হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সব সময় উম্মতের মুক্তি ও নাজাতের চিন্তায় থাকতেন। তাদের সওয়াবের পাল্লা কিভাবে ভারী হয়, সে কথা বাতলে দিতেন। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা চারটি কাজ বেশি বেশি করো।
এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত সালমান (রা.) সূত্রে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চারটি কাজ বেশি বেশি করো। দুটি কাজ এমন- যার মাধ্যমে তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারবে। আর দুটি কাজ এমন- যা করা ছাড়া তোমাদের উপায় নেই; তোমাদের অবশ্যই করতে হবে।’ -সহিহ ইবনে খোজায়মা: ১৭৮০
যে দুই আমলে আল্লাহ খুশি হন
এক. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বেশি বেশি পাঠ করা। এটি আল্লাহতায়ালার কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয় একটি আমল। যার অর্থ হলো- আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনিই সব, সব ক্ষমতা তার, সব প্রশংসা তার, সব কিছুই তার। আর ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তো সেই কালেমা, যার স্বীকার আর অস্বীকারের মাধ্যমে ঈমানদার আর কুফরে পার্থক্য হবে। সৃষ্টিজগতের প্রত্যেক মানুষের জীবনে এ কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ প্রভাবই বেশি।
এর ওপর নির্ভর করে সব পুরস্কার ও তিরস্কার। এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত মুয়াজ বিন জাবাল (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যার সর্বশেষ কথা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ হবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ -সুনানে আবু দাউদ: ৩১১৬
দুই. ইস্তেগফার পড়া। বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়া সফল মুমিনের অন্যতম গুণ। মানুষ শয়তানের ধোঁকা, নফসের প্ররোচনা ও পরিবেশের কারণে গুনাহের কাজে জড়িয়ে থাকে, আর এই গুনাহ থেকে নিজেকে পবিত্র করার বড় মাধ্যম হলো- ইস্তেগফার। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল।’ -সুরা নুহ: ১০
তিন. জান্নাত চাওয়া। জান্নাত মুমিনের চিরস্থায়ী সুখের আবাস। সব মুসলমানের মনের একান্ত আকাঙ্ক্ষা হলো, চির সুখের জান্নাতে প্রবেশ করা। তাই মাহে রমজানের পবিত্র সময়ে আল্লাহতায়ালার কাছে বেশি বেশি জান্নাত প্রার্থনা করা।
চার. জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া। যাপিত জীবনে মানুষ যা-ই করুক, কেউ জাহান্নামে যেতে চায় না। এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে জাহান্নামে যেতে চায়।
আল্লাহতায়ালা নিজেও চান না মানুষ জাহান্নামে যাক। সে কারণে যেসব কাজ জান্নাতের অন্তরায় তা থেকে বেঁচে থাকা, আল্লাহতায়ালার কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রার্থনা করা।
রমজান হলো, আল্লাহতায়ালার কাছে বেশি বেশি চাওয়ার মাস। আর উপরিউক্ত চার কাজের তিনটিই হলো চাওয়ার। ক্ষমা, জান্নাত, জাহান্নাম, আরেকটি হলো পড়ার- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
আল্লাহতায়ালা সবাইকে রমজানে এই চার আমল বেশি বেশি করার তওফিক দান করুন।