সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (জাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে ৩৮ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি প্রকাশ করা হয়।
কমিটিতে সমাজকর্ম বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শাকিল আহমেদকে আহ্বায়ক ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের জীনাত মিয়া আজিজুল কে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে এ কে এম আবদুল্লাহ আল মাসুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক, আমির হামজা, ইকরাম হোসেন, জাকিরুল ইসলাম জাকির, মিয়াদ ইসলাম নিয়ন, দেওয়ান মোর্শেদ উর রহমান, মাহিন আল সৌরভ, শাকিল হোসাইন, কামরুল হাসান জয়, ফারুক হোসেন, আমিনুর রহমান আমিন, মো. সিয়াম আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম, এ এস এম তৌফিকুর রহমান, ফয়সাল আহমেদ এবং আবিদা হক মিলা।
কমিটির সদস্যরা হলেন, সাখাওয়াত হোসেন জিকু, ইফতে খায়রুল ইফতি, মো. আমান উল্লাহ, মো. রিয়াদ হাসান, মাহবুবুর রহমান তামিম, মো. জোবাইদ হোসাইন, মো. শাহরিয়ার হোসাইন, রাকিব খান, জোবায়ের হোসেন, হুমায়ুন কবির, নাহিন আহমেদ, চিরঞ্জিত কুমার রায়, রবিউল হাসান রিমন, সাফিন আহমেদ, তৌসিফ আহমেদ তন্ময়, সাদ ইবনে ওয়িদ, মামুন আহমেদ, অর্পণ চাকলাদার, সিফাত হাসান সচ্ছ, সিমান্ত স্যানাল। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, আহ্বায়ক, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের যৌথ স্বাক্ষরে হল ও ডিপার্টমেন্ট কমিটি অনুমোদিত হবে।
এদিকে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্র রাজনীতি চান না। ঐ শিক্ষার্থীরা মনে করেন দলীয় ছাত্র সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (জাবিপ্রবিসাস) অনলাইন জরিপের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
অনলাইন জরিপে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭টি বিভাগের ২৫৬ জন শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। জরিপ অনুযায়ী ৯১ শতাংশ তথা ২৩৫ জন শিক্ষার্থী মনে করেন ক্যাম্পাসে দলীয় ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন নেই ৷ এর বিপরীতে ৮ শতাংশ তথা ২১ জন শিক্ষার্থী দলীয় ছাত্ররাজনীতির পক্ষে মত দেন।
রাজনীতি নিষিদ্ধ জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কমিটি দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে শিক্ষার্থীরা জানায়, ইতোপূর্বে আমরা ছাত্রলীগের যে পৈশাচিক রূপ দেখেছি সেটা আর দেখতে চাই না। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী সব সময় ভুক্তভোগী। আমাদের দেশের যে অসুস্থ ও লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি তা শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে না। হোক সেটা ছাত্রদল বা ছাত্রশিবির, ছাত্রলীগ। আমাদের ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ তাই ভিসি স্যারের কাছে অনুরোধ করবো উনি যেন সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রোকনুজ্জামানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি বেশ জোরালো হলে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণী ব্যক্তিবর্গের সাথে জরুরি আলোচনার ভিত্তিতে ভাইস-চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে রেজিস্ট্রারের সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সকল ধরণের রাজনৈতিক সংগঠন, ছায়া সংগঠন এবং এর কার্যক্রমের সাথে সম্পর্ক ও সম্পৃক্ততা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।