যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ না নেওয়ার নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলামকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন পিপিএম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার সকালে যাত্রীদের অভিযোগের ভিত্তিতে বড়াইগ্রাম থানামোড় এলাকা থেকে একটি বাস জব্দ এবং চালক-হেলপারকে আটক করে পুলিশ। ওই যাত্রীরা অভিযোগ করেন চালক-হেলপারের সযোগিতায় ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের একটি বাস ঢাকার গাবতলী থেকে থেকে রাজশাহীগামী বাসটিতে চন্দ্রা থেকে ৮ জন যাত্রীবেশী ডাকাতদল উঠেন। তারা চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের মীর্জাপুর এলাকার মধ্যে সকল যাত্রীর নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল লুট ও দুই নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানি করে মীর্জাপুরের একটি তেল পাম্পে বাসটি থামিয়ে ডাকাতরা নেমে যায়। এরপর চালক-হেলপান বাসটি রাজশাহী নিতে অস্বীকৃতি জানায়। যাত্রীরা ঐক্যব্ধ হয়ে চাপ সৃষ্টি করলে চালক বাস নিয়ে রওনা হয়। পথে বড়াইগ্রাম থানা মোড় এলাকায় পৌঁছালে ওই বাসে থাকা বড়াইগ্রামের যাত্রীর সহায়তায় বাসটি থামায় এবং চালক- হেলপারকে পুলিশ হেফাজতে দেয়। এসময় দুই নারী যাত্রী এবং অন্যযাত্রীরা বড়াইগ্রাম থানায় অভিযোগ করতে গেলে তারা ঘটনাস্থল টাঙ্গাইলের মীর্জাপুর হওয়ায় ওসি মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার ৩দিন পরে মীর্জাপুর থানা থেকে প্রতিনিধি এসে শুক্রবার ৮-৯জন অজ্ঞাতনামা আসামীর নামে মামলা নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কথা বলতে ওসি সিরাজুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিজ্ঞাপন
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন পিপিএম জানান, প্রশাসনিক প্রয়োজনে শুক্রবার বিকেলে ওসি সিরাজুল ইসলামকে ক্লোজ করা হয়েছে।
নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে আরও আন্তরিক হতে হবে: মির্জা ফখরুল
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
|
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ছবি: বার্তা২৪.কম
জাতীয়
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকাল অনেক সাংবাদিক নিজেদের আখের গোছানোর জন্য দালালি করে। কথাটা ভাল হলো না বলাটা কিন্তু তারপরও বলতে হলো। মাহফুজ উল্লাহর কিছুই ছিল না। তার চিকিৎসার জন্য তার পরিবারকে বন্ধুদের কাছে হাত পাততে হয়েছে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর মরণোত্তর একুশে পদক প্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ২০১৪ এর নির্বাচনের পরে, ২০১৮ নির্বাচনের আগের সময়টাই তিনি অনেক কাজ করেছেন। তখন সমস্ত দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য মাহফুজ উল্লাহ, মাহবুব উল্লাহ ও জাফরউল্লাহ ভাইয়ের অসাধারণ প্রচেষ্টা ছিল। তারা ছিলেন বলেই ডান, বাম সবাই মিলে একটা জায়গায় আসা সম্ভব হয়েছিলে। একেবারেই গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একজন মানুষ ছিলেন, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করেছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বেশিরভাগই বিপ্লবী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম, আমরা সেদিন শ্রেণি শত্রু খতম করার স্লোগানও দিয়েছি। সেই ব্যাপারটা যে সঠিক ছিল, এরপরে রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার যে পরিবর্তন এসেছে, সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ শুরু করেছিলাম।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ আমরা আশাবাদী, ফ্যাসিবাদের পরিবর্তন হয়েছে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে পালিয়ে গেছে। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর কথা মত, দীর্ঘদিন ধরে এই দেশের রাজনৈতিক দলগুলো যে চেষ্টা করেছে, লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে, সবশেষে ছাত্র-জনতার সমবেত প্রচেষ্টায় সেটা সম্ভব হয়েছে।
সবাই আমরা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা নতুন করে গড়ে তুলবো। সবাই এই কথাটা বলছে। সবার এই কথাটায় আরও বেশি আন্তরিক হওয়া প্রয়োজন। সত্যিকার অর্থেই আমরা যেনো সবাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য দেশ তৈরি করার জন্য সবাই যেন কাজ করতে পারি। তখনই তার প্রতি সম্মান দেখানো সফল হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের অনেক বয়স হয়েছে, নবীন-তরুনরা আছেন, যারা দেশকে নতুন করে চিন্তা করছেন। সেই চিন্তার মধ্যেই কিন্তু আগের যাদের এই দেশকে সুন্দর করার জন্য অবদান, সেই অবদানগুলোকে যেন আমরা কখনোই ভুলে নাই যাই। কারণ এদের কাজের ওপরই কিন্তু আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।
সত্যিকার অর্থেই একজন গুণি, অসাধারণ মেধাবী এবং একজন দেশপ্রেমিক মানুষকে সরকার একুশে পদকের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, মাহফুজ উল্লাহ একজন মেধাবী ছিলেন তার বড় ভাইয়ের (মাহবুব উল্লাহ) মতই। তখনকার দিনে বোর্ড স্ট্যান্ড করেছিলেন, কিছুটা পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণেও বাম রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েন। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজে পরিবর্তন নিয়ে আসা। মানুষের কল্যাণের জন্য, মানুষের পাওনা পাইয়ে দেয়ার রাষ্ট্র ব্যবস্থা চাইতেন।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ, প্রয়াত মাহফুজ উল্লাহর ভাই মাহবুব উল্লাহ, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব সফিকুল আলম, সাবেক সচিব ইসামাইল জবিউল্লাহ, সাংবাদিক গোলাম মর্তুজা চিত্রশিল্পী রোকেয়া সুলতানা, দৃকের প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম প্রমুখ।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-মো. শহিদুল ইসলাম (২৯), মো. সবুজ (৩০) ও মো. শরীফুজ্জামান (২৮)।
টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার দায়ে মির্জাপুর থানার ডিউটি অফিসার আতিকুজ্জামানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন,গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে লুট হওয়া নগদ টাকা ও কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও দুয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।
গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা ইউনিক রোড রয়েলসের 'আমরি ট্রাভেলসের' একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের তথ্যমতে, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা বাসটিতে তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতি চলে। পরে একই জায়গায় বাসটি নিয়ে গিয়ে ডাকাতেরা নেমে যায়।
শুরুতে ডাকাতির ঘটনায় বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করা হলেও তাদের জামিন দেন আদালত।
এ ঘটনার তিন দিন পর শুক্রবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় একটি মামলা হয়। বাসের যাত্রী নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ওমর আলী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
কর্মহীন ১০ হাজার এনজিওকর্মী, মুখ থুবড়ে পড়ছে উন্নয়ন কর্মসূচি
ডেস্ক রিপোর্ট, বার্তা২৪.কম
|
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএসএআইডি’র তহবিল স্থগিতে বাংলাদেশের ৩২৭ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) ১০ হাজার কর্মী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এতে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমেও বড় ধরণের প্রভাব পড়বে। খবর কালের কাণ্ঠ’র
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সহযোগিতা কার্যক্রম স্থগিত করে গত ২৫ জানুয়ারি দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এসংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয় সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২১ জানুয়ারি এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এরপর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সহায়তা ছাড়া ইউএসএআইডির বাকি সব কার্যক্রম আপাতত তিন মাসের জন্য গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে। আকষ্মিক এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের প্রায় ৩২৭টি এনজিও’র ১০ হাজার কর্মী বেকার হয়ে পড়ায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশসহ একাধিক সহায়তা কার্যক্রম ঝুঁকিতে পড়েছে।
এনজিও ব্যুরো জানায়, বিভিন্ন দেশ থেকে তহবিল (ফান্ড) পেয়ে থাকে দেশের ২৭৪টি এনজিও। এর মধ্যে ইউএসএআইডির ফান্ড পেত ৮৭টি এনজিও। এসব ডোনার এজেন্সির (দাতা সংস্থা) মাধ্যমে দেশে প্রায় ২৪০টি এনজিওর প্রকল্প পরিচালিত হতো। সেই হিসাবে ৩২৭টি এনজিওর ইউএসএআইডির ফান্ড স্থগিত হয়েছে। চাকুরি হারানো ১০ হাজার এনজিও কর্মীর বেশির ভাগই বিভিন্ন প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করায় তাঁরা কোনো আর্থিক সুবিধাও পাননি। ফলে হঠাৎ করে চাকরি হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে উত্কণ্ঠার মধ্যে দিন কাটছে তাঁদের। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থা, পরিবেশ, জ্বালানি এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রমও গতি হারিয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে লাখ লাখ সুবিধাবঞ্চিত মানুষ।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ইউএসএআইডির ফান্ড বন্ধের ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে। এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বে। তবে আমাদের দেশে উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রভাব বেশি। একই সঙ্গে বিশ্বে কিন্তু বিকল্প অর্থায়নের উৎসও কমে যাচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলো অন্তর্মুখী হচ্ছে। বৈশ্বিক অবস্থাও ইতিবাচক নয়। এভাবে চলতে থাকলে সুবিধাবঞ্চিতরা আরো বঞ্চিত হবে।’
সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)-তে ইউএসএআইডির অর্থায়নে বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হতো। তারা এক হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতির চিঠি দিয়েছে। স্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের তিন মাসের সময় দিয়ে চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর অস্থায়ীদের তাত্ক্ষণিক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আইসিডিডিআরবির কমিউনিকেশনস বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার এ কে এম তারিফুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্প ও গবেষণাগুলো পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত স্থগিত রেখেছি।’
ইএসএআইডি হোস্ট অ্যান্ড ইমপ্যাক্টেড কমিউনিটি রেজিল্যান্স অ্যাকটিভিটি, বাংলাদেশ নামের একটি এনজিওর কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি অন্য একটি স্থায়ী চাকরি ছেড়ে মাত্র তিন মাস আগে কিছুটা সিনিয়র পজিশনে এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। নতুন প্রতিষ্ঠানে আমার চাকরি এখনো স্থায়ী হয়নি। এ অবস্থায় আমাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমার চাকরি আর থাকছে না। পরিবার-পরিজন নিয়ে অথই সাগরে পড়ে গেলাম।’
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুশীলনের সহকারী পরিচালক শাহিনা পারভীন বলেন, ‘ইউএসএআইডির ফান্ডে আমাদের একটি প্রজেক্ট চলত। সেখানে ১৯ জন কর্মী ছিলেন। তাঁদের সবাইকে বাদ দিতে হয়েছে। তাঁদের যে অন্য কোনো প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত করব, সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। কারণ গ্লোবালি ফান্ড ক্রাইসিস চলছে।’
বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ইউএসএআইডির ফান্ড বন্ধ ঘোষণার পর বাংলাদেশসহ চারটি দেশে ৯টি কর্মসূচি স্থগিত করেছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি এক সেমিনারে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নতুন যে অবস্থান নিয়েছে, তা পরিস্থিতি কঠিন করে তুলতে পারে। আশা করি রোহিঙ্গাদের জন্য তারা অর্থ সহায়তা বন্ধ করবে না। মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের ওপর আরো বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।’
মড়ার উপর খাড়ার গা হিসাবে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ডও। বাংলাদেশসহ তিন দেশে উন্নয়ন কর্মসূচিতে সহায়তা বন্ধ করার কথা গত ২৯ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম সুইস ইনফোর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈদেশিক সহায়তার জন্য সুইস সরকার যে পরিমাণ অর্থ চেয়েছিল, তার চেয়ে কম অর্থ বরাদ্দ করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুইজারল্যান্ডের সরকার। সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) ২০২৮ সালের পর বাংলাদেশ, আলবেনিয়া ও জাম্বিয়ায় দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন কর্মসূচি বন্ধ করে দেবে।
ইউএসএআইডি গত ৫০ বছরের বেশি সময় বাংলাদেশে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি, পরিবেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ খাতে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। তাদের অনুদান পাওয়া অনেক এনজিও এবং সরকারি সংস্থা রয়েছে। ইউএসএআইডি গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশকে প্রায় ২০ কোটি ২২ লাখ ডলার অর্থ সহায়তা দেওয়ার চুক্তি করে। এর আগে ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১-২৬ সালের জন্য বাংলাদেশ ও ইউএসএআইডির মধ্যে একটি নতুন ডিওএজি (ডেভেলপমেন্ট অবজেকটিভ গ্র্যান্ট অ্যাগ্রিমেন্ট) সই হয়। এর মাধ্যমে ৯৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ইউএসএআইডি।
ইউএসএআইডির ফান্ড বন্ধের ফলে স্বাস্থ্য খাতে বড় প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে এইচআইভি, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বড় ঝুঁকিতে পড়বে। এতে এইচআইভি-এইডস, যক্ষ্মা, ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, ম্যালেরিয়া অপুষ্টিজনিত নানা সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
পরিবেশ ও জ্বালানি প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা উন্নয়নে কাজ করার কথা বলছে ইউএসএআইডি, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সহায়তা করে। সব প্রকল্পই এখন বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রযুক্তি উন্নয়নেও সহায়তা করে তারা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে ইউএসএআইডির কর্মসূচি পরিচালিত হতো। শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করে তারা। এসব প্রকল্প এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
পিকনিকে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল শিক্ষার্থীর
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
|
ছবি: বার্তা ২৪
জাতীয়
জামালপুরে পিকনিকে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মো. রাশেদুল ইসলাম (১৫) নামে এক দশম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার ছাতারিয়া মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চাঁদ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত শিক্ষার্থী মো. রাশেদুল ইসলাম সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর আদ্রা গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ও ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্কুল থেকে পিকনিকে গাজীপুরের সাফারী পার্কে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্কুল থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাসটি ছেড়ে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বাসের জানালা দিয়ে তার মাথা বের করে থাকে। বাসটি ছাতারিয়া মোড় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছে ধাক্কা দিলে ওই শিক্ষার্থী মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত হয়।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলামকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, এটা আমাদের জন্য এক বিধ্বংসী ক্ষতি হল। আজ তাদের আনন্দ করার দিন অথচ দুর্ঘটনায় কত বড় ক্ষতি হল। আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এ ঘটনায় বিদ্যালয় মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কর্তৃপক্ষ বাসটিকে আটক করেছে। খবর পেয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে এসেছি। এ বিষয়ে পরিবার যদি অভিযোগ করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।