নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি ফার্নিচারের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। 

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দিনগত রাত ১১টার দিকে আগুন লাগে বলে জানান আদমজী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার মিরন মিয়া। ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১১টার দিকে আগুন দেখতে পেয়ে স্থানীয় সবাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বাতাসের কারণে ক্রমশ আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। পাশের একটি তুলার দোকানেও আগুন লেগে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে।

স্টেশন মাস্টার মিরন মিয়া বলেন, জালকুড়ি একটি ফার্নিচারের দোকানে আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত কাঁচপুর ও আদমজী ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পরে রাত ১২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।

সারা শরীরে ব্যথার আর্তনাদ। এমন সময় ছোট্ট ভাই কাছে এসে হাতের ইশারায় বোঝাচ্ছে চুপ চুপ চুপ। বোঝাতে চাচ্ছে কিছু হবে না? আমি তো আছি। কিন্তু মন কি তাই শুনে। এদিকে ফেল ফেল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ছোট্ট বোন আছিয়া। তার ভাইয়ের ইশারা দিয়ে বোঝানো কথা শুনে হাতটা মুখে দিয়ে আদর করলো ছোট্ট ভাইটিকে। কালো মাস্ক পড়া ভাইটি তখন আপন মনে ছোট্ট দিদির দিকে তাকিয়ে।

আছিয়া ব্যথার যন্ত্রণায় কথা না বলতে পারলে ও ছোট্ট ভাইটি তার চোখের ভাষা যেন নিমিষেই বুঝতে পারছে। তার চোখের ভাষা বুঝে তার মুখ নাড়া দিয়ে বোঝাতে লাগলো। তারপরই আছিয়া তার হাত দিয়ে তার ভাইয়ের মুখ থেকে মাক্স খুলে শেষ আদরটাই করে গেল। আর মুখে মুখে কী যেন বলে গেল। তার কিছুক্ষণ পর আছিয়া ফুল হয়ে মাটিতে ঝরে পড়ে গেল। ছোট্ট শিশুটির চাহনি মাখা মুখ মুহূর্তেই সোস্যালমিডিয়া জুড়ে। শুয়ে শুয়ে ব্যাথার যন্ত্রণা ভোগ করছে ছোট্ট আছিয়া। ঝড়ে পড়ার আগের এই ১ মিনিট ৭ সেকেন্ড ভিডিও সবার জীবনে একটা বড় ঝড় তুলে দিল। ঝড়ে ছন্নভন্ন হয়ে যাওয়া শোকের ছায়া তার জীবন সৌরভ মুছে গেছে সবার চোখের জ্বলে।

প্রকৃতির নিয়মে ফুল ফুটার আগে কুঁড়ি হয়ে গুটি বাধে গাছে। কিন্তু সেই কুঁড়ি বিকশিত হতে পারেনি। ফুল হয়ে ফুটার আগেই ঝড়ে পড়ে গেল মাটিতে। নরপশুর পাশবিক নির্যাতনে জীবনটা ঝড়ে গেছে কুঁড়িতেই। কুঁড়িটা ফুটার অপেক্ষাই ছিল মাত্র। ঝড়ে পড়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই মুচকি হাসি আর ভাইয়ের আদরের দৃশ্য যেন সবার মনের দুয়ারে কড়া নাড়ে। বয়স কতই না হবে। মাত্র ৮ বছর। স্কুল ছুটি থাকায় গিয়েছিল আপুর শুশুর বাড়িতে বেড়াতে। ঘুরতে যাওয়াটায় যেন তার জীবনের কাল। সেখানে আপুর নিরাপদ আশ্রয়ে থেকেও নরপশুর পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয় ছোট্ট শিশুটি।

গত ৫ মার্চ রাতে মাগুরা শহরের নিজনান্দুয়ালী এলাকায় নরপশুরা ঘ্রাস করে তাকে। তার ওপর এতই নির্যাতন চালানো হয় যে, শিশুটি মৃত্যুর দিকে যায় যায় অবস্থা। এমনই গুরুতর অবস্থায় তাকে স্থানীয় হাসপাতালের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। পরে নেওয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ)।

সপ্তাহখানেক মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েও হেরে গেল শিশুটি। যেন না ফুটতেই ঝরে গেল রজনীগন্ধা (আছিয়া)। যে রজনীগন্ধার সুভাসে আকাশ বাতাস মুখরিত হওয়ার কথা। সেখানে তার ঝড়ে পড়ার পর পরই আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠে। নেমে আসে তার পরিবর্তে কালো অন্ধকার। তাকে হারানো শোকে মাতাম সব-শ্রেণি পেশার মানুষ হৃদয়ে। মাগুরায় শ্রীপুর উপজেলার এই শিশুটির জন্য কাঁদছে পুরো জাতি। হাহাকার করছে পুরো মানবকূল। ধিক্কার জানাচ্ছে পুরো জাতিকে। বিচার চাইছে সেই নরপশুর পাশবিক নির্যাতনের।

কম খরচসহ বিনামূল্যে পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়ায় হাঁস পালনে আগ্রহী হচ্ছেন হাওরের যুবকরা। ধান এবং মাছের পাশাপাশি বিকল্প পেশা হিসেবে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই হাঁস পালন। প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে ভাড়াবিহীন উন্মুক্ত জলাশয় পাচ্ছে। এতে একদিকে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে পাশাপাশি চাহিদা মিটছে প্রোটিন ও আমিষের। জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা বলছে, বেকারদের আরো আগ্রহী করতে দেওয়া হচ্ছে প্রশিক্ষণ, পাশাপাশি প্রয়োজন স্থানীয় এনজিও গুলোর সহযোগিতা।

মদন থানার জঙ্গল টেংঙ্গা গ্রামের শিক্ষিত যুবক আব্দুল মান্নান। হাঁস পালনে হয়েছেন সফল। তাঁকে দেখে হাঁস পালনে উৎসাহিত হয়েছেন উপজেলার অনেক শিক্ষিত বেকার, সকলেই দেখেছেন সফলতার মুখ। বেকার যুবকরা হাঁস পালনে পাশাপাশি যুক্ত হচ্ছেন অন্যান ব্যবসায় আয় করছে একাধিক খাত থেকে।

আব্দুল মান্নান বার্তা২৪.কমকে বলেন, শুকনো মৌসুমে লাভ কম হলেও, বর্ষা মৌসুমে হাওড়ে প্রাকৃতিক খাবার থাকায় লাভ অনেক বেশি। ৫ হাজার হাঁস পালনে বছরে খরচ দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। বছরে শেষে শুধু ডিম ব্রিক্রি থেকে আসে ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা।

হাওরে প্রাকৃতিক পরিবেশে লালন পালন হচ্ছে হাঁস। প্রতিনিয়ত তৈরী হচ্ছে ছোট বড় মাঝারিসহ বিভিন্ন ধরনের খামারি। বাড়তি আয় হিসেবে খামার করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা। হাওরে রয়েছে প্রকৃতির নানান বৈচিত্র্য। আর এই সুযোগে বর্ষাকাল পর্যন্ত অনায়াসে বিস্তীর্ণ ভূমি ব্যবহার করে পালন করছেন হাঁস। বৈশেখ মাসে ফসল ওঠার সময় হাঁসের খাবার খরচও বেঁচে যায় অনেক। যে কারণে জেলার হাওরাঞ্চল মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরীতে বেশি জনপ্রিয় এখন হাঁস পালন।

জেলার প্রতিটি উপজেলার নীচু এলাকায় এখন হাঁসের খামার করে স্বাবলম্বী অনেকে। এসকল অঞ্চলের প্রায় বাড়িতেই খাবারের চাহিদা মিটাতে কমন রয়েছে হাঁস পালন। তার উপর অনেকেই বাড়তি লাভ এমনকি কায়িক পরিশ্রম কম হওয়া এবং অধিক লাভজনক হওয়ায় এটিকে বাণিজ্যিকভাবে নিয়েছেন। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে প্রোটিন এবং আমিষের যোগান হচ্ছে।

এদিকে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বার্তা২৪.কমকে জানান, হাওড়াঞ্চলের মানুষ এখন হাঁসের খামার করার জন্য বেশ আগ্রহী। হাঁসের খামার করে যুবকরা লাভবান হচ্ছে। হাঁস মূলত হাওরের প্রাকৃতিক খাদ্য খেয়েই বড় হয়। বছরের দুই থেকে তিন মাস হয়তোবা খাবার দিতে হয়। বাকি সময় হাঁস প্রাকৃতিক খাবার খায়, এতে খরচ কম থাকায় এবং হাঁসের মাংস ও ডিমের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় বেকার যুবকরা হাঁস পালনে আগ্রহী হচ্ছে।
জেলায় বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ৬ হাজার খামারি রয়েছে। এছাড়া ছোটখাটো করে বা বাড়িতে লালন পালনের হিসাব তো করাই হয়নি। এদিকে ডিম মাংসে মিটাচ্ছে প্রোটিন আমিষের চাহিদাও।

তিনি আরো বলেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খামারিদের উন্নত করার চেষ্টা চলছে। তবে বেসরকারীভাবে এই একটি সম্পদকে কাজে লাগালে এ অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে আরও উন্নত হতে পারে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ডিম, মাংস, দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় ডিমের চাহিদা ছিলো ৫৩ কোটি, উৎপাদন হয়েছে ৫৩.৮০ কোটি, মাংস উৎপাদনের চাহিদা ছিলো ১.৭৩ লক্ষ মেট্রিক টন, উৎপাদন হয়েছে ১.৮০ লক্ষ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২.৮০ লক্ষ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছে ২.৯০ লক্ষ মেট্রিক টন।

যশোরে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে পলিথিন ব্যবহারে একাধিকবার পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা আসলেও শহরে প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে প্রায় শতাধিক মণ পলিথিন। পরিবেশ অধিদফতরের নীরব ভূমিকায় পরিবেশের ক্ষতিকর এ সকল পলিথিন ব্যাগ বিক্রি হচ্ছে নির্বিঘ্নেই।

আগে সোর্সের মাধ্যমে খবর পেলেও এখন সোর্সের ডিমান্ড পূরণ করতে পারছে না অফিস। এমনটাই দাবি করে পলিথিন সরবরাহের তথ্য না পাওয়ার কথা জানান জেলা পরিবেশ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমাদের পক্ষেও তো সম্ভব না রাত দিন দাঁড়িয়ে থাকা। পলিথিনের ডিলারদের তো আমাদের কাছে তেমন তথ্য নাই। কিন্তু নির্দিষ্ট তথ্য পেলে আমরা অভিযান পরিচালনা করি।

জানা যায়, শহরের বড়বাজার এলাকার গোহাটা রোড, হাটখোলা রোড, হাটচান্নি ও আলুপট্টির বিভিন্ন দোকানে পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে পলিথিনের ব্যাগ। শহরের বিভিন্ন দোকান ও উপজেলাগুলোতে পলিথিন সরবরাহ করছে বড় বাজারের একাধিক প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন প্রায় একশ থেকে দেড়শ মণ নিষিদ্ধ এই পলিথিন সরবরাহ করছেন তারা। জেলা শহর থেকে ক্রয় করে বিভিন্ন উপজেলা শহরে এসব পলিথিন বিক্রি করেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। পদক্ষেপ না নেওয়াই লাগামহীন ভাবে বেড়েই চলেছে এই ক্ষতিকারক পলিথিনের ব্যবহার। আরও জানা যায়, যশোর শহরের বড়বাজারে কয়েকজন ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবত এই নিষিদ্ধ পলিথিনের পাইকারি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। বড়বাজার এলাকার লিটন স্টোর, স্বত্বাধিকারী লিটন সাহা, মা শীতল ভান্ডার, কমল স্টোর ও বিপুল স্টোরসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে পাইকারি ভাবে পলিথিনের ব্যবসা চলছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদা থাকার কারণেই আমরা পলিথিন সরবরাহ করছি। সবাই যদি পলিথিন কেনা বাদ দেয় তাহলে আমরাও ব্যবসা ছেড়ে দিবো। আমরা তো সরাসরি বিক্রি করছি না। যে মালে লাভে বেশি, সে মালে তো একটু ঝুঁকি থাকবেই। তবে, ভোক্তারা বলছেন বাজারে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় কেনাকাটার পর পলিথিন ব্যাগে নিতে হচ্ছে। দোকানদাররা যদি পলি ব্যাগ না দিয়ে অন্য কিছুতে পণ্য সরবরাহ করে তাহলে আমরা তো সেটাই ব্যবহার করবো।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী বলেন, প্রশাসন থেকে মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু যে পরিমাণের অর্থ জরিমানা করা হয় তাতে ব্যবসায়ীরা কিছু মনে করে না। কিছুদিনের ভেতর তা পুষিঁয়ে নেওয়া যায়। জরিমানা আর কি করবে দোকানে তো বেশি পলিথিন রাখে না। লোড করা থাকে তো সব গোডাউনে।

এদিকে সচেতন মহল বলছেন, পলিথিনের ব্যবহার যেভাবে লাগামহীনভাবে বেড়ে চলেছে তা পরিবেশের জন্য হুমকীস্বরুপ। পলিথিনের ব্যবহার রোধ করতে না পারলে চরম মূল্য দিতে হতে পারে। জেলার পরিবেশ অধিদফতরকে পলিথিনের ব্যবহার নির্মূল ও পলিথিনের সাথে জড়িত অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তারা।

এ বিষয়ে যশোর জেলা পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক ইমদাদুল হক বার্তা২৪-কে বলেন, আমরা মাঝে মাঝে পলিথিন জব্দে অভিযান পরিচালনা করি। আগামীতে পলিথিন জব্দে অভিযান অব্যাহত থাকবে।’