গত বছর দুর্গাপুজোতেও বলিউডের জনপ্রিয় দুই অভিনেত্রী রানি মুখার্জি ও কাজলের সঙ্গে সর্বক্ষণ ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে তাকে। আর আজ হলি উৎসবের আনন্দের দিনে কাছের মানুষকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা দেব মুখার্জি। তিনি বলিউডের জনপ্রিয় পরিচালক অয়ন মুখার্জির বাবা, রানি-কাজলদের চাচা।
বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। মাঝে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। আজ ভোরে নিজের বাসভবনে ঘুমের মধ্যেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।বিকেল ৪টা নাগাদ মুম্বইয়ের ভিলে পার্লেতে পবন হংস শ্মশানে শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হবে।
বিজ্ঞাপন
মুম্বাইয়ে মুখার্জি বাড়ির পুজোতে দেব মুখার্জি ও অয়ন মুখার্জির সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া
১৯৪১ সালের ২২ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের কানপুরে জন্ম হয় দেব মুখোপাধ্যায়ের। বাবা শশধর মুখোপাধ্যায় ছিলেন ফিল্মালয় স্টুডিয়োর মালিক। ‘লাভ ইন সিমলা’-এর মতো উল্লেখযোগ্য ছবি প্রযোজনা করেছিলেন তিনি। দেবের মা সতীদেবী মুখোপাধ্যায় ছিলেন কিংবদন্তী অভিনেতা অশোক কুমার, অনুপ কুমার এবং কিশোর কুমারের বোন। দেবের দাদা ছিলেন কাজলের বাবা সমু মুখোপাধ্যায়।
দেব নিজেও অভিনেতা ছিলেন। ‘আঁসু বন গয়ে ফুল’, ‘কিং আঙ্কেল’, ‘কামিনে’ এবং ‘ম্যায় তুলসী তেরে অঙ্গন কি’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। যদিও অভিনেতা হিসাবে তেমন সাফল্য পাননি দেব। ছেলে অয়ন অবশ্য পরিচালক হিসাবে বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
সাদিয়া আয়মান, পারসা ইভানা, ইভান শাহরিয়ার সোহাগ, সাফা কবির ও সামিরা খান মাহি
বিনোদন
ইত্যাদি মানেই চমক এবং নান্দনিক মান। সাথে থাকে ব্যাপক ও বর্ণিল আয়োজন। আর ঈদের ইত্যাদি হলে সেই চমক যেন আরও কয়েক গুণ বেড়ে যায়। তারমধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় তারকার নাচ। বিগত অনেক বছর ধরে এই নাচগুলোর কোরিওগ্রাফি, সেট, পোশাক, সাজ-সজ্জা এবং তারকা নির্বাচনের মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করে আসছেন জনপ্রিয় কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগ।
ইত্যাদির নাচ মানেই বর্ণাঢ্য আয়োজন, বাড়তি আকর্ষণ এবং ভিন্নমাত্রা। প্রতিবারই চেষ্টা করা হয় নাচের মিউজিক, বিষয়, চিত্রায়ণে বৈচিত্র্য আনতে। এবারের ঈদ ইত্যাদিতেও একটি ভিন্ন আঙ্গিকের নাচের আয়োজন রয়েছে। আর এই নাচটিতে অংশগ্রহণ করেছেন এই সময়ের জনপ্রিয় চার টিভি অভিনেত্রী সাফা কবির, সাদিয়া আয়মান, সামিরা খান মাহি ও পারসা ইভানা। তাদের সঙ্গে রয়েছে নাচটির নৃত্য পরিচালক ইভান শাহরিয়ার সোহাগের একদল নৃত্যশিল্পী।
Caption
ইভান শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, ‘ইত্যাদির ঈদ অনুষ্ঠানের নাচটি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে করা হয়েছে। সময়ের জনপ্রিয় তারকারা এতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। নৃত্যশিল্পী না হলেও নৃত্যজ্ঞান আছে এমন জনপ্রিয় শিল্পীদেরও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নৃত্য করানো হয়। আশা করি এবারের নাচটিও দর্শক পছন্দ করবেন। কারণ এই আয়োজনের মাধ্যমে সাদিয়া আয়মানকে প্রথমবার প্রপার আয়োজনে নাচতে দেখা যাবে। সাফা, মাহি আর ইভানাকেও একটু ভিন্নভাবে দেখবেন দর্শক।’
ইত্যাদি কতৃপক্ষ জানায়, সবসময় যে ধরনের নাচ এবং নাচের মিউজিক শুনে দর্শক অভ্যস্ত ইত্যাদির নাচগুলিকে তার চাইতে একটু ব্যতিক্রমী করতে চেষ্টা করা হয়। নাচটিকে ফুটিয়ে তোলার জন্য শিল্পীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। নিয়মিত মহড়া দিয়েছেন। অংশগ্রহণকারী সবাই ছিলেন নাচটির ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। এ ধরণের নূতন নূতন বিষয়ে নৃত্য পরিবেশন করতে পেরে শিল্পীরাও আনন্দিত। নৃত্যশিল্পীরাও নেচেছেন দুর্দান্ত। যে কারনে সবকিছু মিলিয়ে বলা যায়-এবারে ঈদের ইত্যাদির এই নাচটি হবে অসাধারন।
Caption
হানিফ সংকেতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে নাচটির সংগীত পরিচালনা করেছেন তরুণ সংগীত পরিচালক আকাশ মাহমুদ। এবারের নাচের মিউজিকটিতে রয়েছে ক্লাসিক্যাল, ফোক, অ্যারাবিক ও আধুনিক কম্পোজিশানের সংমিশ্রণ। মিউজিকে যেমন নুতনত্ব রয়েছে তেমনি নাচের কম্পোজিশনেও রয়েছে বৈচিত্র্য।
প্রতিবারের মত এবারও ঈদের বিশেষ ইত্যাদি বিটিভিতে প্রচারিত হবে ঈদের পরদিন রাত ০৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। স্পন্সর করেছে কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।
Caption
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’-এর দৃশ্য
বিনোদন
গুণী নির্মাতা শিহাব শাহিনের সুপারহিট ওয়েব সিরিজ ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’-এ জটিল মানসিকতার এক নারীর চরিত্রে সুক্ষ অভিনয়ের জন্য সে সময় দারুণ প্রশংসা কুড়ান দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। কারণ তিনি দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা ইমেজ ভেঙে নতুন আঙ্গিকে হাজির হয়েছিলেন সিরিজটিতে।
’মাইশেলফ শামসুর রহমান স্বপন, ওরফে অ্যালেন স্বপন’– সংলাপ দিয়ে শেষ হয়েছিল ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির জনপ্রিয় ওয়েব সিরিজ ’মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। রহস্য রেখে শেষ হয়েছিল সিরিজটি। শেষ দৃশ্যে মুখ ঢাকা একজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন স্বপন। কে সেই মুখ ডাকা মানুষ? কেনই বা স্বপনকে খুঁজছিলেন তিনি? এমন আরও কিছু প্রশ্ন রেখে শেষ হয়েছিল ’অ্যালেন স্বপন’কে নিয়ে নির্মিত প্রথম সিরিজ। সেসব জট এবার খুলতে যাচ্ছে।
চলে এসেছে ’মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২’– এর ঘোষণা। ১৪ মার্চ দুপুরে চরকির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে সিজন–২ মুক্তির বিষয়ি নিশ্চিত করা হয়েছে। ঈদুল ফিতরেই সিরিজটি দেখতে পারবেন দর্শকরা। অ্যানাউন্সমেন্ট ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অনেক টাকার মধ্যে দাঁড়িয়ে অ্যালেন স্বপন। মুখে তার চিরচেনা হাসি আর পরনে সাফারি।
’মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২’– এ নাসির উদ্দিন খান
ভিডিওতে চট্টগ্রামের ভাষায় একজনকে বলতে শোনা যায়, ’আমার চারশো কোটি টাকা কোথায়? এর পরেই মুখ খোলেন অ্যালেন স্বপন, বলেন, ’আপনাদের কারণে বাইরে আসতেই হলো আমার। মাইশেলফ শামসুর রহমান স্বপন, ওরফে অ্যালেন স্বপন’। সিরিজে ৪০০ কোটি টাকার রহস্য এখনও অধরা। এত পরিমাণ টাকা কার এবং এবং কোথায় লুকানো আছে, সেটিও একটি বড় প্রশ্ন হয়ে আছে দর্শকদের মনে।
চট্টগ্রামের মাদক ব্যবসায়ী থেকে স্বপন কীভাবে হয়ে ওঠে মানি লন্ডারিংয়ের মূল হোতা, সেই গল্প নিয় গড়ে উঠেছিল ’মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ সিরিজের প্রথম সিজন। নতুন সিজনে বাড়তে পারে স্বপনের কাজের পরিসর; বদলাতে পারে কাজের ধরনও।
’অ্যালেন স্বপন’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান। নতুন সিরিজ নিয়ে তার ভাষ্য, ’অ্যালেন স্বপন চরিত্রটা অনেকেরই দেখা। তারা জানেন এটা একটা মন্দ চরিত্র। নতুন সিজনে চরিত্রটি আরও ভয়ংকর রূপে হাজির হতে যাচ্ছে। আর চরিত্রটির যে দুষ্টু স্বভাব তার ধারাবাহিকতা থাকবে নতুন সিজনেও। সব মিলিয়ে চরিত্রটির নতুন আঙ্গিকে আরও বড় পরিসরে আসছে দর্শকদের সামনে।
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
মিথিলা বলেন, ‘প্রথম সিজনের মতো এবারও আমরা দারুণ একটি গল্প নিয়ে হাজির হবো। আশা করছি এবারও দর্শক সিরিজটি খুব পছন্দ করবেন। কারণ টিমের প্রতিটি লোক দারুণ দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছেন। তবে এখনই সিরিজের গল্প কিংবা আমার চরিত্রের কোন বাঁক আছে তা জানাতে চাই না। এতে মজা নষ্ট হয়ে যাবে।’
চরকি অরিজিনাল সিরিজ ’সিন্ডিকেট’–এর একদম শেষভাগে সবার সামনে আসেন অ্যালেন স্বপন। ’সিন্ডিকেট’ থেকে নির্মিত হয় দেশের প্রথম স্পিনঅফ সিরিজ ’মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’। দুটি সিরিজই নির্মাণ করেন শিহাব শাহীন। তিনিই নির্মাণ করছেন অ্যালেন স্বপনের দ্বিতীয় সিজনটি।
নির্মাতা শিহাব শাহীন বলেন, ”’মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন ২’ নির্মাণের অভিজ্ঞতা সত্যিই চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জগুলোই আমাকে নতুনভাবে অনেককিছু ভাবতে শিখিয়েছে। প্রথম সিজনের সফলতার পর, দ্বিতীয় সিজন নিয়ে দর্শকদের নানা রকম প্রত্যাশা থাকে। আশা করছি নিরাশ হবেন না। খুবই প্রাসঙ্গিকভাবে গল্প ও চরিত্র এগিয়েছে। সবকিছুর পরিসর আরও বড় হয়েছে। যখন গল্প লিখি তখন চরিত্রগুলোর মধ্যে সম্পর্কের জটিলতা এবং নাটকীয়তা রাখা ছিল কঠিন, একইসঙ্গে আনন্দদায়ক।”
নির্মাতা শিহাব শাহীন
‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’ সিরিজটির প্রথম সিজন এত জনপ্রিয় হয় যে, ২০২৩–এ চরকিতে সিরিজটি মুক্তির পর আট দিনে দুই কোটি মিনিট স্ট্রিমিং হয়। এমনকী, মাত্র ১০০ ঘণ্টায় এক কোটি মিনিট স্ট্রিমিংয়ের রেকর্ড গড়ে ’অ্যালেন স্বপন’। চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রেদওয়ান রনি বলেন, ’ওটিটি ইন্ডাস্ট্রির জন্য এ ডেটাগুলো গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ অ্যালেন স্বপনকে নিয়ে দর্শকদের উচ্ছ্বাস–উন্মাদনা। তাদের এই ভালোবাসাই আমাদের নতুন সিজন নির্মাণ করতে অনুপ্রাণিত করে। অ্যালেন স্বপন ২ তে দর্শকরা যেন নতুন কিছু পায় এবং তাদের প্রত্যাশা যেন পূরণ হয়, সেভাবেই কাজ হয়েছে। গল্প ও চরিত্রায়নে থাকছে চমক। আমার বিশ্বাস নতুন সিজনে দর্শকরা তাদের প্রিয় সিরিজ–চরিত্রকে আরও দুর্দান্তভাবে পাবে। ঈদেই আসছে সিরিজটি, দর্শকদের মাঝে স্বনামে ফিরবে অ্যালেন স্বপন।’
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
২০২২ সালের ঈদুল আজহায় মুক্তি পায় আলোচিত চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘সিন্ডিকেট’। তারই চরিত্র ছিল অ্যালেন স্বপন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় দেওয়া বেশ কিছু সংলাপ ও দারুণ অভিনয় দিয়ে চরিত্রটি পায় দর্শকপ্রিয়তা। ২০২৩ সালে মুক্তি পায় ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’– এর প্রথম সিজন।
সব সময়ই নিজের কাজ আর অভিনয় দিয়ে চমকে দেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। কখনো বাংলাদেশ, কখনো ভারতে- জয়ার প্রশংসা সর্বত্র। দিনে দিনে নিজেকেই ছাপিয়ে যাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকটায় টেলিভিশন নাটকের ভীষণ জনপ্রিয় মুখ ছিলেন। তবে তিনি যে অভিনয়ে কতটা পারদর্শী, সেই নজির স্থাপন করেছেন বড় পর্দায়। এবার সেই জয়াকে অন্যরূপে দেখতে চলেছেন ভক্তরা।
প্রথমবারের মতো ওয়েব সিরিজে (মূখ্য চরিত্রে, এর আগে তিনি দু-একটি সিরিজে অতিথি চরিত্রে কাজ করেছেন) অভিনয় করেছেন দুই বাংলার নন্দিত এই অভিনেত্রী। তার প্রথম সিরিজটির নাম ‘জিম্মি’। পবিত্র ঈদুল ফিতরে হইচইতে মুক্তি পাচ্ছে সিরিজটি। দর্শকের জন্য আরও আস্থার জায়গা হলো, সিরিজটি নির্মাণ করেছেন আশফাক নিপুন। যিনি সাম্প্রতিক সময়ে ওটিটিতে দুর্দান্ত সব কাজ উপহার দিয়ে দর্শকের মনে আলাদাভাবে জায়গা করে নিয়েছেন। আসছে ২৮ মার্চ সিরিজটি মুক্তি পাবে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে হইচই। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মুখ্য চরিত্রে এটিই জয়া আহসানের প্রথম কোনো ওয়েব সিরিজ।
‘জিম্মি’ ওয়েব সিরিজের দৃশ্যে জয়া আহসান
‘জিম্মি’ সিরিজে কেন অভিনয় করেছেন? এমন প্রশ্নে জয়া আহসান বলেন, ‘‘আমি নতুন কোনো কাজ করার আগে তিনটা বিষয় সব সময় খেয়াল করি। সেটা হলো- গল্প, চরিত্র ও পরিচালক। ‘জিম্মি’র ক্ষেত্রে এগুলো সব মনমতো মিলে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে আমার ওয়েব সিরিজের শুরুটা করছি হইচই-এর সাথে, মুক্তি পাবে ঈদে- সব মিলিয়ে আমার জন্য বিষয়টা বেশ রোমাঞ্চকর।’’
‘মহানগর’খ্যাত নির্মাতা আশফাক নিপুন বলেন, ‘‘আমি ‘জিম্মি’তে নতুন রকমের গল্প বলার চেষ্টা করেছি। এই সিরিজে সামাজিক বাস্তবতা, মানবিক অনুভূতি ও বিনোদনের মেলবন্ধন রয়েছে। এইটুকু বলতে পারি, দর্শক অবশ্যই নতুন কিছু উপভোগ করবে।’’
জয়া আহসানের সঙ্গে প্রথম কাজ, সেই অভিজ্ঞতা কেমন ছিল জানতে চাইলে নিপুন বলেন, ‘জয়া আহসান দারুণ ও পরীক্ষিত একজন অভিনেত্রী। গল্পের প্রয়োজনে আমরা এমন একজন অভিনয়শিল্পী চেয়েছিলাম, যার অভিব্যক্তি ও অভিনয়গুণে চরিত্রটি জীবন্ত হয়ে উঠবে। তিনি আমাদের সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছেন।’
নির্মাতা আশফাক নিপুন
এর আগে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচই থেকে ‘জিম্মি’র একটি প্রাথমিক গল্প জানানো হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। এটা পরিষ্কার যে ‘জিম্মি’তে একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন চরিত্রে হাজির হচ্ছেন অভিনেত্রী। গল্পে দেখা যাবে সরকারি নিম্নপদস্থ কর্মচারী। এক দশক ধরে তার কপালে জোটেনি কোনো প্রমোশন। স্বামী-স্ত্রীর টানাটানির সংসার। তবু তিনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী। একদিন অফিসের স্টোররুমে বড় অঙ্কের টাকার বাক্স পান ওই নারী। এরপরই তার জীবনে শুরু হয় নতুন টানাপোড়েন। জয়ার পরিণতি কী হয় তা দেখতে হলে সিরিজটির মুক্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে দর্শকদের। তবে জয়ার পাশাপাশি সিরিজের অন্য অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নাম এখনো জানায়নি হইচই কিংবা পরিচালক আশফাক নিপুণ।
জয়া আহসান
দেশীয় নাটকে সিন্ডিকেট নতুন কিছু নয়। প্রতিষ্ঠিত অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে গুটিকয়েক শিল্পী রয়েছেন যারা তাদের গন্ডির বাইরে কারও সঙ্গে অভিনয় করতে চান না। এরমধ্যে যেমন নায়ক রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন নায়িকাও। নির্মাতারা নায়ক কিংবা নায়িকা যে কোনো একজনকে নিলে নিজেরাই জুটি হিসাবে কাকে নিতে হবে সেটা ঠিক করে দেন।
সিন্ডিকেটের বিষয় নিয়ে নানা সময় অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রীই বিভিন্ন কথা বলেছে। এবার ছোট পর্দার নায়কদের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুললেন অভিনেত্রী তাসনুভা তিশা। তিনি অভিযোগ করেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নাটকের সবকিছু নায়কদের সিদ্ধান্তেই হচ্ছে। এমনকি তিনিও শিডিউলের জন্য পরিচালক নয়, নায়কদের কাছ থেকে ফোন পান।
তাসনুভা তিশা । ছবি: ফেসবুক
তাসনুভা তিশা বলেন, ‘মেকআপ আর্টিস্ট, ডিওপি, লাইটে কাকে নিবে, শুটিং কোথায় হবে, গল্প কী হবে, মায়ের চরিত্রে কে অভিনয় করবেন, বাবার চরিত্রে কে থাকবেন—নাটকের সবকিছু নায়কেরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বা ঠিক করে দিচ্ছে। এটা তো তাদের কাজ না, পরিচালকের কাজ। গল্পের চরিত্রের প্রয়োজনে যাকে ভালো মনে করবেন, তাকেই পরিচালক ডাক দেবেন। কিন্তু আমাকে কলটা দিচ্ছেন নায়কেরা।’
এই অভিনেত্রী মনে করেন, নায়কদের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলেই তারা স্বেচ্ছাচারিতা করার সুযোগ পাচ্ছেন। তিশা বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, ইন্ডাস্ট্রিতে এমন হচ্ছে, কারণ তাদের কাছে সেই ক্ষমতাটা দেওয়া হয়েছে। এটা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঠিকভাবে কাজ করতে পারব না।’
তাসনুভা তিশা । ছবি: ফেসবুক
ইন্ডাস্ট্রির এমন অবস্থায় ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত এই অভিনেত্রী। তিশা বলেন, ‘এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে কাজ করা কষ্টকর হয়ে যাবে। প্রতিদিন আমার মনে হয় অন্য কিছু নিয়ে ভাবা উচিত। অন্য কোনো ক্যারিয়ার হয়তো বেছে নিতে হবে, এভাবে কাজ করা যায় না। যাদের ন্যূনতম আত্মসম্মানবোধ আছে, তাদের তো গায়ে লাগার কথা। আমার চাওয়া, পরিচালকই আমার শিডিউল নেবেন, তিনিই গল্প নির্বাচন করবেন। নায়ক কেন এসব বিষয়ে মাথা ঘামাবে। চিত্রনাট্যে যা লেখা আছে, সে সংলাপই বলা উচিত। গল্পের প্রয়োজনে পরিবর্তন করতে হলে সেটা আলোচনা করে করতে হবে। কেন নায়কের সিদ্ধান্তেই সব হবে! অভিনেত্রী হিসেবে এই বিষয়গুলো আমার আত্মসম্মানে আঘাত করে, মন খারাপ হয়।’
তাসনুভা তিশা । ছবি: ফেসবুক