মোহাম্মদপুরে আসামিসহ নিরাপত্তা কর্মীদের নামে পুলিশের মামলা
-
-
|

ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার লালমাটিয়া পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আসামিসহ নিরাপত্তা কর্মীদের নামে মামলা করেছে।
বুধবার (১২ মার্চ) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও রায়ের বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সহিদুল ওসমান মাসুম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় সরকারি কাজে বাধা ও সরকারি কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান।
তিনি জানান, রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার লালমাটিয়া এলাকায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হত্যাসহ পাঁচ মামলার আসামিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয় পুলিশ। গ্রেফতারের পরে পুলিশকে মারধর করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। এজাহারে একজনের নাম উল্লেখ করে এবং বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী অভিযোগ করেন, রায়ের বাজার পুলিশ ফাঁড়ির জিডি মূলে মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় ছিনতাই প্রতিরোধ ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং ওয়ারেন্ট তামিল ডিউটি করছিলাম। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোপন সূত্রে জানতে পারি মোহাম্মদপুর থানার একটি মামলার এজাহারনামীয় ৩৯ নম্বর আসামি লালমাটিয়া এলাকার এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে অবস্থান করছে।
বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তাদের নির্দেশে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সসহ এভেরোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনে থেকে আসামি আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য গোলাম মোস্তফাকে হেফাজতে নেই। এই সময়ে আসামির ডাক চিৎকারে মূহুর্তের মধ্যেই স্কুলটির নিরাপত্তা কর্মী ও কর্মকর্তারা পুলিশকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে মানবঢাল তৈরি করে।
তখন আসামির নির্দেশে পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে। পাশাপাশি আমাদেরকে টানা হেচড়া করে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকে। এই সময়ে আমাদের হেফাজত থেকে আসামি পালিয়ে যেতে থাকলে আমিসহ সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স তাকে আটক করার চেষ্টা করলে কিলঘুষি মারতে থাকে। আসামিদের মারপিটের সময়ে গোলাম মোস্তফা (৫৮) কে ছিনিয়ে নিয়ে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। আসামিদের মারপিটে বাদী আহত হন। তাকে উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ মামলার আসামি ও আওয়ামীলীগের সাংসদ জাহাঙ্গীর কবির নানকে সহযোগী গোলাম মোস্তফা ও হাফিজুর রহমান লিকুর অন্যতম ক্যাশিয়ার এবং বৈষম্যবিরোধী একাধিক মামলার আরেক আসামি আনিসুর রহমান সোহাগের পরিচিত লোক। তাকে গ্রেফতারের পর আসামি মোস্তফা মোহাম্মদপুর থানার ওসি কে ফোন করেন।
এ সময় ওসি আসামিকে ধরতে যাওয়া অফিসারদের ফোন করে ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে নির্দেশ দেন। আসামিকে কেন ধরতে গেছে এমন ধমক দিয়ে অফিসারদের তিনি শাসন করেন।
উল্লেখ্য, মোস্তফার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৫ টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলো হলো- মোহাম্মদপুর থানার মামলা নম্বর-৬৯, রামপুরা থানার মামলা নম্বর-১৮, বাড্ডা থানার মামলা নম্বর-১৬, ক্যান্টমেন্ট থানার মামলা নম্বর-১৬ ও চকবাজার থানার মামলা নম্বর-৫৬।