কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সাংবাদিক সজিব বণিককে পেটানোর ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আহত ওই সাংবাদিক তার ওপর চালানো হামলার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর ওই লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এদিকে, কুবিতে সাংবাদিক পেটানোর ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেছেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
কুবির প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, আমি ওই সাংবাদিককে আমার অফিসে অভিযোগপত্র দিতে বলেছি। আমরা হল প্রশাসনের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।
কুবির শহীদ ধীরেন্দনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ জুলহাস মিয়া বলেন, ‘আমি অভিযোগপত্র পেয়েছি। হলের সকল শিক্ষকদের নিয়ে বসে এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেব।'
উল্লেখ্য, শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের নিজ কক্ষে (২০৪ নং রুম) ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে হামলার শিকার হন সজিব বণিক। আহত সজীব বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি দৈনিক বিজনেস বাংলাদেশ পত্রিকার কুবি প্রতিনিধি এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) সদস্য। পরে ওইদিন রাত ১টার দিকে আহত ওই সাংবাদিককে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওইদিন রাতে শহীদ ধীরেন্দনাথ দত্ত হলের ২০৪ নম্বর কক্ষে সিট নিয়ে কথা বলার সময় এক পর্যায়ে সাংবাদিক সজীব বণিকের জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কর্মী রাজু আহমেদ। এ সময় ওই সাংবাদিক এর প্রতিবাদ করলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্য ও হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মিরাজ খলিফা, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ইমতিয়াজ শাহরিয়ার, ছাত্রলীগ কর্মী রাজু আহমেদ, শাখা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মুনতাসির হৃদয়, ছাত্রলীগ কর্মী মুক্তার হোসাইনসহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী রড-লাঠি দিয়ে সাংবাদিক সজীবকে পিটিয়ে আহত করে।
আহত সজীব বণিক বলেন, তারা আমার কক্ষে রড, লাঠিসোটা নিয়ে ঢুকে আমাকে মারধর করে। তারা পেটানোর সময় আমাকে এবং সাংবাদিকদের নিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে কুবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, কারো গায়ে হাত তোলা চরম বেয়াদবি। কাউকে মারধর করা আমি কোনোভাবেই সমর্থন করি না। যারা সাংবাদিককে মারধর করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।