জেলার ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলা মহেশপুর। জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কাজীরবেড় ইউনিয়ন। সেখানে গেলে রাস্তায় দেখা মেলে হাঁসের জলকেলি। আর মহাসড়কে বিকল হওয়া গাড়ি।
গত কয়েক বছরে দত্তনগর বাজার থেকে জিন্নাহনগর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কের এ দশার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এতে প্রতিদিনই ভোগান্তিতে পড়ছেন রাস্তায় চলাচলকারী মানুষেরা। উপজেলা ও জেলা সদরে যাওয়ার একমাত্র এই রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
এলাকাবাসী জানান, সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ১৮ কিলোমিটার আঞ্চলিক এই মহাসড়কটি। রাস্তার প্রায় ১৮ কিলোমিটার জুড়েই সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দ। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা আর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
রাস্তায় চলাচলকারী সবুজ নামের একজন বলেন, ‘আমাকে প্রতিনিয়ত এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। ১৮ কিলোমিটার রাস্তা যেতে সময় লাগে ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট। কিন্তু রাস্তা ভাঙার কারণে ১ ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে।’
সবজি ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘মহেশপুর উপজেলার এ অঞ্চলটিতে সবজি আবাদ বেশি হয়। এসব এলাকার সবজি আমরা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাই। রাস্তা সংস্কার না করার কারণে ট্রাক ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। এতে লাভের পরিমাণ কম হয়। গত বছর আমরা নিজ উদ্যোগে বড় বড় গর্তগুলো মেরামত করেছিলাম। কিন্তু এবার আর সম্ভব হচ্ছে না। তাই দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করা দরকার।’
দত্তনগর বাজার থেকে জিন্নাহনগর গামী উম্মে সাইমা নামের এক কলেজ ছাত্রী বলেন, ‘আমাকে প্রতিদিন নসিমন, মিশু ও ইজিবাইক দিয়ে এই রাস্তায় চলাচল করতে হয়। রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে বাসা থেকে আগে বের হতে হয়। কিন্তু সমস্যা বেশি হয় সব সময় ভয়ে থাকি গাড়িগুলো কখন জানি উল্টে যায়। কাজীরবেড় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, ‘আঞ্চলিক এই মহাসড়ক দিয়ে মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া, নেপা, শ্যামকুড়, কাজীরবেড় ও স্বরূপপুর ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করে। দীর্ঘদিন ধরে একই দশা। সংসদ সদস্যরা আশ্বাস দেওয়ার পরও তা মেরামত করা হচ্ছে না। শুনেছি টেন্ডার হয়েছে। পাশের অন্য রাস্তাগুলো সংস্কার করা হলেও এই রাস্তাটুকু আজ পর্যন্ত মেরামত করা হয়নি।’
ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তাটি নতুন করে নির্মাণের জন্য বছর পাঁচেক আগে ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রপোজ প্রপোজাল) তৈরি করা হয়। এরপর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ৪টি প্যাকেজে টেন্ডার হয়। ৩ নম্বর ও ৪ নম্বর প্যাকেজ দুটির কাজ শেষ। সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে ১ নম্বর ও ও ২ নম্বর প্যাকেজ নিয়ে। ১ ও ২ নম্বর প্যাকেজের ১৮ কিলোমিটার রাস্তার নেচার (টেন্ডারের সময় ভাঙা কম ছিল, আর এখন খানাখন্দ বেশি) পরিবর্তন হওয়ার কারণে মেরামত করা যাচ্ছে না। নতুন ডিপিপি তৈরি করে অনুমোদনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ডিপিপি পাশ হলে নতুন করে টেন্ডার করতে হবে। পাশ হলেই দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান করা হবে।’