অর্ধশত বছরের পুরনো স্বাদ এখনও কৃ্ষ্ব দের মিষ্টিতে
অজপাড়াগাঁয়ের একটি দোকান। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মিষ্টি বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। অর্ধশত বছরের পুরনো এই দোকান যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। হাওরের গ্রামের গরুর খাঁটি দুধ দিয়ে তৈরি এই মিষ্টি এখনো পুরনো জৌলুশ ছড়াচ্ছে। এখানকার মিষ্টি যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার কারগাও ইউনিয়নের কারগাও বাজারের কৃ্ষ্ব দের এই মিষ্টির দোকান। এছাড়াও এই দোকানের রুটি ও সবজির মধ্যেও রয়েছে বৈচিত্র্যময় স্বাদ। ভোজন রসিক মানুষদের কাছে এই হোটেলটি জনপ্রিয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন এসে মিষ্টি নিয়ে যাচ্ছেন। দোকানের পিছনেই রাখা সারিবদ্ধ দুধের ড্রাম। পাশের নিকলী উপজেলার হাওর অঞ্চলের গ্রাম থেকে সংগ্রহ করা হয় গরুর খাঁটি দুধ। প্রতিদিন নয় থেকে দশ মণ দুধের প্রয়োজন হয় বলে দোকানী জানান। রসগোল্লা, রসমলাই ছাড়াও কয়েক রকমের মিষ্টি তৈরি হয় এই দুধ দিয়ে। আশপাশের এলাকাগুলোতে কোন অনুষ্ঠান হলে এই মিষ্টি চাহিদার শীর্ষে থাকে। প্রতি কেজি সাদা রসগোল্লা মিষ্টি ২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
জানা যায়, স্বাধীনতার আগে থেকেই এই মিষ্টি তৈরি শুরু হয়। এই ব্যবসা প্রথম শুরু করেন রজনী মোহন দে। শুরুতে ছোট পরিসরে চালু করলেও পরবর্তীতে তার ছেলে বীরেন্দ্র চন্দ্র দে ব্যবসার আরও প্রসার ঘটায়। এতে এই মিষ্টির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে অঞ্চলজুড়ে। বীরেন্দ্র চন্দ্র দের মৃত্যুর পর তার ছেলে কৃষ্ব চন্দ্র দে সেই ব্যবসা এখনো টিকিয়ে রেখেছেন।
মিষ্টি কিনতে আসা আবরারুল হক বলেন, 'কোন অনুষ্ঠান থাকলে এখান থেকেই মিষ্টি নিতে আসি। এই মিষ্টির ঘ্রাণ এবং মান ভালো। গ্রামের দোকান হলেও এই মিষ্টির মান অনেক ভালো।
দোকানের মালিক কৃষ্ব চন্দ্র দে বার্তা২৪. কম-কে বলেন, 'আমরা মূলত ভালো দুধ দিয়ে মিষ্টি তৈরি করি। বাপ দাদার আমল থেকে যেভাবে তৈরি করা হতো এখনো তাই হচ্ছে। বর্তমানে মিষ্টি তৈরির উপকরণের দাম বৃদ্ধির ফলে মান ধরে রাখতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। তবুও দোকানের ঐতিহ্য ধরে রাখতে চেষ্টা করি মানুষকে আগের মতোই সেবা দিতে।
আমার একমাত্র ছেলে সফটওয়্যার ইন্জিনিয়ার। আমার পরে এই ব্যবসার হাল ধরার কেউ নেই আর। যতদিন আমি আছি, ভালো কিছু তৈরি করে যাবো বলেও জানান তিনি।