আজ বিশ্ব কিডনি দিবস। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচিতে দিবসটি পালিত হচ্ছে। প্রতি বছর মার্চের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার দিবসটি পালিত হয়। এ বছর ‘আপনার কিডনি ঠিক আছে কি? তাড়াতাড়ি পরীক্ষা করুন, কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা করুন’ এ প্রতিপাদ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন।
দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বিএসএমএমইউ) বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করেছে ইনসাফ বারাকাহ কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতাল। ক্যাম্পে ডাক্তাররা বিনামূল্যে রোগীদের চিকিৎসা পরামর্শ দেবেন। কিডনি সম্পর্কিত সিরাম ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা ফ্রি করা হবে। মাত্র ১২০০ টাকায় ৫টি পরীক্ষা প্যাকেজে (আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি, সিবিসি, ইউরিন আরই এবং সিরাম ক্রিয়েটিনিন) হেলথ চেকআপ করবে। পাঁচজন হতদরিদ্র রোগীকে এক বছর পর্যন্ত ডায়ালাইসিস ফ্রি করা হবে (মেডিসিন ছাড়া)।
বিশ্বের প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষ কোনো না কোনো ভাবে এ রোগে আক্রান্ত। দারিদ্র্য, অসচেতনতা, চিকিৎসাসেবার অপ্রতুলতা এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে রক্ত পরিশুদ্ধ হয় না। রক্তে বিষাক্ত ও অপ্রয়োজনীয় উপাদান বাড়তে থাকে। যা ত্বকে চুলকানি ও র্যাশ তৈরি করে। গরম আবহাওয়ার মধ্যে শীত অনুভূত হওয়াও কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। কিডনি সমস্যায় রক্ত পরিশুদ্ধ হতে পারে না। যার কারণে মুখ, চোখের চারপাশ, পায়ের গোড়ালি হঠাৎ অস্বাভাবিকভাবে ফুলে ওঠে।
অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, স্থূলতা, নেফ্রাইটিস, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, ব্যথানাশক ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার, জন্মগত ও বংশগত কিডনি রোগ, মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ ও পাথুরে রোগী কিডনি রোগের কারণ।
উল্লেখ্য, এই রোগে প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার কিডনি রোগী ডায়ালাইসিসের ওপর নির্ভরশীল হয়। ১৯৯০ সালে এ রোগ ১৯তম স্থানে থাকলেও বর্তমানে ৭ম স্থানে রয়েছে। এ রোগের মারাত্মক পরিণতি, অতিরিক্ত চিকিৎসা খরচ এবং চিকিৎসা ব্যয় সাধ্যাতীত হওয়ায় সিংহভাগ রোগী প্রায় বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করেন।