অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং এর মাধ্যমে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেয়ার কথা ছিল উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কিন্তু তারা আগামীদিনের সরকারের সব কাজ তাদের দায়িত্বে নিয়ে নিচ্ছে।
সোমবার (১৭ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য আয়োজিত 'ফ্যাসিবাদের অবসান এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো বিনির্মাণে রাজনৈতিক দলের করণীয়' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনন। আমরা সেটাকে দীর্ঘায়িত করছি, বিলম্বিত করছি এবং কম্পলিকেটেড করছি। এখন মনে হচ্ছে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশের আগামীদিনের স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি, এরপরও যদি কিছু থাকে আর সবকিছুর দায়িত্ব তারা নিতে চাচ্ছে।
আমার কাছে মনে হচ্ছে আগামী দিনে নির্বাচিত সরকারের হাতে খুব বেশি কিছু করার থাকবে না। তাদের কোনো দায়িত্বও নাই বলে মন্তব্য করে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জনগণ তাদের (নির্বাচিত সরকার) যে ম্যান্ডেট দিবে যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি নির্বাচিত সরকার জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকে, জবাবদিহি থাকে একটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির মাধ্যমে, তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে, তাদের নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে, জনগণের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে। কিন্তু সবকিছুর অনুপস্থিতিতে মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী, তারা আগামীদিনের সরকারের সব কাজ তারা তাদের দায়িত্বে নিয়ে নিচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা সবাই একটি উদ্দেশ্যে স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করেছি। সে উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের মানুষের যে মালিকানা সে কেড়ে নিয়েছিল, রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল; এগুলো বাংলাদেশের মানুষের কাছে মালিকানা ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে আমরা আবার ফিরে পাব। এটা সকলের মধ্যে ঐকমত্য ছিল এবং এখনো আছে। কিন্তু কেন জানি মনে হচ্ছে আমরা সেইদিকে আর নেই।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, জনগণের মালিকানা, রাজনৈতিক, গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা হচ্ছে। একটি জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের হাতে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে গণতান্ত্রিক অর্ডার বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার যে কাজটা সে কাজটা পিছিয়ে যাচ্ছে। সে কাজটা এগিয়ে যাচ্ছে না, পিছিয়ে যাচ্ছে। এটাই হচ্ছে আজকে জনগণের উৎকণ্ঠা, কেন পিছিয়ে যাচ্ছে? ।
তিনি বলেন, যে কাজগুলো নির্বাচিত সরকারের করার কথা, নির্বাচিত সংসদের করার কথা, সংসদের আলোচনার মাধ্যমে করার কথা; আজকে মনে হচ্ছে সেগুলো কিছু লোকের হাতে চলে যাচ্ছে। তাদের দায়িত্বে চলে যাচ্ছে, তারাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর যে ভূমিকা সেগুলোও আজকে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার যে আন্দোলন সেটা এখনো শেষ হয়নি। যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হবে ততক্ষণ আপনারা মনে করবেন বাংলাদেশে থেকে স্বৈরাচার বিদায় হয়নি।
এসময় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকসহ গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের নেতারা।