ভারতীয় গণমাধ্যমে ‘সংখ্যালঘুদের ওপর পরিকল্পিত হামলা’ শিরোনামে করা সংবাদ নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. জাবেদুর রহমান বলেছে, ‘ভারত থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসে হামলা নয় বরং বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে একটি চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। এ অবস্থায় এমন গুজব রটিয়ে দিয়ে দু’দেশের জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো অত্যন্ত দুঃখজনক।’
রোববার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ বিষয়টি খোলাসা করেন।
তিনি বলেন, শনিবার দুপুরে সড়ক দুর্ঘটনার খবরটি ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংখ্যালঘুদের ওপর পরিকল্পিত হামলা বলে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মূলত চারলেন সড়কের নির্মাণ কাজের জন্য কুমিল্লা-সিলেট স্বাভাবিকভাবেই শরু এবং বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে। শনিবার দুপুরে আগরতলা থেকে ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের ঢাকা-আগরতলা বাসটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার চান্দিয়ারা এলাকা অতিক্রম করার সময় একটি ট্রাক বাসটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে চাপ দেয়। এ সময় বাসটি বাঁদিকে সরে গিয়ে একটি তিন চাকার ভ্যানকে চাপা দেয়। এতে ভ্যানটি ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং ভ্যান চালক আহত হয়। তবে বাসে থাকা সকল যাত্রীরা অক্ষত ছিলেন। বাসের ১৭ জন ভারতীয় এবং ৯ জন বাংলাদেশী যাত্রী ছিলেন।
ঘটনার পর শ্যামলী পরিবহনের বাসচালক আসাদুল হক ও ভ্যান চালক ইব্রাহিম এর মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্যামলী পরিবহন বাসের কর্তৃপক্ষ এবং ভ্যান কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি আলোচনা করে মীমাংসা হয় এবং বাসটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সেখানে কোনো রকম হামলা কিংবা কোনো দেশ বা সম্প্রদায়কে কটাক্ষ করে কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা শ্যামলী পরিবহনের বাস চালক মো. আসাদুল হক বলেন, ‘একটি ট্রাক ওভারটেক করতে গেলে আমি ইমার্জেন্সি ব্রেক কষে দাঁড়িয়ে যাই। এ সময় পিছনে থাকা একটি তিন চাকার কভার্ড ভ্যান ধাক্কা লাগে। এতে ভ্যানটি বাসের পিছনে আটকে যায়। বিষয়টি হাইওয়ে থানা পুলিশকেও অবহিত করা হলে পুলিশ এসে রেকার দিয়ে ভেনটি সরিয়ে নেয়। দুর্ঘটনায় বাসের কোনো ক্ষতি হয়নি কিংবা যাত্রীরা আঘাতপ্রাপ্ত হননি।’
তিনি আরো বলেন, বাসে থাকা ভারতীয় যাত্রীদের সাথে স্থানীয় সাধারণ মানুষের কোনো বাক-বিতণ্ডা বা কোনো রকম ঝামেলা হয়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমে বাসে হামলার খবর দেখে আমিও অবাক হয়েছি।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।