রাজশাহীতে ট্রাক ও অটোরিকশার সংঘর্ষে মো. মিজান (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে কাটাখালী বাজারে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু কাটাখালী থানার সমসাদিপুর গ্রামের আশরাফুল আলীর ছেলে।
বিজ্ঞাপন
কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর কাটাখালী থানাধীন কাটাখালী বাজার এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অটোরিকশা থেকে পড়ে গিয়ে ট্রাকচাপায় পিষ্ট হয়ে মো. মিজান নামে এক শিশু নিহত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
বিজ্ঞাপন
ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহত শিশুর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পুলিশের ৫৩ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জন অতিরিক্ত ডিআইজি, ৩৩ জন পুলিশ সুপার এবং একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তা রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ অধিশাখা থেকে জারি করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে তাদের বদলির কথা জানানো হয়।
বদলি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে অতিরিক্ত ডিআইজি ও পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তারা রয়েছেন। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান।
ঝালকাঠির রাজাপুরে দেশের বিভিন্ন স্থানে হত্যা, ধর্ষণ, চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়া, ধর্ষকদের শাস্তি প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড ও সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে পৃথক পৃথক স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় বরিশাল- খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে মানববন্ধন করেন আলহাজ্ব লালমোন হামিদ মহিলা কলেজের সাবেক ও বর্তমান ছাত্রীরা।
মানববন্ধনে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে রাজপুরের সকল ছাত্র জনতার ব্যনারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদে সমাবেশ করেন ছাত্র ও সাধারন জনতা শহরে প্রতিবাদ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রদান প্রদান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজাপুর থানার সামনে এসে মানববন্ধন করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন মোস্তাফিজুর রহমান ও সানজিদা আক্তার। তারা বলেন, অতি দ্রুত ধর্ষকদের শাস্তি প্রকশ্যে মৃত্যুদণ্ড করতে হবে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে হবে । অন্যথায় জুলাই আগষ্টের মতো ছাত্র জনতাদের নিয়ে আবারও রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
সেনাপ্রধান কোনো কথা না বুঝে বলেননি: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
|
ছবি: সংগৃহীত
জাতীয়
পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন হলে গত মঙ্গলবার বিশেষ অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের বক্তব্যের বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, তিনি (সেনাপ্রধান) কোনো কথা না বুঝে বলেননি।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি'র প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নিজেরা কাঁদা–ছোড়াছুড়ি, মারামারি ও কাটাকাটি করলে দেশ ও জাতির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে বলে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক অনুষ্ঠানে সতর্ক করেছেন সেনাবাহিনীর প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। এই দেশ আমাদের সবার উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবাই সুখে-শান্তিতে থাকতে চাই। আমরা চাই না হানাহানি, কাটাকাটি, মারামারি।’
সেনাপ্রধানের এই বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সেনাপ্রধান আমার জন্য অনেক উঁচু স্তরের লোক। তিনি একটি বাহিনী চালাচ্ছেন। তিনি কোনো কথা না বুঝে বলেননি। বাকিটা ইন্টারপ্রেশন কী আপনারা জানুন। আমি যতটা ওনাকে চিনি ভেরি স্ট্রেট ফরওয়ার্ড ম্যান। যা বলার মানুষের মুখের ওপর বলার মতো লোক।
উপদেষ্টা বলেন, ‘উনি কী বলেছেন না বলেছেন সে ব্যাখ্যা আমি দিতে পারবো না। সেটা উনিই দিতে পারবেন।’
বরিশালের সবচেয়ে ব্যস্ততম বাণিজ্যিক এলাকা পোর্ট রোডের করুণ দশা যেন কারও নজরে আসছে না। নগরীর ফলপট্টি মোড় থেকে ছোট লঞ্চঘাট পর্যন্ত ৮০০ মিটার সড়ক দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সংস্কারের অপেক্ষায় থাকলেও নৌ বন্দর কর্তৃপক্ষের বাধার কারণে কাজ হচ্ছে না।
পোর্ট রোডের এই অংশের দায়িত্ব নৌ বন্দর কর্তৃপক্ষের হলেও তারা নতুন জেটি ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের মতো প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যস্ত, কিন্তু সড়কটি মেরামতের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। সিটি করপোরেশন বহুবার সড়কটি সংস্কার করতে চাইলে নৌ বন্দর কর্তৃপক্ষের বাধার সম্মুখীন হয়েছে।
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী আব্দুল মোতালেব বলেন, আমরা একাধিকবার নৌ বন্দর কর্তৃপক্ষকে নোটিশ দিয়েছি, কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বরং ঐতিহ্যবাহী পাইকারি কাঁচা বাজারের একটি বড় অংশ নিজেদের জায়গা দাবি করে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে। এখন সেখানে নতুন জেটি ও প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের কাজ করছে, যা ছোট নৌযান চলাচলে সমস্যা তৈরি করবে।
নৌ বন্দর কর্তৃপক্ষ যদিও বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে সড়ক সংস্কার করা হবে, কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই হয়নি। নৌ বন্দরের সাবেক উপপরিচালক আব্দুর রাজ্জাক এর আগেও বলেছিলেন, সড়কটির টেন্ডার হয়ে গেছে, নৌ প্রকৌশল বিভাগ এটি নিয়ে কাজ করছে।
কিন্তু বর্তমান উপপরিচালক শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা জানান, চরকাউয়া খেয়াঘাট থেকে স্টিমারঘাট পর্যন্ত ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে, যার অধীনে নতুন জেটি তৈরি হবে। সেই কাজের সঙ্গেই পোর্ট রোডের সড়ক সংস্কারের কাজ ধরা হয়েছে। তবে বিস্তারিত জানতে নৌ প্রকৌশল বিভাগই ভালো বলতে পারবে।
তবে নৌ প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল হুসাইন জানিয়েছেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে কাজ হচ্ছে, তারা এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে।
বরিশালের পাইকারি কাঁচা বাজার দেশের অন্যতম বৃহৎ বাজার, যেখানে প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে শুরু করে ভোর পর্যন্ত পণ্য ওঠানামা হয়। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, জেটি নির্মাণের কারণে তাদের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
পাইকারি বাজার সমিতির একজন মামুন হাওলাদার নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, আগে ঘাটে মালামাল তুলতে ২০ টাকা খরচ হতো, এখন ৫০ টাকা খরচ হচ্ছে। কারণ নৌকা এখন আর ঘাটে ভিড়তে পারে না। দূরে খেয়াঘাটের একাংশে নৌকা ভেড়াতে হচ্ছে, ফলে মাথায় করে মালামাল আনা-নেওয়া করতে কুলিদের মজুরি ও পরিশ্রম বেড়ে গেছে। এর প্রভাব সরাসরি কাঁচাবাজারের পণ্যের দামে পড়ছে, যা ভোক্তাদের জন্য বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বরিশালের নদী গবেষক ও সুজন বরিশালের প্রতিনিধি রফিকুল আলম বলেন, নদীর জলসীমা বা ফোরসোর ব্যবহার করে ভবন বা জেটি নির্মাণের অধিকার জেলা প্রশাসনেরও নেই। এজন্য অবশ্যই নদী কমিশন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি লাগবে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সেই অনুমতি আছে কিনা, তা জানা জরুরি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত করা হবে।
এই প্রকল্পের আওতায় কী ধরনের হচ্ছে এবং তা যথাযথ অনুমোদন নিয়ে ককাজরা হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। তবে ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি টানা দুই দিন চরকাউয়া খেয়াঘাট এলাকায় ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা বা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে, স্থানীয়রা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির সংস্কার কাজ দ্রুত শুরু না হলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে। বরিশালবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি সড়ক সংস্কার করা হলেও প্রশাসনিক জটিলতায় তা আলোর মুখ দেখছে না। এখন দেখার বিষয়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কখন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।