ঢাকা-আগরতলা-ঢাকা পথে চলাচলকারী শ্যামলী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহাসড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে বাসের সব যাত্রী অক্ষত ছিলেন। এদিকে ঘটনার পর থেকে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়টিকে হামলা চালানো হয়েছে বলে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের সদর উপজেলার চান্দিয়ারা এলাকায় একটি ট্রাকের ওভারটেকজনিত কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় ভ্যানচালক সামান্য আহত হন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, বাসটি বেলা ১১টার দিকে আগরতলা থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বাসটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চান্দিয়ারা এলাকায় আসার পর একটি ট্রাক দ্রুত ওভারটেক করতে চায়। এ সময় বাসটি ইমার্জেন্সি ব্রেক কষে থামানোর চেষ্টা করে ও সড়কের একপাশে সরে পড়ে। পরে বাসটি সড়কের পাশে থাকা একটি তিন চাকার ডেলিভারী ভ্যানকে চাপা দেয়। এতে ভ্যানচালক ইব্রাহিম (৩০) সামান্য আহত হয়। এ নিয়ে ভ্যানচালক ইব্রাহিম ও শ্যামলী পরিবহনের বাস চালক মোঃ আসাদুল হকের মাঝে তর্ক বিতর্ক হয়।
স্থানীয় লোকজন ভ্যানচালক ইব্রাহিমকে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে। খবর পেয়ে খাঁটি হাতা হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রেকারের মাধ্যমে ভ্যান গাড়িটিকে উদ্ধার করে। এ সময় শ্যামলী পরিবহনের কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান ও ডেলিভারি ভ্যান কর্তৃপক্ষের বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষে মীমাংসা করে এবং শ্যামলী বাসটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
এদিকে ঘটনার পর থেকে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমে দুর্ঘটনার বিষয়টি হামলা চালানো হয়েছে উলেখ করে বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
বাসচালক মো. আসাদুল হক বলেন, ‘একটি ট্রাক ওভারটেক করতে গেলে আমি ইমার্জেন্সি ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে যাই। এ সময় পিছনে থাকা একটি তিন চাকার কভার্ডভ্যান ধাক্কা লাগে। এতে ভ্যানটি বাসের পিছনে আটকে যায়। বিষয়টি হাইওয়ে থানা পুলিশকেও অবহিত করা হলে পুলিশ এসে রেকার দিয়ে ভেনটি সরিয়ে নেয়। দুর্ঘটনায় বাসের কোনো ক্ষতি হয়নি কিংবা যাত্রীরা আঘাতপ্রাপ্ত হননি।’
তিনি আরও বলেন, বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের সাথে স্থানীয় সাধারণ মানুষের কোন বাক-বিতণ্ডা বা কোনো রকম ঝামেলা হয়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমে বাসে হামলার খবর দেখে আমিও অবাক হয়েছি।
এ বিষয়ে জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, চারলেন সড়কের নির্মাণকাজ চলায় সড়কটির বিভিন্ন অংশ সরু অবস্থায় রয়েছে। সকালে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহনের বাসটি দুপুরের দিকে চান্দিয়ারা নামক স্থানে দুর্ঘটনা কবলিত হয়। এতে একটি তিন চাকার ভ্যান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় শ্যামলী পরিবহন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ও ভ্যানচালক কর্তৃপক্ষের লোকজন আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করে বাসটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এ ঘটনা নিয়ে কোনরকম হাতাহাতি, হুমকী-ধামকী বা মারামারির ঘটনা ঘটেনি। এটি নিছক একটি দুর্ঘটনা মাত্র। তবে একটি বিষয় অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ছোট্ট দুর্ঘটনাকে রং দিয়ে বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে যা আদৌ সত্য নয়। এখানে অতিরঞ্জিত করার বা সাম্প্রদায়িক গন্ধ খোঁজার কোন সুযোগ নেই। বিদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে খবর আসছে তার সত্য নয়। তারা কেন এমন করছে আমাদের বোধগম্য নয়।