২ দফা জানাজা শেষে চিরনিদ্রায় শায়িত আছিয়া

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মাগুরা |

মাগুরায় শিশু আছিয়া মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেল মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়া। তার প্রথম জানাজা বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) মাগুরার নোমানী ময়দানে রাত ৭টা ১৫ মিনিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জানাজায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ অহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশে পরে সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির হাসনাত আব্দুলাহ, সারজিস আলম, জেলার বিভিন্ন রাজনৈকিত নেতৃবৃন্দসহ হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

পরে এশার নামাজ শেষে রাতে স্থানীয় সোনাইকুন্ডি সরকারি প্রাথমিক বিদ‌্যালয় মাঠে ২য় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সোনাইকুন্ডি সম্মিলিত কবরস্থানে আছিয়াকে দাফন হয়।


এর আগে সন্ধ‌্যা ৬টা২০ মিনিটে সামরিক বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে করে শিশু আছিয়ার লাশ নিয়ে মাগুরা স্টেডিয়ামে নামে। এসময় লাশের সাথে সরকারের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ও আছিয়ার মা আয়েশা আকতার ছিলেন। মাগুরায় লাশ গ্রহন করেন জেলা প্রশাসক মোহামাদ অহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মাহমুদা মিনা। এর আগে ৫টার দিকে র‌্যাবে হেলিকপ্টারে করে মামুনুল হক, জাতীয় নাগরিক পার্টির হাসনাত আব্দুলাহ, সারজিস আলম জানাজায় অংশ নিতে আসেন।

অন‌্যদিকে শহরের জানাজা শেষে উত্তেজিত জনতা ধর্ষক হিটু শেখের নিজনান্দুয়ালী গ্রামের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দেশব্যাপী আলোচিত মাগুরার ৮ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার শিশুটির মৃত্যুর সংবাদে আজ বৃহস্পতিবার দুপরে এলাকায় পৌঁছালে সেখানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

মেয়ের এমন করুন দুঃসংবাদে শিশুটির পিতা মানসিক অসুস্থ বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। সেই সাথে এলাকাবাসী এই জঘন্য ঘটনার দ্রুত বিচার ও দোষীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।


এরকম জঘন্য ঘটনা আর যেন কারো সাথে না ঘটে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে প্রশাসন এবং বিচার বিভাগ এ দাবি জানান তারা।

এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাগুরায় ধর্ষণের শিকার আট বছর বয়সী শিশুটি।

হাসপাতালের শিশু বিভাগের শিশুরোগের চিকিৎসা সংক্রান্ত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) চিকিৎসা চলছিল শিশুটির। বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারবার ও বৃহস্পতিবার আরও দু‘বার ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ (আকস্মিকভাবে হৃৎস্পন্দন বন্ধ) হয় শিশুটির।

আট বছরের শিশুটি ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকালে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল।

ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে চার জনের নামে মামলা করেন। ধর্ষণের অভিযোগে শিশুটির ভগ্নিপতি সজিব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু মিয়া (৪২) ও মা জাবেদা বেগমকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর