বগুড়ায় ট্রাকের ধাক্কায় ব্যাটারি চালিত অটোভ্যানের তিন যাত্রী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারী) রাত সাড়ে আটটার দিকে দুপচাঁচিয়া মেইল বাসস্ট্যান্ডে বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কে সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এতে গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত তিনজন। তাদের উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
নিহতদের নাম ঠিকানা এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
দুপচাঁচিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি) ফরিদুল ইসলাম এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, প্রাথনিকভাবে জানা গেছে, নিহতেরা একটি টাইলস কারখানায় কাজ করে অটোভ্যানযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। মূল সড়কে উঠার সময় ভ্যানের এক্সেল ভেঙে যায়। এসময় নওগাঁ থেকে বগুড়াগামী গরুবাহী একটি ট্রাক ভ্যানকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। বাকি তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত কারও পরিচয় মেলেনি। এ ঘটনায় ট্রাকটি আটক করা যায়নি।
কর্মহীন ১০ হাজার এনজিওকর্মী, মুখ থুবড়ে পড়ছে উন্নয়ন কর্মসূচি
ডেস্ক রিপোর্ট, বার্তা২৪.কম
|
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএসএআইডি’র তহবিল স্থগিতে বাংলাদেশের ৩২৭ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) ১০ হাজার কর্মী কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এতে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমেও বড় ধরণের প্রভাব পড়বে। খবর কালের কাণ্ঠ’র
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও সহযোগিতা কার্যক্রম স্থগিত করে গত ২৫ জানুয়ারি দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এসংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয় সংস্থাটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২১ জানুয়ারি এ বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এরপর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সহায়তা ছাড়া ইউএসএআইডির বাকি সব কার্যক্রম আপাতত তিন মাসের জন্য গুটিয়ে নেওয়া হয়েছে। আকষ্মিক এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের প্রায় ৩২৭টি এনজিও’র ১০ হাজার কর্মী বেকার হয়ে পড়ায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশসহ একাধিক সহায়তা কার্যক্রম ঝুঁকিতে পড়েছে।
এনজিও ব্যুরো জানায়, বিভিন্ন দেশ থেকে তহবিল (ফান্ড) পেয়ে থাকে দেশের ২৭৪টি এনজিও। এর মধ্যে ইউএসএআইডির ফান্ড পেত ৮৭টি এনজিও। এসব ডোনার এজেন্সির (দাতা সংস্থা) মাধ্যমে দেশে প্রায় ২৪০টি এনজিওর প্রকল্প পরিচালিত হতো। সেই হিসাবে ৩২৭টি এনজিওর ইউএসএআইডির ফান্ড স্থগিত হয়েছে। চাকুরি হারানো ১০ হাজার এনজিও কর্মীর বেশির ভাগই বিভিন্ন প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক চাকরি করায় তাঁরা কোনো আর্থিক সুবিধাও পাননি। ফলে হঠাৎ করে চাকরি হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে উত্কণ্ঠার মধ্যে দিন কাটছে তাঁদের। অন্যদিকে স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও শাসনব্যবস্থা, পরিবেশ, জ্বালানি এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রমও গতি হারিয়ে ঝুঁকিতে পড়েছে লাখ লাখ সুবিধাবঞ্চিত মানুষ।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ইউএসএআইডির ফান্ড বন্ধের ফলে উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হচ্ছে। এটা শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বে। তবে আমাদের দেশে উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রভাব বেশি। একই সঙ্গে বিশ্বে কিন্তু বিকল্প অর্থায়নের উৎসও কমে যাচ্ছে। ইউরোপীয় দেশগুলো অন্তর্মুখী হচ্ছে। বৈশ্বিক অবস্থাও ইতিবাচক নয়। এভাবে চলতে থাকলে সুবিধাবঞ্চিতরা আরো বঞ্চিত হবে।’
সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)-তে ইউএসএআইডির অর্থায়নে বিভিন্ন গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হতো। তারা এক হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুতির চিঠি দিয়েছে। স্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের তিন মাসের সময় দিয়ে চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর অস্থায়ীদের তাত্ক্ষণিক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আইসিডিডিআরবির কমিউনিকেশনস বিভাগের সিনিয়র ম্যানেজার এ কে এম তারিফুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্প ও গবেষণাগুলো পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত স্থগিত রেখেছি।’
ইএসএআইডি হোস্ট অ্যান্ড ইমপ্যাক্টেড কমিউনিটি রেজিল্যান্স অ্যাকটিভিটি, বাংলাদেশ নামের একটি এনজিওর কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি অন্য একটি স্থায়ী চাকরি ছেড়ে মাত্র তিন মাস আগে কিছুটা সিনিয়র পজিশনে এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলাম। নতুন প্রতিষ্ঠানে আমার চাকরি এখনো স্থায়ী হয়নি। এ অবস্থায় আমাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আমার চাকরি আর থাকছে না। পরিবার-পরিজন নিয়ে অথই সাগরে পড়ে গেলাম।’
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সুশীলনের সহকারী পরিচালক শাহিনা পারভীন বলেন, ‘ইউএসএআইডির ফান্ডে আমাদের একটি প্রজেক্ট চলত। সেখানে ১৯ জন কর্মী ছিলেন। তাঁদের সবাইকে বাদ দিতে হয়েছে। তাঁদের যে অন্য কোনো প্রজেক্টে অন্তর্ভুক্ত করব, সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। কারণ গ্লোবালি ফান্ড ক্রাইসিস চলছে।’
বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক ইউএসএআইডির ফান্ড বন্ধ ঘোষণার পর বাংলাদেশসহ চারটি দেশে ৯টি কর্মসূচি স্থগিত করেছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি এক সেমিনারে অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নতুন যে অবস্থান নিয়েছে, তা পরিস্থিতি কঠিন করে তুলতে পারে। আশা করি রোহিঙ্গাদের জন্য তারা অর্থ সহায়তা বন্ধ করবে না। মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের ওপর আরো বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।’
মড়ার উপর খাড়ার গা হিসাবে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করতে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ডও। বাংলাদেশসহ তিন দেশে উন্নয়ন কর্মসূচিতে সহায়তা বন্ধ করার কথা গত ২৯ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম সুইস ইনফোর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈদেশিক সহায়তার জন্য সুইস সরকার যে পরিমাণ অর্থ চেয়েছিল, তার চেয়ে কম অর্থ বরাদ্দ করেছে দেশটির পার্লামেন্ট। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুইজারল্যান্ডের সরকার। সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) ২০২৮ সালের পর বাংলাদেশ, আলবেনিয়া ও জাম্বিয়ায় দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন কর্মসূচি বন্ধ করে দেবে।
ইউএসএআইডি গত ৫০ বছরের বেশি সময় বাংলাদেশে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি, পরিবেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ খাতে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। তাদের অনুদান পাওয়া অনেক এনজিও এবং সরকারি সংস্থা রয়েছে। ইউএসএআইডি গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশকে প্রায় ২০ কোটি ২২ লাখ ডলার অর্থ সহায়তা দেওয়ার চুক্তি করে। এর আগে ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১-২৬ সালের জন্য বাংলাদেশ ও ইউএসএআইডির মধ্যে একটি নতুন ডিওএজি (ডেভেলপমেন্ট অবজেকটিভ গ্র্যান্ট অ্যাগ্রিমেন্ট) সই হয়। এর মাধ্যমে ৯৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় ইউএসএআইডি।
ইউএসএআইডির ফান্ড বন্ধের ফলে স্বাস্থ্য খাতে বড় প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে এইচআইভি, ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বড় ঝুঁকিতে পড়বে। এতে এইচআইভি-এইডস, যক্ষ্মা, ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, ম্যালেরিয়া অপুষ্টিজনিত নানা সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
পরিবেশ ও জ্বালানি প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তা উন্নয়নে কাজ করার কথা বলছে ইউএসএআইডি, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সহায়তা করে। সব প্রকল্পই এখন বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রযুক্তি উন্নয়নেও সহায়তা করে তারা। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে ইউএসএআইডির কর্মসূচি পরিচালিত হতো। শিক্ষার্থীদের উন্নত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ করে তারা। এসব প্রকল্প এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
পিকনিকে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল শিক্ষার্থীর
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, জামালপুর
|
ছবি: বার্তা ২৪
জাতীয়
জামালপুরে পিকনিকে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মো. রাশেদুল ইসলাম (১৫) নামে এক দশম শ্রেণীর স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার ছাতারিয়া মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চাঁদ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত শিক্ষার্থী মো. রাশেদুল ইসলাম সরিষাবাড়ী উপজেলার সাতপোয়া ইউনিয়নের চর আদ্রা গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে ও ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্কুল থেকে পিকনিকে গাজীপুরের সাফারী পার্কে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্কুল থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাসটি ছেড়ে দেয়। এ সময় শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বাসের জানালা দিয়ে তার মাথা বের করে থাকে। বাসটি ছাতারিয়া মোড় পৌঁছালে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছে ধাক্কা দিলে ওই শিক্ষার্থী মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত হয়।
পরে গুরুতর আহত অবস্থায় শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলামকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, এটা আমাদের জন্য এক বিধ্বংসী ক্ষতি হল। আজ তাদের আনন্দ করার দিন অথচ দুর্ঘটনায় কত বড় ক্ষতি হল। আমরা গভীরভাবে শোকাহত। এ ঘটনায় বিদ্যালয় মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চাঁদ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কর্তৃপক্ষ বাসটিকে আটক করেছে। খবর পেয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে এসেছি। এ বিষয়ে পরিবার যদি অভিযোগ করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসকের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়ে খাতভিত্তিক সংস্কার ও দেশকে উন্নত করতে কাজ করছে। দেশকে উন্নত করতে হলে কাজের কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশে কাজেরও কোনো অভাব নেই তবে সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দেশের কর্মক্ষম সবাইকে রাষ্ট্রীয়ভাবে কাজ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ঐক্য পার্টি অন্যথায় বেকার ভাতার দাবি করেছে দলটি।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে ‘প্রিয় মাতৃভূমিকে উন্নত দেশে রূপান্তরে সবার মধ্যে ঐক্য সৃষ্টির অপরিহার্যতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় নেতারা এসব কথা বলেন।
এ সময় নেতারা বলেন, দেশের জনসংখ্যার বিশাল একটা অংশ যুবক। চাকরী/কাজ না থাকায় তারা হতাশায় দিনাতিপাত করে নিজেদের সম্ভাবনাকে নষ্ট করছে। এভাবে চলতে থাকলে তারা নানাবিধ অনুৎপাদনশীল কাজে জড়িত হয়ে দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যাবে। দেশের জন্য মারাত্মক বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্র এগিয়ে আসলে তারা বোঝা তো দূরের কথা উল্টো তারা দেশের সম্পদে পরিণত হবে। আর তাই দেশের কর্মক্ষম সবাইকে কাজ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি।
দলটির পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে সব সেক্টরের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার পাশাপাশি প্রবাসীদের দেশে-বিদেশে হয়রানি বন্ধ, বিমানের টিকিটের দাম কমানোসহ ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে।
ঐক্য পার্টির পক্ষ থেকে মতপার্থক্য অক্ষুণ্ন রেখে সর্বজনীন বিষয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করার লক্ষ্যে ঐক্য পার্টির পক্ষ থেকে যে ১১টি দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে তা হলো-
১) দেশে কৃষি বিপ্লব ঘটাতে প্রকৃতির অবারিত সুযোগ থাকার পরও ধানসহ বিভিন্ন শস্য আমদানি করা লজ্জাজনক। এজন্য ধানসহ বিভিন্ন শস্যের উৎপাদন বাড়াতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। পতিত জমির আবাদ বৃদ্ধি ও বিভিন্ন শস্য উৎপাদনে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো গেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করাও সম্ভব। এক্ষেত্রে বিএডিসি'র সঙ্গে শিক্ষকদেরও সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। একইসঙ্গে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য কিনতে হবে। এতে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবে অন্যদিকে সিন্ডিকেট প্রথা ভেঙে যাবে।
২) প্রবাসীদের বিদেশে বসে ভোট দেয়ার সুযোগ দিতে হবে। তাদের ভিসা ফি ও বিমান ভাড়া কমাতে হবে। একইসঙ্গে প্রবাসীদের সরকারি খরচে প্রশিক্ষিত কর্মী হিসেবে তৈরি করতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩) সরকারি দফতরে কাজ করতে গিয়ে সময় অপচয় ও দুর্নীতি বন্ধে সবক্ষেত্রে ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করতে হবে। এই সার্ভিস যথাযথভাবে পালন হচ্ছে কিনা তা কঠোরভাবে তদারকি করতে হবে।
৪) দেশকে ঋণমুক্ত করার উপায় খুঁজে বের করতে হবে। কারণ ঋণগ্রস্ত জাতি আত্মমর্যাদা নিয়ে চলতে পারে না। ঋণের হাত থেকে বাঁচতে সবখাতে কৃচ্ছতা সাধন করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সব মন্ত্রণালয়, সংস্থা সরকারি দফতরের তৃণমূল পর্যন্ত প্রতি বছরের কাজের অগ্রগতি ও অবনতির তথ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫) বেপরোয়া যান চলাচল, হিজরাদের চাঁদাবাজি, শিশু-কিশোরদের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকার হাত থেকে বাঁচাতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারের একটি আন্তরিক ঘোষণাই যথেষ্ট। এতে সরকারের বাড়তি কোনো খরচও হবে না।
৬) উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে সব নাগরিকদের রাজনীতি করার সুযোগ দিতে হবে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন অক্সিজেন দরকার, তেমনি দেশের স্বার্থে জনগণকে রাজনৈতিক সচেতন হতে হবে।
৭) বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিতে দলের শীর্ষ নেতাদের নীতি ও আদর্শে শতভাগ আদর্শায়িত হওয়ার কথা বলা আছে। যা রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বস্তরে গণতন্ত্র নিশ্চিত করা, সৎ ও যোগ্যদের যোগ্যতার মূল্যায়ন করতে হবে। অহংকারী, পরশ্রীকাতর, নেতৃত্বলোভীদের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে রাখা যাবে না। আর সংস্কারের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় চরিত্র সংস্কার না হলে শত সংস্কারেও তেমন কোনো কাজ হবে না।
৮) সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে হবে। কেউ সাম্প্রদায়িক মন্তব্যও যাতে করতে না পারে সে ব্যাপারে রাষ্ট্রকে কঠোর হতে হবে।
৯) অবারিত সুযোগ থাকার পরও সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে মানুষ কাজ পাচ্ছে না। অবারিত সুযোগ কাজে লাগিয়ে কর্মক্ষম নাগরিকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। সরকার এক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে বেকার ভাতা দিতে হবে।
১০) কেউ দাবি করুক বা না করুক, প্রাপ্যতা ও সামর্থ্য বিবেচনা করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে অগ্রাধিকার দিতে হবে। জনস্বার্থকে এড়িয়ে কম গুরুত্বপূর্ণদের চাপে নতি স্বীকার করা যাবে না।
১১) দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে ন্যাশনাল ইন্টিগ্রিটি কমিশন গঠন করতে হবে।
বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরীর সঞ্চালনায় এবং পার্টির চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) আবু ইউসুফ যোবায়ের উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গণফ্রন্টের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মো. আকমল হোসেন, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র ঢাকা উত্তরের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক রেজাউর রহমান তপন, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা প্রতিভা বাকচী, ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক, সাবেক সচিব কাশেম মাসুদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুর রহিম, মেজর আবু রাইহান মো. মাহবুবুল ইসলাম প্রমুখ।
২৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে জামায়াতের অবস্থান
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
|
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে আগামী মঙ্গলবার বেলা ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত গণঅবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
শুক্রবার জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতি এ কর্মসূচির ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকারের মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বিগত ১৩ বছরের অধিক সময় ধরে কারাগারে আটক আছেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক নেতাকর্মী মুক্তিলাভ করেছেন। দেশবাসী আশা করেছিল, চরম জুলুম-নির্যাতনের শিকার জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামও স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে মুক্তিলাভ করবেন। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের প্রায় সাড়ে ৬ মাস অতিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম মুক্তিলাভ করেননি। এতে দেশবাসী হতবাক ও বিস্মিত।’
সফল করার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামের অবিলম্বে মুক্তির দাবিতে আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বেলা ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সম্মানিত আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান। উক্ত গণঅবস্থান কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য আমরা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’
এর আগে বৃহস্পতিবার এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি না দিলে স্বেচ্ছায় কারাবন্দি হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান।
এদিন বিকালে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে ডা. শফিকুর রহমান লেখেন— ‘প্রিয় দলীয় সহকর্মীবৃন্দ ও সম্মানিত দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, ফ্যাসিবাদের নিষ্ঠুর জুলুমের শিকার মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম সাহেব এখনও বন্দি রয়েছেন। একে একে সকল জাতীয় নেতৃবৃন্দ মুক্তি পেলেও তিনি বৈষম্য ও জুলুমের শিকার হয়ে বন্দি জীবনের কঠিন বোঝা বহন করে চলেছেন।
তাকে কারাগারে রেখে বাইরে অবস্থান করা আমার পক্ষে আর একেবারেই সম্ভব নয়। আমরা সরকারকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি। এই জুলুমের প্রতিবাদে এবং জনাব এটিএম আজহারুল ইসলাম এর মুক্তির দাবিতে আমি নিজে গ্রেপ্তার হওয়ার জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে আদালত প্রাঙ্গণে হাজির থাকব।
আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সময় মতো আমাকে যথাস্থানে পাবেন, ইনশাআল্লাহ।’