতে এক হাজার ৫৬ জন শিশু শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৬৩ জনই মেয়েশিশু। ফোরকানিয়া মাদরাসায় এক হাজার ৮৯০ জন মুস্তাহিকের মধ্যে আছেন এক হাজার ১০০ মধ্যবয়সী নারী শিক্ষার্থী। ২০টি হিফজুল কোরআন মাদরাসার মধ্যে একটি শুধু মেয়েদের জন্য। ৫-১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য পরিচালিত এসব মাদরাসায় ছাত্র সংখ্যা এক হাজার ৩০১ এবং ছাত্রী ৮০ জন। জাতীয় কারিকুলামের তিনটি মাদরাসার মধ্যে একটি মেয়েদের। তিনটি মাদরাসার মোট ছেলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬০ জন ও মেয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২১৬ জন।
ফেরদৌসি স্বাস্থ্য কর্মসূচিতে বর্তমানে ৬১টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র চালু আছে। এখানে ১৬ হাজার ৯০০ প্রসূতি ও স্তন্যদায়ী মায়েরা পূর্ণ ম্যাটার্নিটি সেবা পেয়েছেন। দুরারোগ্য ও রেফারাল রোগীদের চিকিৎসা, শারীরিক দিক থেকে বিশেষভাবে সক্ষম রোগীদের সহায়ক ডিভাইস প্রদান, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ, নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার নির্মাণ, ডায়াগনস্টিক পরীক্ষা, ক্রনিক রোগীদের নিয়মিত ওষুধ বিতরণে সুবিধা দেয়ার পাশাপাশি আছে নারী ও বয়ঃসন্ধিকালীন মেয়েদের জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা ক্যাম্পেইন।
‘ইনসানিয়াত’ হলো সিজেডএমের বন্যা, শৈত্যপ্রবাহ, রাজনৈতিক দুর্যোগ ইত্যাদি কারণে জরুরি দুর্যোগ সহায়তা কর্মসূচি। এর আওতায় নয় লাখের বেশি অসহায় মানুষ চিকিৎসা, বাসগৃহ নির্মাণ সুবিধার মতো সেবা পেয়েছেন। এদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী। সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী গণ-আন্দোলনে শহীদদের স্ত্রীদের হাতে তাদের অশোধিত মোহরানা হস্তান্তর, সন্তানের শিক্ষা, তাদের জীবিকার ব্যবস্থা করা, ঋণ পরিশোধ করা ইত্যাদি।
সিজেডএম-এর নৈপূণ্য বিকাশ কর্মসূচির আওতায় নারীদের সেলাই প্রশিক্ষণ, ছবি: সংগৃহীত
দাওয়াহ বা প্রচারণা কর্মসূচি আয়োজন করে বিভিন্ন সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, জাকাত ফেয়ার। এসব অনুষ্ঠানে নারীদের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণের পাশাপাশি তাদের মধ্যে সিজেডএমের কর্মসূচি বিস্তারে গঠিত হয়েছে উইমেন ফোরাম ফর জাকাত ক্যাম্পেইন যেখানে সমাজের সুবিধাপ্রাপ্ত নারীরা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের অর্থনৈতিক ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে জাকাত দেওয়া, বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া, ওয়ার্কশপ ও প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনসহ বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছে।
চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ জাকাতের সুষ্ঠু প্রয়োগ নারীদের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য প্রতিশ্রুতিময় হলেও এর প্রভাব সর্বাধিক করতে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা প্রয়োজন-
ক. সচেতনতা ও শিক্ষামূলক প্রচারাভিযান এবং সম্পৃক্ততার মাধ্যমে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং আরো টার্গেটভিত্তিক জাকাতদানকে উৎসাহিত করা।
খ. স্বচ্ছতার সঙ্গে তহবিল পরিচালনা, দক্ষতার সঙ্গে তা বণ্টন ও জাকাতের কার্যকর প্রশাসনের জন্য শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। জাকাত সংস্থাগুলোর মধ্যে জেন্ডার-সেনসংবেদনশীল কর্মসূচিগুলো প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য ক্ষমতা বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ।
গ. কিছু ক্ষেত্রে, সাংস্কৃতিক রীতিনীতি নারীদের জাকাতপ্রাপ্তিতে বা অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ সীমিত করতে পারে। জাকাতভিত্তিক উদ্যোগগুলো তাই জেন্ডার-ভূমিকা সম্পর্কে সামাজিক মনোভাব পরিবর্তনের বৃহত্তর প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হতে হবে।
উপসংহার জাকাত সামাজিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের শক্তিশালী পদ্ধতি। এ পদ্ধতির ইতিবাচক ফলাফল ইতোমধ্যে বিভিন্ন মুসলিম দেশের নারীরা ভোগ করছেন। জাকাতের প্রভাব বাড়িয়ে তুলতে ধর্মীয় নেতা, নাগরিক সমাজ ও সরকারের মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করা হলে সমাজে নারীদের সামগ্রিক অবস্থার আরো উন্নয়ন ঘটবে। এর মাধ্যমে নিশ্চিত হবে যে জাকাত শুধু ইবাদতেরই স্তম্ভ নয়, বরং তা উন্নয়নেরও স্তম্ভ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ড. মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে ১২ থেকে ১৫ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। এটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ওয়াজ মাহফিল বলে দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাহফিলে বয়ান পেশ করেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারী। মাহফিল উপলক্ষে সকাল থেকে সেখানে চলছে স্থানীয় নেতৃত্বের বক্তব্য।
মাহফিলকে ঘিরে ভোর থেকে শ্রোতাদের ঢল নামতে থাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। কেউ যাত্রীবাহী বাস রিজার্ভ করে, কেউবা ট্রেনে। তবে অধিকাংশ মানুষ দূরদূরান্ত থেকে মাইক্রোবাসে এসেছেন।
ভোর থেকেই নামে শ্রোতাদের ঢল
রাকিবুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, তারা পাবনা থেকে বাসে রাত ৩টার দিকে রওনা হয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। তার দাবি, রাজশাহী বিভাগে আর মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিল নেই। তাকে সরাসরি দেখে তার মুখে ওয়াজ শোনার জন্য সবাই এসেছি।
আরেক মুসল্লি সজিব ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক মাহফিল শুনেছি। মাহফিল শুনতে অনেক ভালো লাগে। কাছে এসে সরাসরি দেখার একটা সুযোগ হয়েছে। তাই এ সুযোগ মিস করতে চায় না। আজহারী সাহেবকে দেখা হবে এবং তার মুখ থেকে মাহফিলও শোনা হবে। আমরা যতটুকু শুনেছি, তিন দিন আগে থেকে এখানে মানুষ আসতে শুরু করেছে। আসলে তার জনপ্রিয়তা আছে বলেই তো এত মানুষ আসছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জনসমাগম বিবেচনা করে দর্শকদের জন্য আটটি মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। আর জেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ঘোড়াস্ট্যান্ডের পাশের আমবাগান মাঠে করা হয়েছে মূল মঞ্চ। এই মূল মাঠ ছাড়াও আশপাশে পুরুষদের জন্য তিনটি ও নারীদের জন্য চারটি আলাদা মাঠের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
মূল মাঠে চারটি প্রজেক্টরসহ সব মাঠে থাকবে প্রজেক্টরের ব্যবস্থা। এ ছাড়া সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের জন্য রয়েছে জেনারেটর। পাশাপাশি ফ্রি ওয়াইফাই, স্যানিটেশন, পর্যাপ্ত সুপেয় পানি, অজুখানার ব্যবস্থা, ইন্টারনেট সচলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া থাকবে ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দল ও মেডিক্যাল ক্যাম্প।
জানা গেছে, জাবালুন নূর ফাউন্ডেশন এই ঐতিহাসিক মাহফিলে সভাপতিত্ব করবেন জাবালুন নুর ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবু জার গিফারী। প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল।
আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য হাফেজ গোলাম রাব্বানী বার্তা২৪.কমকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় ওয়াজ মাহফিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। এ ছাড়া পর্যাপ্ত টয়লেট, পানির ব্যবস্থা, খাবার হোটেল, প্রকাশনা স্টল, মেডিকেল টিম, ও পরিবহন রাখার জন্য প্রায় ১৬টি গ্যারেজের সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ড. মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে পুলিশ। যানজট নিরসনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে এবং জননিরাপত্তায় পুলিশ সদস্যরা নিয়োজিত আছে।
মসজিদে হারামের ইমামদের সঙ্গে বৈঠকে শায়খ সুদাইস, ছবি: সংগৃহীত
ইসলাম
প্রতিবছরের মতো আসন্ন রমজান মাসে মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববিতে তারাবির নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে এই দুই মসজিদের তারাবি ও তাহাজ্জুদ নামাজের ইমামদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
সম্প্রতি এই দুই মসজিদের ইমামদের সঙ্গে রমজান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা পর্ষদের প্রধান শায়খ ড. আবদুর রহমান আস সুদাইস। এ সময় রমজানবিষয়ক কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রকাশিত তালিকা অনুসারে মসজিদে হারামে এবার মোট সাতজন তারাবির নামাজের ইমাম হিসেবে থাকবেন।
প্রতিদিন দুজন করে ইমাম তারাবির ২০ রাকাত নামাজ পড়াবেন। তারা হলেন- শায়খ ড. আবদুর রহমান আস-সুদাইস, শায়খ ড. আবদুল্লাহ আল-জুহানি, শায়খ ড. আল-ওয়ালিদ আল-শামসান, শায়খ ড. ইয়ারিস আল-দাওসারি, শায়খ ড. মাহির বিন হামাদ আল-মুয়াইকালি, শায়খ ড. বান্দার বালিলা, শায়খ বদর আল-তুর্কি। তারা রমজানের শেষ ১০ দিন তাহাজ্জুদের নামাজও পড়াবেন।
আর মসজিদে নববিতে তারাবির নামাজে আট জন ইমাম দায়িত্ব পালন করবেন। তারা হলেন- শায়খ ড. আলী আল-হুজাইফি, শায়খ সালাহ আল বুদাইর, শায়খ ড. খালিদ আল মুহান্না, শায়খ ড. আবদুল্লাহ আল-করাফি, শায়খ ড. আবদুল্লাহ বুয়াইজান, শায়খ ড. মুহাম্মদ বারহাজি, শায়খ আহমদ বিন তালিব, শায়খ ড. আবদুল মুহসিন আল-কাসিম। তারা রমজানের শেষ ১০ দিনের তাহাজ্জুদ নামাজের ইমামতিও করবেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১ মার্চ পবিত্র রমজান শুরু হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে দেশটিতে।
রমজান মাসে বিশ্বের অসংখ্য মুসলিম উমরা পালন করেন। গত বছর এক কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি মুসলিম উমরা পালন করে। এ বছর দুই কোটিরও বেশি মুসল্লির আশা করছে সৌদি আরব।