বাগেরহাটে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় লবণাক্ত মাটিতেও জেলার বোরো চাষে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত বছরের তুলনায় অধিক ফলনের আশায় দিন গুনছেন কৃষকরা।
জানা যায়, ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত জেলায় বোরো রোপণের কাজ ৯৩ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। কৃষকরা এখনও ব্যস্ত সময় পার করছেন। ইতিমধ্যে জেলায় ৬২ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে বোরোর পাতো (চারা) রোপণ করা হয়েছে।
ফকিরহাটের সফল চাষি আমির হোসেন জানান, গত বোরো মৌসুমে তার আবাদ করা প্রতি ২ হেক্টর জমিতে গড়ে ৩৪০ মণ করে বোরো ধান উৎপাদিত হয়েছে। চলতি মৌসুমে হেক্টর প্রতি ২০ মণ ধান বেশি পাবেন বলে আশা করছেন।
জেলার গোপালপুরের কৃষক সরোয়ার বলেন, গত মৌসুমে ৩ হেক্টর জমিতে বোরো চাষে ধান পেয়েছেন ৫১০ মণ। তবে এবার ৪ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করে আরও বেশি ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন।
পদ্মনগরের কৃষক জলিল জানান, গত মৌসুমে তিনি ৬ হেক্টর জমিতে বোরো চাষে পেয়েছেন ১ হাজার ২০ মণ ধান। আগামী এপ্রিলে আরও বেশি ফলনের আশায় আছেন।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মিজানুর রহমান বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সার কীটনাশক সময় মতো ব্যবহার করায় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বাম্পার ফসল ফলবে বলে আশা করছি।
তিনি জানান, প্রতি হেক্টর জমিতে বোরো চাষে কৃষক পেয়েছেন ৪.৭৮ টন। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ইরি বোরো আবাদ হয়েছিল ৬২ হাজার ৭১৪ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৮৮ হাজার ২১ মেট্রিক টন চাল।
বলেশ্বর চর এলাকার কৃষক ইসমাইল জানান, বোরো ধানের চারা রোপণের পর ১৪০ থেকে ১৪৫ দিনেই ফসল ঘরে উঠবে। বাগেরহাট জেলার মধ্যে ফকিরহাটে বোরো চাষের অধিক ফলনে খুশি সেখানকার কৃষকরা।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ও বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় মাটিতে লবণের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ফলে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে জেলায় ৬২ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২৫০ হেক্টর বেশি। তিনি এ বছর জেলায় ৩ লাখ ৭৭৫ মেট্রিক টন বোরো ধান উৎপাদন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।