সোহাগ ফিরলেন তবে নিথর দেহে
-
-
|

ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের বাড়িতে সোহাগের মরদেহ
চোখের চিকিৎসার শেষে কলকাতা থেকে রোববার (১৮ আগস্ট) ফেরার কথা ছিলো মাঈনুল হাসান সোহাগের। সোহাগ গ্রামের বাড়িতে ফিরলেন তবে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে নিথর দেহে।
গতকাল সড়ক দুর্ঘটনায় খবর শুনে আকাশ ভেঙে মাথায় পড়ে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের। শোক লুকানোর ভাষায় হারিয়ে ফেলেছেন তারা। নির্ঘুম রাত পার করে সকাল থেকে ছেলের নিথর দেহের অপেক্ষায় প্রহর গুণছিলেন।
আরও পড়ুন: কলকাতায় নিহত ২ বাংলাদেশির লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স রওনা দেবে রাত ২টায়
রোববার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১ টায় অ্যাম্বুলেন্সে ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ভুটিয়ারগাতি গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছায় সোহাগের মরদেহ। শুরু হয় শোকের মাতম।
মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স দেখে বাড়িতে বৃদ্ধ মা-বাবা, স্ত্রী, ভাই-বোন কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বজনদের আহাজারিতে শোকে স্তব্ধ হয়ে ওঠে বাড়ির পরিবেশ।
কলকাতার শেক্সপিয়ার সরণিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সোহাগের মরদেহ আসাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে এলাকাবাসীর ভিড় ছিলো। বাবা-মায়ের আহাজারি দেখে উপস্থিত সবাইকে চোখ মুছতে দেখা যায়।
এদিকে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাদ জোহর জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হবে। সকালে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে মরদেহ বাংলাদেশে আনা হয়। তার চাচাতে ভাই জিহাদ মরদেহ গ্রহণ করেন।
চোখের সমস্যা নিয়ে বুধবার কলকাতার অ্যাপোলো হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে যান সোহাগ। আজ তার দেশে ফেরার কথা ছিল। সোহাগ গ্রামীণফোনের ঢাকার মতিঝিল এলাকার এরিয়ায় ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার মধ্যরাতে বৃষ্টির কারণে কলকাতার শেক্সপিয়র সরণির একটি পুলিশ বক্সে দাঁড়িয়ে ছিলেন সোহাগ, তার চাচাতো ভাই জিহাদ কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার চাদোট গ্রামের মুন্সী আমিনুল ইসলামের মেয়ে ফারজানা ইসলাম তানিয়া। এ সময় শেক্সপিয়র সরণি ধরে বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের দিক থেকে কলামন্দিরের দিকে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড গতির একটি জাগুয়ার সজোরে ধাক্কা মারে একটি মার্সিডিজকে। এরপর জাগুয়ারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সোহাগ ও তানিয়াকে চাপা দেয়। সেখান থেকে তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত হয় মার্সিডিজের চালক ও আরোহী।
আরও পড়ুন: কলকাতায় গাড়িচাপায় ২ বাংলাদেশির মৃত্যু, ঘাতক গ্রেফতার