সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বৃহত্তম বাংলা গণমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো, ইংরেজি দৈনিক দ্যা ডেইলি স্টার ও দৈনিক কালবেলায় হামলা ও হুমকির নিন্দা জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে নিউজ পেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) আয়োজিত 'আক্রমণের মুখে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন পত্রিকার মালিক, সম্পাদক ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এসব কথা বলেন।
নোয়াব সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, কর্মসূচির নামে পত্রিকা অফিস ঘেরাও, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়; এসবের মাধ্যমে যে ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরি হচ্ছে তা সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য চরম হুমকি। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে দেশের সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি।
তিনি বলেন, এসব তৎপরতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেয়া জরুরী। গণঅভ্যুত্থানের পর যখন ভয়মুক্ত ও চাপহীন পরিবেশে কাজ করার কথা তখন দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো এক অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার উপরই নির্ভর করছে প্রত্যাশিত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।
দ্যা ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, গত ১৫বছরে সাংবাদিকতার উপর যে চাপ ও বাধা ছিল, আমাদের প্রত্যাশা এখন আর সেটি থাকবেনা। স্বাধীন সাংবাদিকতা হুমকির মুখে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাহায্য দরকার। সবসময়ই সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে সাংবাদিকতা। গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি ও দেশকে গণতন্ত্রীকরণের প্রক্রিয়ায় পাশে থাকবে গণমাধ্যম।
সমালোচনা করতে দেয়নি বলেই হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে বলেও যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, অন্তবর্তী সরকারকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলা সম্ভব। গণমাধ্যমও বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ায় ছিল।
তিনি বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরই সমাধান। দুর্বল অন্তবর্তী সরকারের কাছ থেকে নিরাপত্তা মিলবেনা। সরকার, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেনো যোগসূত্র স্থাপিত হয়।
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, সংবাদপত্র, গণমাধ্যম চলবে বস্তুনিষ্ঠ, নিরপেক্ষতার আলোকে। একশ্রেণীর সাংবাদিকতা ফ্যাসিজম কে সমর্থন করে যে ভূমিকা রেখেছিল তাও দু:খজনক। যত আক্রমণই আসুক না কেনো, গণমাধ্যমের পাশে থাকবো।
তিনি বলেন, আইন হাতে তুলে নেয়ার অধিকার কারো নেই। এটা মগের মুল্লুক না। দেশকে সে জায়গায় নিয়ে যেতে দেযা যাবেনা।
কোনও রাজনৈতিক দলই গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বাধা দেয়ার পক্ষে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সবকিছুর বিষয়ে জাতীয় ঐক্যমত তৈরি না হলে গণতন্ত্র ফিরে আসবেনা। ফ্যাসিজম আবার ফিরে আসলে দেশ অন্ধকারে ফিরে যাবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, কোনও গণমাধ্যমের সামনে গরু জবাই করা ফ্যাসিস্টদের পথ অনুসরন করা।
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, অন্তবর্তী সরকারের দাযিত্ব ছিল বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলা। গণমাধ্যম কমিশন ও নোয়াবের পক্ষ থেকে সমাধান আসা উচিত।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, স্বাধবীন গণমাধ্যমের উপর আক্রমন চলছে। এটাকে রুখে দিতে হবে। সরকার বা সরকারের সমর্থকরা মদদ দিচ্ছে কিনা তাও প্রশ্নাতীত নয়।