‘মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের মাস্টার প্ল্যান পুনর্গঠন করা হচ্ছে’

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ

নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের মাস্টার প্ল্যান পুনর্গঠন করা হচ্ছে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি একথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, কেবলমাত্র আঞ্চলিক সংযোগের মাধ্যম হিসেবেই নয়, কৌশলগত ও ভূ-রাজনৈতিকভাবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের অবস্থানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের মাস্টার প্ল্যান পুনর্গঠন করা হচ্ছে। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা ইস্যুটি বিবেচনা করতে হবে। এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের ডক-ইয়ার্ড নির্মাণ করার পরিকল্পনার কথাও তিনি জানান।

সরকার দেশের বন্দরগুলোর কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় ও গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে ন্যাশনাল পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে এ ব্যাপারে তিনি জাইকা’র কারিগরি সহায়তা প্রত্যাশা করেন।

বিজ্ঞাপন

সাক্ষাতকালে নৌ পরিবহন উপদেষ্টা আরও বলেন, জাপান-বাংলাদেশ উভয় দেশই দীর্ঘদিন ধরে উষ্ণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আসছে। জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জাপানের ভুমিকা অনবদ্য। বাংলাদেশের একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর মাতারবাড়ি বন্দরটি জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)’র আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় নির্মিত হচ্ছে। এ বন্দর আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্দরটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে তথা আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত হবে। বন্দরটি নির্মাণের কার্যক্রম দ্রুততার সাথে চলমান রয়েছে। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হলে বন্দরের কার্যক্রম আরো গতিশীল করতে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে।

২০৩০ সালের মধ্যে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে বলে ড. এম সাখাওয়াত আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, বাংলাদেশ জাপানের বন্ধুরাষ্ট্র। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানব সম্পদ ও অবকাঠামোসহ অন্যান্য সেক্টরের উন্নয়নে গত পঞ্চাশ বছরের বেশি সময় ধরে জাপান বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। জাপানের স্বেচ্ছাসেবীরা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল অবধি বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। দুই দেশের মধ্যে সত্যিকারের বন্ধুত্ব রয়েছে।

বাংলাদেশের উন্নয়নে পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যাক্ত করে জাপান রাষ্ট্রদূত বলেন, জাইকা মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ কার্যক্রমকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। সবার সহযোগিতায় যথাসময়ে এ বন্দরের কার্যক্রম শেষ হবে বলে রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের জাহাজভাঙ্গা শিল্পে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা জাহাজভাঙ্গা শিল্পের পরিবেশগত মান যাচাইয়ের লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন। উক্ত কমিটি শিপ রিসাইকেলিং ইয়ার্ডগুলো সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক সরকারকে সুপারিশ সহকারে প্রতিবেদন জমা দেবে। নৌপরিবহন উপদেষ্টা বাংলাদেশের মেরিন একাডেমিগুলোর উন্নয়নে জাপান সরকারের পেশাগত ও কারিগরি সহযোগিতা কামনা করেন।

সাক্ষাৎকালে জাপান দূতাবাস ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।