দর্শনার্থীর অভাবে খাঁ খাঁ করছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পরিষদ চত্বরের তিন দিনব্যাপী কৃষি মেলা। বৃহস্পতিবার(২৭ ফেব্রুয়ারি) মেলার দ্বিতীয় দিনেও ছিল না তেমন কোনো দর্শনার্থী। বুধবার এ মেলার উদ্বোধন করেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার।
কন্দাল ফসলে কৃষকদের সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাণিজ্যিকভাবে এ ফসল চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহী করতে কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্পের আওয়ায় কৃষকদের মাঝে কন্দাল ফসল বাণিজ্যিক ভাবে চাষাবাদ বাড়াতে কৃষি মেলার আয়োজন করা হয়। আদিতমারী উপজেলা পরিষদ চত্বরে বুধবার তিন দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সাইখুল আরিফিন।
উদ্বোধনী দিনে কৃষকদের উপস্থিতি কম থাকায় স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ডেকে নিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সফলের চেষ্টা করে আয়োজক কমিটি। অতিথিরা উদ্বোধন করে চলে গেলে ১১টি স্টলের এ মেলা দর্শনার্থী শূন্য হয়ে পড়ে। দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবারও দিনভর তেমন দর্শনার্থী ছিল না মেলায়। শুক্রবার বিকেলে এ মেলার সমাপ্তি ঘটবে বলে জানান আয়োজক উপজেলা কৃষি অফিস।
উপজেলা পরিষদের পাশে কলেজ রোডে মাঠে কাজ করছেন কৃষক ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, উপজেলায় কৃষি মেলা হচ্ছে আমরা জানি না। কোনো মাইকিং বা প্রচারণা শুনিনি। বর্তমানে আলু, তামাক, মরিচ, পিঁয়াজ, ভুট্টাসহ নানা সবজির মাঠে কাজ নিয়ে আমরা ব্যস্ত সময় পাড় করছি। তবুও খবর পেলে মেলায় যেতে পারতাম। পছন্দের লোকদের চুপি চুপি কৃষি প্রনোদনাও দেয় কৃষি বিভাগ। আমরা গেলে বলে বরাদ্দ নেই। অনেকেই প্রণোদনা বীজ সার নিয়ে বাজারে বিক্রি করে, চাষাবাদ করে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মেলায় উপস্থিত একজন উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, তেমন মাইকিং করা হয়নি। আমরা মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীরা কৃষকদের মুখে মুখে বলেছি মেলা আসতে। কিন্তু বর্তমানে মাঠে কাজ থাকায় কৃষকরা মেলায় তেমনটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কিছু কৃষক ছিল।
স্টল দেয়া কৃষক দুলাল মিয়া বলেন, কাম কাজের দিন তো তাই কৃষকদের উপস্থিতি অনেকটা কম। তবে বিকেল ও সকালে দর্শনার্থী একটু হয়। দর্শনার্থী কম থাকায় আমার উৎপাদিত পণ্য বেশি লোক দেখতে পারেনি। প্রচারণা বাড়ালে দর্শনার্থী বাড়ত বলেও দাবি করেন তিনি।
আদিতমারী উপজেলা কৃষি অফিসার ওমর ফারুক বলেন, মাত্র একলাখ টাকা বরাদ্দে মেলা করা হচ্ছে। স্টল সাজানো, ব্যানার ফেস্টুন করতেই প্রায় টাকা শেষ হয়। প্রচার প্রচারণার কোন বরাদ্দ ছিল না জন্য প্রচারণার মাইকিং করা হয়নি। মেলাটি ডিসেম্বর মাসে করার কথা ছিল কিন্তু তখন করা হয়নি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষদিকে তাই দ্রুত সময় করতে গিয়ে প্রচারণা কম হয়েছে আর বর্তমানে মাঠে কাজ নিয়ে কৃষকরা অত্যন্ত ব্যস্ত। কৃষকদের উপস্থিতি ছিল উদ্বোধনী দিনে।