করোনা মহামারির কারণে কয়েক বছর আগে মক্কার মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববিতে তারাবি নামাজকে ২০ রাকাত থেকে কমিয়ে ১০ রাকাত করা হয়। করোনাকাল শেষে মহামারির সব ধরনের বিধি-নিষেধ উঠে যাওয়ার পরও আগের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। পবিত্র দুই মসজিদের অনুকরণে সৌদি আরবের অনেকে মসজিদে ১০ রাকাত তারাবি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যদিও সরকারিভাবে এটা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ঘোষণার কথা জানা যায়নি।
তব মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববি অর্থাৎ হারামাইনে তারাবি ১০ রাকাত করায় ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দসহ বিশ্বের বিভিন্ন ইসলামি কেন্দ্র থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিশেষ করে এবার হারামাইনে তারাবির ১০ রাকাত ঘোষণার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে মুসলিম বিশ্ব। তবে কোনো কথায় কান না দিয়ে সৌদি সরকার নিজেদের হঠকারি সিদ্ধান্তে অটল।
এদিকে ২০২৪ সালের এ বিষয়ে এক বিবৃতি দেয় দারুল উলুম দেওবন্দ। বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা আবদুল খালেক মাদ্রাজি বলেন, মক্কা ও মদিনা শরিফ সব মুসলমানের ভালোবাসা ও ভক্তির কেন্দ্রস্থল। এই পবিত্র স্থানগুলোতে সর্বদা চলে আসছে ২০ রাকাত তারাবির জামাত। সৌদি সরকার কয়েক বছর ধরে ১০ রাকাত কমিয়ে মাত্র ১০ রাকাত করেছেন। তখন দারুল উলুম দেওবন্দ এ বিষয়ে (২৮ এপ্রিল ২০২১) সৌদি সরকারের কাছে লিখিত একটি আরবি বক্তব্য পাঠিয়ে এর তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন।
মাওলানা আবদুল খালেক মাদ্রাজি আরও বলেন, এখন বিশ্ব করোনা মহামারির সংকট থেকে বেরিয়ে এসেছে। সর্বত্র বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে, এমনকি সৌদি আরবেও করোনার সমস্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। এরপরেও মক্কা ও মদিনা শরিফে ২০ রাকাত তারাবির পরিবর্তে ১০ রাকাত তারাবি নিঃসন্দেহে আমাদের কলিজায় ছুরি চালানোর মতো।
তিনি বলেন, এই দুই পবিত্র জায়গায় হকপন্থী অন্যান্য মাসলাক ও মাজহাব উপেক্ষা করে যেকোনো বিষয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ঠিক নয়। তাই আমরা সৌদি সরকারের কাছে আবেদন করছি অবিলম্বে মক্কা ও মদিনায় আগের মতো ২০ রাকাত তারাবি নামাজের জামাত চালু করা হোক।
সৌদি সরকারের সিদ্ধান্তকে অবৈধ ও ভুল অখ্যায়িত করে মাওলানা মাদ্রাজি বলেন, এই সিদ্ধান্ত ভারত উপমহাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মুসল্লিদের মানসিক যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতএব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।
তিনি এ বিষয়ে অন্যান্য মুসলিম সংগঠনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং সৌদি দূতাবাসের মাধ্যমে সৌদি আরব সরকারের কাছে স্মারকলিপি পাঠাতে বলেছেন।