রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তিন শতাধিক জিম্মি মুক্ত, ৩৩ হামলাকারীসহ নিহত ৫৮

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে জঙ্গিদের দখলে থাকা একটি যাত্রীবাহী ট্রেন থেকে তিন শতাধিক জিম্মিকে মুক্ত করা হয়েছে এবং হামলাকারীসহ মোট ৫৮ জন নিহত হয়েছে।

বুধবার (১২ মার্চ) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, বেলুচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনের অভিযান সম্পন্ন হয়েছে এবং হামলাকারী সবাই এই অভিযানে নিহত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনীর অভিযানে ৩৩ সন্ত্রাসীর সবাই নিহত হয়েছে। এছাড়া ট্রেনের ২১ যাত্রী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর ৪ সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন।

নিষিদ্ধ ঘোষিত বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে যে তারা বিপুল সংখ্যক মানুষকে জিম্মি করেছে। অভিযান শুরুর আগেই বিএলএ ২১ জন বেসামরিক জিম্মি ও চারজন সামরিক সদস্যকে হত্যা করেছে বলে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন। আসন্ন যে কোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় সেনাবাহিনী এখনও ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ এবং যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বিএলএকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। বিএলএ হলো বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে একটি যারা বেলুচিস্তানের জন্য অধিকতর স্বায়ত্তশাসন নয়তো সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দাবি করে আসছে।

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামলার সময় ট্রেনটিতে ৪৪০ জন যাত্রী ছিলেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু জঙ্গি হয়তো ট্রেন থেকে নেমে বেশ কয়েকজন যাত্রীকে তাদের সঙ্গে করে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি অঞ্চলে নিয়ে গেছে।

হামলার সময় যারা পালিয়ে গিয়ে আশেপাশের এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন তাদের খুঁজে বের করার জন্য সেনাবাহিনী কাজ করছে। কতজন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রেনে থাকা অন্তত ১০০ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কর্তৃপক্ষ যদি বেলুচিস্তানের রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি না দেয় তবে জঙ্গিরা জিম্মিদের হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল।

বেলুচিস্তানের দুর্গম অঞ্চলে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার জাফর এক্সপ্রেসে হামলা চালানো হয়। সে সময় ট্রেনের চার শতাধিক যাত্রীকে জিম্মি করা হয়। কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী ট্রেনে নজিরবিহীন এই হামলার ঘটনা ঘটে।

নিরাপত্তা সূত্রের খবর অনুযায়ী, ট্রেনের নয়টি বগিতে ৪০০ জনেরও বেশি যাত্রী নিয়ে কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার পেশোয়ারের দিকে যাচ্ছিল। তখনই এ হামলার ঘটনা ঘটে।

পাকিস্তানে ট্রেনে এ ধরনের বড় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা এটাই প্রথম। এর আগে কখনো পুরো ট্রেনে হামলা চালিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করা বা আক্রমণের ঘটনা ঘটেনি।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা ডনকে জানিয়েছেন, পেশোয়ারের উদ্দেশে স্থানীয় সময় সকাল ৯ টায় কোয়েটা থেকে ছেড়ে যায়। ওই সময় ট্রেনের নয়টি বগিতে ৪৫০ জন যাত্রী ছিল। স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে তারা খবর পায় যে, মুশকাফের কাছে অবস্থিত ৮ নম্বর রেলওয়ে টানেলের কাছে পানীর এবং পেশি রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যবর্তী স্থানে ট্রেনটি হামলার শিকার হয়।