বাসে ডাকাতি ও যৌন নির্যাতনের ঘটনার মূলহোতাসহ গ্রেফতার ২

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল | 2025-02-25 15:32:03

চলন্তবাসে ডাকাতি ও নারীদের যৌন নির্যাতনের ঘটনার মূলহোতা আলমগীরসহ তার সহোদর ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান।

এদিন ভোরে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার সাবুপাড়া গ্রাম ও ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন ধানসোনা পশ্চিম পলাশবাড়ি এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ। এর আগে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ঘটনার মূলহোতা আলমগীর শেখ (৩৪) ও তার সহোদর ভাই সহযোগী রাজিব হোসেন (২১)। তারা মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার আমতলী গ্রামের খোরশেদ আলম শেখের ছেলে।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসপি জানান, মহাসড়কে আন্তঃজেলা বাস ডাকাতির ঘটনার মাষ্টার মাইন্ড ডাকাত সর্দার আলমগীরকে গুপ্তচরের তথ্য মোতাবেক গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার হেফাজতে থাকা লুণ্ঠিত ৪ হাজার ২১০ টাকা ও ৫২টি রূপার আংটি উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি মামলাসহ মাদক মামলা রয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলমগীর জানায়, ঘটনায় লুণ্ঠিত মোবাইল, ব্যবহৃত ছুরি ও নারী যাত্রীদের কাছ থেকে লুণ্ঠন করা অ্যামিটেশনের গহনা তার আপন ভাই রাজিব হোসেনের কাছে জমা রেখেছে। পরবর্তীতে আলমগীরের দেওয়া তথ্যমতে রাজিবকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার হেফাজতে থাকা বিভিন্ন মডেলের ১০টি মোবাইল, নারী যাত্রীদের হাত থেকে লুণ্ঠন করা দুই জোড়া মোটা ও তিন জোড়া চিকন অ্যামিটেশনের চুড়ি, তিনটি ব্যাগ, তিনটি এনআইডি কার্ড, একটি এটিএম কার্ডসহ ঘটনায় ব্যবহৃত দুইটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।

এদিকে, গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকার সাভারের বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ। এদের মধ্যে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে সবুজ (৩০) ও ঢাকার সাভারের টান গেন্ডা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফ (২৮) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আর মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের বদর উদ্দিন শেখের ছেলে শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল মুহিত (২৯)কে পাঁচদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল মুহিতের বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায় একটি ও ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানায় একটি বাস ডাকাতি মামলাসহ মোট পাঁটি মামলা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাবতলী থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের একটি (ময়মনসিংহ-ব-১১-০০৬১) চলন্তবাসে ডাকাতি ও নারীদের যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাসের যাত্রী ওমর আলী বাদি হয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ পর্যন্ত ঘটনার সাথে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মির্জাপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. আতিকুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাকে মির্জাপুর থানা থেকে টাঙ্গাইলের পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। এছাড়াও নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলামকে প্রত্যাহার (ক্লোজড) করা হয়েছে। পরে তাকে জেলা পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত হতে বলা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর