গাজার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে সৌদির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের আহ্বানে সৌদি আরবের রিয়াদে বৈঠকে বসেছিলেন সাতটি আরব দেশের শীর্ষ নেতারা।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান নেতৃত্বে আয়োজিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহামেদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান, জর্ডানের রাজা আবদুল্লাহ, মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল-সিসি, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি, কুয়েতের আমির শেখ মেশাল আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবাহ এবং বাহরাইনের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী সালমান বিন হামাদ আল-খলিফা।
আরব নেতাদের বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা ‘দখল’ পরিকল্পনা, এর বাসিন্দাদের স্থায়ীভাবে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করার পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়া জানানো। এবং ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার যুদ্ধ–পরবর্তী ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঠিক করা।
আলোচনায় মিসরের নেতৃত্বে গাজার জন্য একটি নতুন বিকল্প পুনর্গঠন পরিকল্পনার ওপর তারা আলোকপাত করেন, যাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গাজা দখল ও ফিলিস্তিনি জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার প্রস্তাবের বিপরীতে একটি মানবিক ও স্থায়ী সমাধানের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকের পর সৌদি রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা (এসপিএ) এক বিবৃতিতে এই আলোচনা সম্পর্কে জানায়, ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠকটিতে অংশগ্রহণকারীরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে পরামর্শ করেন।
বিশেষ করে, গাজা সংকট মোকাবিলা ও ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে যৌথ প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। এসপিএ বলেছে, এই বৈঠক মূলত একটি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, যা ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার বহন করে।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, নেতারা আগামী ৪ মার্চ কায়রোতে নির্ধারিত জরুরি আরব শীর্ষ সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়েছেন। আশা করা হচ্ছে, যদি ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি টিকে থাকে, তবে এই সম্মেলনের পর মিসরের নেতৃত্বে গাজার পুনর্গঠনের প্রথম ধাপ শুরু হবে।
এই বৈঠক শুধু রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই নয়, বরং বহু মানুষের জীবনের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে বলে আশাবাদী আরব নেতারা। পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাকে নতুন করে গড়ে তোলার এই প্রচেষ্টা সত্যিই গাজাবাসীর মধ্যে এক নতুন আশার আলো ছড়িয়ে দিবে বরে মনে করেন তারা ।
উল্লেখ্য, আগামী ৪ মার্চ মিসরের কায়রোয় আরব লীগের বৈঠক হওয়ার কথা। শুক্রবারের বৈঠকে উপস্থিত আরব নেতারা আশা প্রকাশ করেন, ওই বৈঠকে তারা গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি বিকল্প পরিকল্পনা হাজির করতে পারবেন।