যুবরাজের ক্রেতা নেই
-
-
|

গাবতলী পশুর হাটে ৫৪ মণ ওজনের গরু যুবরাজ/ ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
গাবতলী গরুর হাট থেকে: হৃষ্টপুষ্ট শরীরে, মিশকালো গায়ের চামড়া যেন আভিজাত্যের ছাপ। কপালে খানিকটা সাদা চামড়া রাজ তিলকের মতো। প্রথম যেদিন গাবতলী নিয়ে আসা হয়েছিল, সেদিন থেকেই সবার আকর্ষণ তাকে নিয়ে।
বলছিলাম গরু ‘যুবরাজের’ কথা। ঝিনাইদহ থেকে গাবতলী কোরবানির পশুর হাটে নিয়ে আসলেও তার কোনো ক্রেতা নেই। হাটে যুবরাজের সঙ্গী সাথীদের অনেকেই বিক্রি হয়ে গেলেও যুবরাজের দাম মেটানোর মতো ক্রেতা এখনো পাওয়া যায়নি।
যুবরাজের সাথে বাদশাকে ফ্রি দিয়েও তাকে বিক্রি করতে না পেরে হতাশ গরুর ব্যাপারীরা। যুবরাজকে কিভাবে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন সেই দুঃশ্চিন্তা তাদের।
ঝিনাইদহের আব্দুল্লাহ অ্যাগ্রো অ্যান্ড ডেইরি ফার্ম থেকে গাবতলী হাটে আনা হয়েছে যুবরাজ, সাহেব, বাদশা, রবিসহ পাঁচটি গরু।
৪ আগস্ট ঝিনাইদহ থেকে সেগুলো গাবতলীতে আনা হয়। ৫৪ মণ ওজনের যুবরাজের দাম চাওয়া হয়েছে ৪০ লাখ টাকা। দাম দিয়ে কিনতে না পারলেও হাটে আসা ক্রেতা-দর্শনার্থীরা গরুটিকে একনজর দেখতে ভিড় করছেন।
জানা গেছে, ঝিনাইদহে বাছুর অবস্থায় এক লাখ ৫৫ হাজার টাকায় যুবরাজকে কেনা হয়। প্রায় সাড়ে তিন বছর লালন-পালন করে এবার হাটে আনা হয়েছে ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি।
আরও পড়ুন: ক্রেতাশূন্য পশুর হাট, হতাশ বিক্রেতারা
এগ্রো ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী শাহে আলম বলেন, ‘যুবরাজকে দানাদার খাবার বেশি খাওয়ানো হয়। ধান, গম, ভুট্টা, খেসারি মিশিয়ে প্রতিদিন দুই বেলা করে খাওয়ানো হয়। ১৭ কেজি সকালে ও রাতে ১০ কেজি খাবার খাওয়ানো হয় তাকে। প্রতিদিন ৪২ কেজি করে ঘাসও খায় যুবরাজ। নিয়মিত খৈল-ভুসি ছাড়াও প্রতিদিন আট-নয়শত টাকার পাকা কলা খাওয়ানো হয় তাকে। প্রতিদিন অন্তত ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকা খরচ হচ্ছে যুবরাজের পেছনে।’
রোববার (১১ আগস্ট) বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, যুবরাজকে ঘিরে উৎসুক জনতার ভিড়। গরুটির আকার, দাম এসব কিছু জানার কৌতূহল তাদের।
যুবরাজের তত্ত্বাবধানে থাকা হাফিজুর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘রোববার সাত দিন হলো আসছি। অথচ কোনো ক্রেতা নেই। কেউ দামই বলে না। অনেক আশা নিয়ে প্রথমবারের মতো গরু নিয়ে গাবতলীতে এসেছি। কিন্তু একদম হতাশ। খামারেই যুবরাজের দাম ২১ লাখ টাকা উঠেছিল।’
রোববার রাত ১২টার মধ্যে যুবরাজ বিক্রি না হলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হবেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আট জন মানুষ এখানে থাকতে খাইতে এক লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে। যাওয়া-আসার ভাড়া আছে।’