বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের মানুষের পকেট ব্যয় আফগানিস্তানের চেয়েও খারাপ। স্বাস্থ্যখাতে এত কম বাজেট বিশ্বের আর কোথাও নেই।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানা সংলগ্ন কিং অব চিটাগাং এ পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) চট্টগ্রাম শাখার উদ্যোগে চিকিৎসক সমাবেশ ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশে এখন একটি বড় ধরনের পরিবর্তন সবাই প্রত্যাশা করছে। সে পরিবর্তন ডাক্তারদের কাছ থেকেও আসতে হবে। যারা প্র্যাকটিস করেন, হাসপাতালে আছেন বা যেখানেই আছেন সবাই সহযোগিতা করেন, এ পরিবর্তন সম্ভব। বাজেটে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে জিডিপির এক শতাংশের আশেপাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও চমেক ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. ফয়েজুর রহমান, জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক ডা. ইফতেখারুল ইসলাম লিটনের পরিচালনায় এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও ড্যাবের উপদেষ্টা ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, মহাসচিব ডা. আবদুস সালাম।
আমীর খসরু বলেন, প্রথমত, বাংলাদেশে ৫ আগস্ট ও শেখ হাসিনার পলায়নের পর মানুষের মনোজগতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। সে পরিবর্তন বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাদের প্রত্যাশা কিন্তু অনেক বেশি। এজন্য রাজনীতিবিদ, ডাক্তার, পেশাজীবী সকলের প্রতি এত প্রত্যাশা মানুষের এখন। এটা অনুধাবন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে সেসব মানুষের মনোজগতের কথা ধারণ করতে হবে। সেভাবে আমাদের রাজনীতিতে যদি ডাক্তার পেশাজীবীদের কার্যক্রম গুণগত পরিবর্তন আমরা করতে না পারি, তাহলে আমরাও কিন্তু বেশিদিন টিকে থাকতে পারব না।
তিনি বলেন, বিশেষ করে ডাক্তারদের আমি বলবো, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের অবস্থা খুবই খারাপ। এটা আপনারা আরও ভালো জানেন। বাংলাদেশের বর্তমান যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, সেখান থেকে যদি ঘুরে দাঁড়াতে হয় তাহলে আমাদের আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা দরকার।
আমীর খসরু বলেন, আমরা বলেছি, স্বাস্থ্যখাতে জিডিপি ১ শতাংশ থেকে ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করব। কিন্তু আপনাদের ডাক্তার রাজনীতিবিদদের সংস্কৃতি পরিবর্তন না করলে কোনোকিছু কাজ করবে না। আমাদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে যাতে পরিবর্তনের সঙ্গে আমরা তাল মিলিয়ে চলতে পারি। আমাদের পেশাজীবী, রাজনীতিবিদদের যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনাদের ভূমিকার মাধ্যেমে আমরা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসব। এ ব্যাপারে নিঃসন্দেহে থাকতে পারেন। বাজেট আসবে, আইনগত পরিবর্তন আসবে। সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে।
প্রধান বক্তা ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বাংলাদেশই হচ্ছে একমাত্র দেশ যেখানে স্বাস্থ্য খাতে বাজেট সবচেয়ে কম। বাজেট মাত্র দুই থেকে তিন শতাংশ। এই বাজেট দশ থেকে বার শতাংশে আসা উচিত। আমরা মনে করি, আগামীতে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে স্বাস্থ্য খাতে বাজেট দশ থেকে বার শতাংশ ডাক্তার সমাজকে উপহার দেব।
বিশেষ অতিথি ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, আগামী দু এক মাসের মধ্যে ড্যাবের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। যারা বিগত ১৭ বছর মাঠে কাজ করেছে তাদেরকেই কমিটিতে আনা হবে। পাঁচ আগস্টের আগে যারা কমিটির সদস্য ছিল সেখান থেকে ভোটার করে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে।
এতে বক্তব্য রাখেন ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সি. সহ সভাপতি ডা. আবদুস সেলিম, চট্টগ্রাম জেলা ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী, মহানগর ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. আব্বাস উদ্দীন, কেন্দ্রীয় ড্যাবের সহ সভাপতি শফিউল আলম জিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সাইফুদ্দিন নিসার আহমেদ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল আলম নিপ্পন, কোরান তেলোয়াত করেন ইমরান হোসেন।