গাজার উত্তরে বাইত লাহিয়া এলাকায় ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় তিনজন সাংবাদিকসহ অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন। এ হামলায় আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৫ মার্চ) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার হামলাটি সাংবাদিক এবং আলোকচিত্রীদের সঙ্গে থাকা একটি ত্রাণ দলকে লক্ষ্য করে করা হয়েছিল। এতে তিনজন স্থানীয় সাংবাদিকসহ অন্তত নয়জন নিহত হয়।
ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সুরক্ষা কেন্দ্র এক বিবৃতিতে বলেছে ,সাংবাদিকরা ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম নথিভুক্ত করছিলেন।
সংস্থাটি গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলে, তারা যেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ প্রয়োগ করেন, যাতে তিনি সমঝোতার ভিত্তিতে বন্দিবিনিময় এবং যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নে সম্মত হন।
দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজযুম জানিয়েছেন, জানুয়ারিতে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান গাজার জনগণের সহায়তায় কার্যক্রম বাড়িয়েছে, বিশেষ করে রমজান মাস উপলক্ষে।
তিনি জানান, বাইত লাহিয়ার এ হামলার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে। তবে এটি প্রথম হামলা নয়। গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি ড্রোনগুলোকে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। রাফাহ শহরে প্রত্যক্ষদর্শীরা নিশ্চিত করেছেন যে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়েছেন।
হামাস বাইত লাহিয়ার হামলাকে ‘ভয়াবহ গণহত্যা’ আখ্যায়িত করে এক বিবৃতিতে জানায়, এটি আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ ও আগ্রাসনের ধারাবাহিকতা এবং আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তিগুলোর প্রতি তাদের চরম অবজ্ঞার প্রতিফলন।’
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা বাইত লাহিয়ায় ‘দুজন সন্ত্রাসীকে লক্ষ্যবস্তু’ করেছিল, যারা ইসরায়েলি সেনাদের জন্য হুমকি সৃষ্টি করা একটি ড্রোন পরিচালনা করছিল। পরে, আরও কিছু ‘সন্ত্রাসী’ ড্রোনের সরঞ্জাম সংগ্রহ করে একটি গাড়িতে ওঠে। ইসরায়েলি বাহিনী তখন তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। তবে ইসরায়েলের এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৪৮ হাজার ৫৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১১ হাজার ৯৮১ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজদের হিসাব অন্তর্ভুক্ত করলে এ সংখ্যা ৬১ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। এছাড়াও ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে ইসরায়েল তাদের এবং হামাসের মধ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। যার ফলে যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির জন্য আলোচনা করতে হবে, যা হামাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি