বরিশালে জলাতঙ্কের প্রাদুর্ভাব, ভ্যাকসিন সংকটে বিপাকে রোগীরা

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল | 2025-02-26 15:32:18

দক্ষিণাঞ্চলে উদ্বেগজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে জলাতঙ্ক রোগী। যার ফলে গোটা বরিশাল জুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তবে, চিকিৎসকদের মতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই, কারণ জলাতঙ্কের চিকিৎসা বর্তমানে সরকারিভাবে প্রদান করা হচ্ছে।

তবে, চাহিদা অনুযায়ী ভ্যাকসিন না পাওয়া এবং বেসরকারিভাবে চিকিৎসা নেওয়ার কারণে রোগীরা অতিরিক্ত অর্থ ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভাগের ছয়টি জেলা শহর ও ৪২টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে, ভ্যাকসিনের অভাব থাকায় বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন অধিকাংশ রোগী।

বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ২০ হাজার ১৭৮ জন জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে, প্রতিদিন গড়ে ৫৯ জন রোগী জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নিয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত বেশিরভাগ রোগী বিড়ালের কামড় বা আঁচড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১৬ হাজার ৬৬৫ জন এমন রোগী ছিলেন, যাদের অধিকাংশই বিড়ালের কামড়ে বা আঁচড়ে আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, কুকুরের কামড় বা আঁচড়ে আক্রান্ত হয়ে ৩ হাজার ৯০৩ জন রোগী ভ্যাকসিন নিয়েছেন। প্রতিদিন গড়ে ১১ জন কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

চিকিৎসকদের মতে, জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত রোগীদের প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ গ্রহণের হার তুলনামূলকভাবে কম। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ২ হাজার ১৭৪ জন রোগী প্রথম ডোজ গ্রহণ করলেও, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ গ্রহণকারীর সংখ্যা কম ছিল। ফেব্রুয়ারিতে ১ হাজার ৭৯৫ জন আক্রান্ত হলেও, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজের গ্রহণকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল।

বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও, ডাক্তার মলয় কৃষ্ণ বড়াল বলেন, জলাতঙ্ক সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ছে, ফলে সামান্য আঁচড়েও মানুষ জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। তবে, ভ্যাকসিনের সংকট নেই, তবে সংরক্ষণের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় সরবরাহে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।

জলাতঙ্কের সবচেয়ে ভয়াবহ লক্ষণ হলো ‘এরোফোবিয়া’ (বাতাসের ভয়) এবং ‘হাইড্রোফোবিয়া’ (পানির ভয়)। এই রোগের আক্রান্তরা আসলে বাতাস বা পানি থেকে ভয় পান না, বরং তাদের মস্তিষ্ক একটি ভ্রম সৃষ্টি করে, যার ফলে তারা এই উপাদানগুলোর প্রতি ভয় অনুভব করে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর