স্নাতক ফলাফল ছাড়াই রাবিতে প্রথম শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগ

  • রাবি করেসপন্ডেট, বার্তা ২৪.কম, রাজশাহী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

স্নাতক চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশের আগেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইসিটি সেন্টারে একজনকে অ্যাডহক ভিত্তিতে প্রথম শ্রেণির চাকরি দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব।

গত ১৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের অফিস আদেশ ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, ১৮ নভেম্বর এক অফিস আদেশে মোমেন খন্দকার অপি নামের একজনকে নিয়োগ দেয় প্রশাসন। তবে তখন তার স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়নি।

বিজ্ঞাপন

মোমেন খন্দকার বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিয়োগের প্রায় এক মাস পর ১২ ডিসেম্বর তার চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। এতে তিনি সিজিপিএ ৩.২০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

অফিস আদেশে অনুযায়ী, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারে সহকারী প্রোগ্রামার পদে টাকা ২২০০০-৫৩০৬০/- (বাইশ হাজার) টাকা বেতনে সহকারী প্রোগ্রামার পদে অ্যাডহক ভিত্তিতে ৬ (ছয়) মাসের জন্য নিয়োগ করা হলো। এ নিয়োগ যোগদানের তারিখ থেকে কার্যকর হবে।’

বিজ্ঞাপন

সহকারী প্রোগ্রামার পদের নিয়োগ যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ইফতিখারুল আলম মাসউদ জানান, সহকারী প্রোগ্রামার পদটি সেকশন কর্মকর্তা পদমর্যাদার। অর্থাৎ প্রথম শ্রেণির চাকরি। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা নিয়োগের প্রথম ধাপ। এ পদে নিয়োগের জন্য ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হয়।

এবিষয়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তা মোমেন খন্দকার বলেন, ‘স্নাতক পরীক্ষার পর গত নভেম্বরে আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। আমি তখন যোগদান করেছি। আমাদের অফিশিয়াল ফলাফল বের হতে দেরি হয়েছে। তবে আমি আন-অফিশিয়াল ডকুমেন্ট দেখিয়েছি।’

তবে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. রোকানুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। কখনো আন-অফিশিয়াল ফলাফল প্রকাশ হয় না। শিক্ষার্থীদের মধ্যে কারও ইমপ্রুভমেন্ট ইস্যু বা হলের সিটের আবেদনের জন্য হলে তাঁকে এ বিষয়ে জানানো হয়। তবে কেউ যদি চাকরির মতো জায়গায় এটি ব্যবহার করে, তাহলে আমি দায়িত্ব নেব না। চাকরির ক্ষেত্রে আমরা বলি, সে ফলাফলের অপেক্ষায় (অ্যাপিয়ার্ড) রয়েছে।’

নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘বিষয়টি আমি সম্পূর্ণ আইসিটি সেন্টারের পরিচালকের এখতিয়ারে ছেড়ে দিয়েছিলাম। নিয়মকানুনের বিষয়ে আমি রেজিস্ট্রার ও আইসিটি সেন্টারের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলব। বিষয়টি আমি দেখছি।’

এ ব্যাপারে আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ছাইফুল ইসলাম বলেন, ‘অ্যাডহক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো সীমাবদ্ধতা আছে বলে আমার জানা ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য জরুরি ভিত্তিতে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর ওই রকম যোগ্য কোনো প্রার্থীও পাওয়া যায়নি। তবে যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আমাদের বিভাগের সবচেয়ে ভালো প্রোগ্রামার। ছাত্র অবস্থাতেই তার দুই বছরের অভিজ্ঞতা ছিল। সেই হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া আর কিছু করার ছিল না।