হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ ও ৫ দফা দাবি আদায়ের দাবিতে শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। টানা তিন দিনের এই কর্মসূচির ফলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ব্যাহতের পাশাপাশি ভোগান্তিতে পড়ছেন রোগীরা। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির পাশাপাশি পাওয়া নেই অনেক সিনিয়র চিকিৎসকও।
অন্যদিকে, আন্দোলনরত চিকিৎসকরা বলছেন, তাদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
ইন্টার্ন চিকিৎসক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিএমডিসির বিরুদ্ধে করা রিট প্রত্যাহার এবং বিএমডিসির শুধুমাত্র এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীদের রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার দাবি জানান।
তারা জানান, বিএমডিসি থেকে ম্যাটস শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করার সিদ্ধান্তে চিকিৎসক সমাজ একাত্মতা পোষন করেন। যদি বিএমডিসির বিরুদ্ধে করা রিট মামলার রায় চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যায়, তবে তারা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখবেন।
এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শফিকুল ইসলাম, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরএস ডা. মশিউর রহমান, পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেনিং ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক ডা. এটিএম আখেরুজ্জামান, রামেক ইন্টার্ন চিকিৎসক ফোরামের সভাপতি ডা. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, ইন্টার্ন প্রতিনিধি ডা. অনন্যা রহমান, ডা. মাহমুদুল হাসান, বারিন্দ মেডিকেল কলেজ ইন্টার্ন চিকিৎসক ফোরামের নেতা ডা. সাদিকসহ ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, টানা তিন দিন ধরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের পূর্ণাঙ্গ শাটডাউনের কারণে রোগী ও তাদের স্বজনরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে কোনো ইন্টার্ন চিকিৎসক নেই। এমনকি সিনিয়র চিকিৎসকদেরও অনেকে অনুপস্থিত।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. খন্দকার ফয়সাল আলম বলেন, দেশের চিকিৎসকদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। চিকিৎসার মান উন্নত না হওয়ায় রোগী মৃত্যুর হার বাড়ছে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। অতীতের সরকার এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, বর্তমান সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
তবে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মুখপাত্র ডা. শংকর কুমার বিশ্বাস জানান, রোগী সেবা নিশ্চিত করতে মিড-লেভেল ও সিনিয়র চিকিৎসকদের নিয়ে কাজ চলছে। ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে থাকায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে, হাসপাতাল পরিচালকের নির্দেশে চিকিৎসকদের সহযোগিতায় রোগীদের ভোগান্তি কমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিটি ওয়ার্ডেই চিকিৎসকদের সেবা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।