বাছবিচারহীন গ্রেফতার ও হত্যার অভিযোগ প্রসঙ্গে
সমকালীন বিষয়াবলী নিয়ে ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার’র নিয়মিত আয়োজন ‘দ্য থার্ড ভিউ’-এ আজ প্রকাশিত হয়েছে সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিশেষ নিবন্ধ ‘দ্য ইনডিসক্রিমিনেট অ্যারেস্টস অ্যান্ড মার্ডার চার্জেস’। বার্তা২৪.কম এর পাঠকদের জন্য বাংলায় অনূদিত নিবন্ধটি প্রকাশিত হল:
বিগত শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে প্রধানতম একটি সমালোচনা ছিল আইনের নির্লজ্জ অপপ্রয়োগে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, সমালোচক ও মুক্তমতের গণমাধ্যমকর্মীদের কারাগারে পাঠানো, হয়রানি আর ভয়ভীতি প্রদর্শণ। রাজনৈতিক সুবিধাবাদী এবং স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর একটি অংশের সাম্প্রতিক কার্যকলাপও এমন ধারণা জন্ম দিতে পারে যে, আমরা একই ধরণের আচরণের পুনরাবৃত্তি দেখছি। এতে ‘ফ্যাসিবাদী শাসনের সহযোগী’ তকমাটি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, ব্যক্তিগত শত্রু এবং গণমাধ্যমের একটি অংশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে অত্যন্ত বিপজ্জনক পন্থায়, অগণতান্ত্রিকভাবে এবং আইনের কাঠামোগত অপপ্রয়োগের মাধ্যমে ব্যবহৃত হতে পারে।
পেশায় সহযাত্রী হিসেবে আমি শুরুতেই বলবো সাংবাদিকদের সঙ্গে যা করা হচ্ছে তার কথা। সাম্প্রতিক, অবশ্য সর্বশেষ নয়, পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও রাজশাহীতে অন্তত ১২৯ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ঢাকায় ৬০ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা, খুনের চেষ্টা, দাঙ্গা ও বেআইনি সমাবেশের অভিযোগে ১২টি মামলা হয়েছে। চট্টগ্রামে ৩৩ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও অপহরণের অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে দুটি মামলা। বগুড়ায় ২২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে আটটি মামলা হয়েছে এবং রাজশাহীতে ১৪ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, চাঁদাবাজি ও লাঞ্ছনার অভিযোগে মামলা হয়েছে তিনটি।
উপরোক্ত বিষয়গুলি বিবেচনা করলে দাঁড়ায় আমরা এমন একটি দেশ যেখানে গোটা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক খুনের সন্দেহভাজন আসামি সাংবাদিকরা! কি একটি ভাবমূর্তি! আইনের কী অমোঘ ব্যবহার! গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি কী এক সম্মান প্রদর্শন! এ পর্যন্ত মাত্র চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে বাকিরা সকলেই গ্রেপ্তার বা হয়রানির আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। তারা তাদের কর্মস্থলে যাচ্ছেন না বা সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতে পারছেন না। তারা লুকিয়ে আছেন বা এমনভাবে বসবাস করছেন যেন তারা ‘গৃহবন্দী’। কেন? তাদের অপরাধটি কি?
আমি প্রথমেই স্বীকার করে নিচ্ছি যে, আমার পেশা, যার জন্য আমি ৫২ বছর (মার্চ ১৯৭২ থেকে শুরু করে) উৎসর্গ করেছি, সেটি বাংলাদেশের জন্মের পর থেকেই আত্মঘাতী রাজনীতিকরণের কারণে ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে নৈতিকতা, মূল্যবোধ এবং বস্তুনিষ্ঠতার নিরীখে তা সবচেয়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শেখ হাসিনার শাসনামলে। সাংবাদিকতার ছদ্মবেশে সাংবাদিকদেরই একাংশ নিকৃষ্টতম রাজনৈতিক কর্মী বনে যায়। তাদের ছদ্মবেশ, নির্লজ্জ পক্ষপাতিত্ব এবং আক্রমণাত্মক মনোভাব নৈতিক সাংবাদিকতাকে অত্যন্ত কঠিন করে তোলে। অবশ্য কেউ কেউ তাদের অবস্থানে অনড় থাকতে পেরেছিলেন। ক্ষমতাসীন দলের পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে এবং সাংবাদিকদের একটি অংশ ক্ষমতার নৈকট্য ব্যবহার করে অর্থের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নিজেই একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের সময় স্বীকার করেছেন যে তার পিয়ন, যাকে তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন কিন্তু শাস্তি দেননি, যিনি ৪০০ কোটি টাকার মালিক এবং তিনি তার গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য একটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করতেন। ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা সাংবাদিকরা কী করেছেন এবং তারা যে সম্পদ গড়েছেন এবং এর ফলস্বরূপ তারা যে জনবিদ্বেষ সঞ্চয় করেছেন তা সহজেই অনুধাবন করা যায়।
আমাদের আবেদন হল, তারা যা করেছে-দুর্নীতি, ঘুষ, ক্ষমতার অপব্যবহার, ব্যক্তিগত লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রেস অফিস ব্যবহার করা, আমলাতন্ত্রকে চাপ দেওয়া ইত্যাদি, তার জন্য তাদের অভিযুক্ত করুন। কিন্তু কোনো প্রমাণ ছাড়াই তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনবেন না। আমাদের নিজস্ব অনুসন্ধানে এর কোনো প্রমাণ মেলেনি। তাহলে এটা হচ্ছে কেন?
অন্য সব পেশাজীবী—ডাক্তার, আইনজীবীদের মতো আমরাও আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী হিসেবে বিভক্ত। প্রতিটি পক্ষই নির্দ্বিধায় তাদের নিজ নিজ দল ক্ষমতায় থাকার সময় ক্ষমতার নৈকট্যের সুফল ভোগ করেছে। হাসিনা টানা ১৫ বছর সরকারে থাকায় আওয়ামী লীগপন্থী সাংবাদিকদের মধ্যে দায়মুক্তি আর সীমাহীন সুযোগ-সুবিধা ভোগের প্রবণতা দেখা দেয়। এতে তারা দুর্নীতিতেও আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে যায়।
তাই এখন যা ঘটছে তা হল ‘অন্য পক্ষ’ যারা আওয়ামী শাসনামলে সম্পূর্ণভাবে নিপীড়িত ছিল, তাদের দিন কাটছে আলোক আভায়। আওয়ামী লীগ নন-এমন সাংবাদিকরা এখন ভালো সাংবাদিকতার প্রতীক এবং তাদের বিরোধীরা বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ! সুতরাং তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ! (বিষয়টি এখন যেভাবে ঘটছে তেমনটা আগে কোন পক্ষ কখনোই একে অন্যের প্রতি করেনি।)
আগে যা বলেছি আবারও বলছি: যে কাজের জন্য তারা দোষী তার জন্যই তাদের অভিযুক্ত করুন। কিন্তু বেপরোয়াভাবে, আইনের অযাচিত ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনার মতো প্রহসন করবেন না। এটি দেশে ও সারা বিশ্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সুনামকেই টেনে নামাচ্ছে। কারণ এমন কাজ মানবাধিকার ও আইনের শাসনের আপোষহীন রক্ষক হিসাবে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগত যে খ্যাতি তারই বিরুদ্ধে যায়।
বৃহত্তর চিত্রটি আরও মন্দ। গত ৬ আগস্ট থেকে ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের ৯২,৪৮৬ জন নাগরিককে জড়িত করে অন্তত ১৪৭৪টি মামলা দায়ের করা হয়, যার বেশিরভাগই করা হয় খুনের পাশাপাশি অন্যান্য কিছু অপরাধের অভিযোগ এনে। মোট ১১৭৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে ৩৯০ জন সাবেক মন্ত্রী, এমপি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ পর্যন্ত ৫৯ জন হাই-প্রোফাইল ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে মোট গ্রেফতার করা হয় ৭৭৯ জনকে। কিন্তু অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গ্রেপ্তারের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৭০১৪ জন (জুলাই-আগস্ট সহিংসতা এবং অন্যান্য অপরাধের সাথে সম্পর্কিত) জনে দাঁড়ায়। যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৭৫০০ টিরও বেশি । দ্য ডেইলি স্টারের একটি খবরে প্রকাশিত তথ্যের হিসাবে গ্রেপ্তারের এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
কতিপয় সুনির্দিষ্ট মামলার বিষয়ে গভীর অনুসন্ধান করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়ে, যাতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে কিভাবে এক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার ও রাজনীতিকিকরণ করা হয়েছে। গত ৭ অক্টোবর প্রকাশিত আমাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে সাকিব হাসান (২২) এবং জাহাঙ্গীর আলম (৫০) -কে হত্যার ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পর্কিত ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্টের (এফআইআর) তথ্য অভিন্ন, শুধুমাত্র নিহতদের নাম ও ঠিকানা ভিন্ন। অভিযোগকারী হলেন আবু বকর ( ৫৫), যিনি দাবি করেন যে তিনি বিএনপি’র অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সদস্য; তিনি ২ সেপ্টেম্বর একই ৪৪২ জনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেন। তিনি কে, সে সম্পর্কে নিহতদের পরিবারের কোনো ধারণাই ছিল না। মামলার বিষয়টি জানালে তারা বিস্মিত হন। ‘আমরা আমাদের বাবাকে হারিয়েছি, আমাদেরই মামলা করা উচিত ছিল। অথচ এই ব্যক্তি আমাদেরই প্রতিবেশীদের মধ্যে কয়েক শ' মানুষের বিরুদ্ধে মামলা করে দিয়েছেন। এখন এই মানুষগুলো বিনা কারণে আমাদের ঘৃণা করে,’ এমনটাই ছিলো মামলা দায়েরকারী আবু বকরের বিষয়ে নিহত জাহাঙ্গীরের মেয়ের বয়ান। তিনি আরও বলেন, “আমি আমার বাবার বিচার চাই। যে ব্যক্তি আমাদের না জানিয়ে মামলা করেছে আমরা তারও শাস্তি চাই”। নিহত সাকিবের বাবা মোর্তোজা আলমও বলেন, মামলার কথা শুনে তিনি অবাক হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পুলিশ আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে। কিন্তু অভিযোগ হয়েছে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।’
পত্রিকার অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে আসে ২০ ও ২১ আগস্ট সুমন সিকদার (৩১), হাফিজুল সিকদার (২৮) এবং সোহাগ মিয়া (৩০) হত্যার ঘটনায় বাড্ডা থানায় দায়ের করা তিনটি মামলার বৃত্তান্ত। তিনটি মামলার এফআইআর ছিলো একই রকম। এবং সবগুলোতেই ১৭৮ জনকে আসামি করা হয়। অথচ ঘটনা তিনটি ঘটেছে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ।
লাভলু মিয়া (৪১)-কে ৫ আগস্ট ঢাকায় গুলি করে হত্যা করা হয়। এক মাস পর, তার চাচাতো ভাই রিকশাচালক দুখু মিয়া উত্তরা পূর্ব থানায় ২২১ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যাদের মধ্যে ২১০ জন তাদের নিজ শহর রংপুরের বাসিন্দা। অভিযুক্তরা বেশিরভাগই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।
দ্য ডেইলি স্টার ঢাকায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের সাথে সম্পর্কিত আরও পাঁচটি মামলার তথ্য খুঁজে পেয়েছে যার আসামি কয়েক শত- যারা নিহতদের নিজ নিজ জেলার বাসিন্দা এবং সেইসঙ্গে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মী।
২০ জুলাই, পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সদস্যরা গুলি চালালে মুহাম্মদ হাবিব (৪৫) নিহত হন। তার স্ত্রী, চার সন্তানের জননী আয়েশা ২৮ আগস্ট ৫৭ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন যাদের মধ্যে ৫০ জনই কুমিল্লার চান্দিনার বাসিন্দা। যোগাযোগ করা হলে আয়েশা বলেন, ‘আমি শুধু অভিযোগে স্বাক্ষর করেছি। কাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে তা আমার জানা ছিল না... আমি শুধু আমার স্বামীর বিচার চাই।’ গত ৫ আগস্ট জামালপুরের বকশীগঞ্জের আনোয়ার হোসেন আয়নাল তার ভাই ফজলুল করিমের মৃত্যুর ঘটনায় একটি হত্যা মামলা করেন। আসামি ৩৯ জন, যাদের মধ্যে ২৪ জন তার নিজ গ্রামের।
মামলাগুলির এমন দুর্বল ভিত্তি, প্রতিটিতে গড়ে ২০ থেকে ২০০ জন আসামি রয়েছে- অনেক ক্ষেত্রে, অভিযুক্তদের বেশিরভাগই সেই এলাকার বাসিন্দা যেখানে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা ফিরে আসার পরিকল্পনা করছে- যা রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যকেই নির্দেশ করে। ভুক্তভোগীদের পরিবারের ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও এমনটি ঘটছে। অনেক ক্ষেত্রে, তাদের হয় চাপ দেওয়া হয় বা ক্ষতিগ্রস্তদের বলা হয় যে তারা মামলাটি করলে ন্যায়বিচার পাবেন।
১০অক্টোবর প্রকাশিত আমাদের প্রতিবেদন অনুসারে, জুলাই-আগস্টে সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের নজরদারি বাড়াতে এবং গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সদর দফতর এই মাসের শুরুতে এসপি এবং মেট্রোপলিটন কমিশনারদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে। খুলনা রেঞ্জ পুলিশের একজন পরিদর্শক বলেন, “আমাদের গ্রেপ্তার বাড়ানোর এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের আ.লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।" অপর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, "নির্দেশনায় প্রতিদিনই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সমর্থক ও নেতাদেরসহ লোকজনকে গ্রেপ্তারের জন্য বলা হয়েছে।"
যাকে তাকে গ্রেফতারের এমন অস্পষ্ট আদেশ আইনের অপপ্রয়োগের এক নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া। এরই মধ্যে না হয়ে থাকলেও শিগগিরই এই প্রক্রিয়া চাঁদাবাজি, ঘুষ এবং সাধারণ মানুষের হয়রাণির উৎসবে পরিণত হবে। হাসিনার শাসনামলেও পুলিশ এই কাজটি করেছে।
আমরা জোর দিয়ে আবার বলছি যে, বিগত শাসনামলের প্রকৃত অপরাধীদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। তবে একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকেও যেনো হয়রানি করা না হয়। মানবাধিকার, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার হল জুলাই-আগস্টের গণজাগরণের স্তম্ভ। অনুগ্রহ করে এমন অবস্থা তৈরি করবেন না যেখানে তার লঙ্ঘনটাই স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মানবাধিকারের সমর্থক হিসেবে অধ্যাপক ইউনূসের খ্যাতি ‘দরিদ্রদের ব্যাংকার’ হওয়ার জন্য তার খ্যাতির মতোই শক্তিশালী এবং এটা তিনি অর্জন করেছেন। তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দূরতম অভিযোগটিও ওঠা উচিত নয়।
মাহফুজ আনাম: সম্পাদক ও প্রকাশক, দ্য ডেইলি স্টার
ভাষান্তর: মাহমুদ মেনন, এডিটর-অ্যাট্-লার্জ, বার্তা২৪.কম