সংক্রমণ বিবেচনায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৪৫টি এলাকাকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ‘রেড জোন’ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঘোষিত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে প্রথমে পরীক্ষামূলক লকডাউন কার্যকর হয় ফার্মগেটের পূর্ব রাজাবাজার এলাকায়।
গত ৯ জুন মধ্যরাত থেকে আজ ১১ তম দিন পর্যন্ত এ এলাকায় চলছে ব্যাপক কড়াকড়ি। সরেজমিনে দেখা যায়, পূর্ব রাজাবাজার এলাকার প্রবেশ এবং বের হওয়ায় ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। প্রবেশ ও বের হওয়ার সব পথ বন্ধ রয়েছে। ওই এলাকায় বসবাসরত চিকিৎসক, নার্স, সাংবাদিক, সেবা সংস্থার প্রতিনিধি ও দু-একজন সবজি বিক্রেতা ছাড়া কাউকেই বের হওয়া বা ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
মহল্লায় স্বেচ্ছসেবী এবং পুলিশ সদস্যরা যাতায়াত করছেন। জরুরি সেবায় নিয়োজিতদের বের হওয়া এবং প্রবেশের জন্য পূর্ব রাজাবাজারের আটটি গেটের মধ্যে গ্রিন রোডের আইবিএ হোস্টেল সংলগ্ন গেটটি খোলা রাখা হয়েছে।
এদিকে মহল্লায় করোনা রোগীদের জন্য আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। করোনা রোগী শনাক্তে নমুনা পরীক্ষার জন্য ব্র্যাকের পক্ষ থেকে বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে নিয়মিত টেস্ট চলছে।
তথ্য বলছে, রেড জোনের আওতাভুক্ত হওয়ার ১০ দিনে এই এলাকায় গতকাল পর্যন্ত ৩৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।
খোলা গেটের সামনে চেকপোস্ট বসিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী দল। ডিউটি করছে ১০ সদস্যের একটি পুলিশের টিম। কিছু সময় পর পর এলাকার চারপাশে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী।
সরেজমিনে দেখা ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রথম দিন থেকে এখন পর্যন্ত একই কড়াকড়ি অবস্থানে আছে পূর্ব রাজাবাজার রেড জোন।
দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই সুজন বার্তা২৪.কমকে বলেন, পূর্ব রাজাবাজারে লকডাউন নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং সিটি করপোরেশনকে সহায়তা করছি। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দু'একটি পেশার লোক ছাড়া আমরা কাউকে বের হতে দিচ্ছি না।
আর তাছাড়া প্রথম দিন যারা বের হয়েছেন। তাদের নাম লিস্ট করা রয়েছে। ওই লিস্ট ধরে বের করে দেওয়া হচ্ছে। নতুন কাউকে লিস্টের অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না।
এদিকে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদুর রহমান খান ইরান বার্তা২৪.কমকে বলেন, রেড জোন করার আগে থেকেই আমরা যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়েছি। জরুরি চিকিৎসা সেবা ও খাদ্য সহায়তার জন্য আলাদা টিম গঠন করেছি। খাদ্য সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি আমরা দুভাবে নিশ্চিত করছি। একটি হলো যারা দরিদ্র তাদের বিনামূল্যে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছি। আর যাদের সামর্থ্য আছে তাদের সেভাবেই পণ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। আমাদের সঙ্গে যোগাযাগ করলেই জরুরি ভিত্তিতে এই সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। এসব খাবার জীবাণুমুক্ত করেই পৌঁছে দেওয়া হয়। আশা করি রেড জোনের উদ্দেশ্য সফল হবে।